খাদেমুল ইসলাম মামুন, ঘাটাইল,টাঙ্গাইলঃ পেঁপে ভালোবাসে না এমন লোকের জুড়ি মেলা ভার। হোক কাঁচা কিংবা পাকা। সবজি জাতীয় এ ফলের কদর রয়েছে দেশজুড়ে। পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ এ ফলের চাহিদাও অনেক। পেঁপে চাষে একদিকে যেমন পুষ্টির চাহিদা মেটায় অন্যদিকে অর্থনৈতিক ভাবেও সাবলম্বী হওয়া যায়।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী হাতিমাড়া এলাকার কলেজ ছাত্র সিহাব হাসান পেঁপে চাষ করে খুব অল্প সময়ে অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হয়েছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, সিহাব অল্প বয়স থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের হাল ধরেন। তিনি কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষক বাবা বাদল মিয়ার সাথে কৃষি কাজ করেন। বাবার কাছ থেকে অনুপ্রানিত এবং সহযোগিতা নিয়ে তিনি প্রায় ৮০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের পেঁপে চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। স্থানীয় কৃষকদের কাছে তিনি এখন রোল মডেল। সিহাব মিয়া পেঁপে চাষ করে অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় অন্যান্য শিক্ষিত বেকাররাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন সবজি জাতীয় এ ফলকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করতে।
সিহাব মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছরের শুরুর দিকে তিনি প্রায় ৮০ বিঘা জমি লিস নিয়ে পেঁপে বাগান করেন।
সিহাব বলেন, ‘আমি স্থানীয় উচ্চ জাত ও রেড লেডি জাতের নিজস্ব উৎপাদন করা পেঁপের চারা দিয়ে বাগান করেছি। আমার বাগানে প্রায় ২২ হাজার পেঁপে গাছ রয়েছে। তাছাড়া ঘাটাইল উপজেলা কৃষি অফিসার সবসময় সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়েছেন। জমি লিস, চারা, সার, কীটনাশক, শ্রমিক সহ নানা খরচ বাবদ এপর্যন্ত আমার ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আমার প্রত্যাশা আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এই বাগান থেকে প্রায় এক কোটি টাকা আয় হবে। আমার এলাকার অনেকেই এখন পেঁপে চাষে আগ্রহী। তাছাড়া পেঁপে চাষে তেমন কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। মাকড়শা ও ছত্রাক ছাড়া পেঁপে বাগানে আমি তেমন কোন সমস্যা পাইনি। তবে পেঁপে চাষে অর্থনৈতিকভাবে সরকারি সহযোগিতা পেলে দেশের অনেক শিক্ষিত বেকার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।’
এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) দিলশাদ জাহান বলেন, সিহাব মিয়া করোনার দীর্ঘ ছুটিতে বসে না থেকে সময়টাকে কাজে লাগিয়েছেন। উপজেলায় তিনি এখন একজন বড় পেঁপে চাষি। আমরা বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতি ও পরামর্শ দিয়ে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেছি। তাকে দেখে অনেক শিক্ষিত বেকার এখন পেঁপে চাষে আগ্রহী। তাছাড়া পেঁপে বাগান করে খুব অল্প সময়েই লাভবান হওয়া যায়।