প্রবাসীদের প্রতি দায়িত্ব পালনে কূটনীতিকদের আন্তরিক হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ প্রবাসী‌দের যথাযথ সেবা নি‌শ্চিত ক‌রে তা‌দের সমস‌্যাগু‌লো সমাধা‌নের জন্য দূতাবাস কর্মরতদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশপা‌শি আন্তর্জা‌তিক প‌রি‌ধির স‌ঙ্গে স‌‌‌ম্মিলন ঘ‌টি‌য়ে দেশ‌কে কিভা‌বে আ‌রও এ‌গি‌য়ে নেওয়া যায়, সে‌ই বিষ‌য়ে ব্যবস্থা ‌নি‌তেও বলেছেন তিনি।

লন্ডন সফররত প্রধানমন্ত্রী ‌‌‌রোববার সকা‌লে ভি‌ডিও কনফা‌রে‌ন্সিং‌য়ের মাধ‌্যমে যুক্তরা‌জ্যে বাংলা‌দেশ হাইক‌মিশন ভব‌নের নতুন সম্প্রসা‌রিত অংশ এবং বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জ উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলা‌দে‌শের জনগণ যারা প্রবা‌সে আ‌ছেন, তারা সব সময় দে‌শের জন্য অবদান রে‌খে যা‌চ্ছেন। আমা‌দের আর্থ সামা‌জিক উন্নয়নে যে দে‌শে থা‌কেন সেই দে‌শের এবং আমা‌দের বাংলা‌দেশ, উভয় দে‌শেই আর্থ সামা‌জিক উন্নয়‌নে বিরাট অবদান প্রবাসীরা রে‌খে যান। কা‌জেই প্রবাসী‌দের যথাযথ সেবা ‌দেওয়া, তা‌দের সমস‌্যাগু‌লো দেখা, তা‌দের দি‌কে নজর দেওয়া এটা দরকার।

সেই সঙ্গে কূটনীতিকদের দেশের ব্যবসা সম্প্রসারণের দিকে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান যু‌গে আস‌লে আমা‌দের কূটনী‌তিটা শুধু রাজ‌নৈ‌তিক কূটনী‌তি না, এটা অর্থ‌নৈ‌তিক কূটনী‌তি‌‌তে প‌রিণত হ‌য়ে‌ছে। সেখা‌নে আমা‌দের ব্যবসা-বা‌ণিজ্য ও বি‌নি‌য়োগ সম্প্রসারণ কীভা‌বে হ‌বে, কীভা‌বে আমরা দেশ‌কে আ‌রও উন্নত কর‌বে, তার সা‌থে আন্তর্জা‌তিক প‌রি‌ধির সা‌থে সম্মিলন ঘটা‌নো, সেটাও একটা বি‌শেষ দিক।

এজন্য স‌‌ম্মি‌লিত প্রচেষ্টার উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক‌দি‌কে যেমন বাংলা‌দেশ‌কে তু‌লে ধরা, বাংলা‌দে‌শের ই‌তিহাস ঐ‌তিহ্যকে তু‌লে ধরা, পাশাপা‌শি আর্থ সামা‌জিক উন্নয়‌নের ক্ষে‌ত্রে আমরা আমা‌দের রপ্তা‌নি কীভা‌বে বাড়া‌তে পা‌রি, বি‌নি‌য়োগ কীভা‌বে বাড়া‌তে পা‌রি, দে‌শের আর্থ সামা‌জিক উন্ন‌তি কীভা‌বে হ‌তে পা‌রে, দে‌শের মানু‌ষের ভাগ্য প‌রিবর্ত‌নে অবদান কীভা‌বে রাখা যে‌তে পা‌রে, সেই বিষয়টায় বি‌শেষভা‌বে আ‌লোচনা, বি‌বেচনা এবং ব‌্যবস্থা নেওয়া দরকার।

জা‌তির ‌পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবুর রহমা‌নের দেওয়া পররাষ্ট্রনী‌তি অনুসরণ করে সারা‌বি‌শ্বের স‌ঙ্গে এখন বাংলা‌দে‌শের অত‌্যন্ত সু-সম্পর্ক চল‌ছে ব‌লে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আজ‌কে জা‌তির পিতার আদর্শ অনুসরণ ক‌রে তারই নি‌র্দে‌শিত পদাঙ্ক অনুসরণ ক‌রে বাংলা‌দেশ উন্নয়নশীল দে‌শের মর্যাদা পে‌য়ে‌ছে। আর এই মর্যাদা ধ‌রে রে‌খেই আমরা বাংলা‌দেশ‌কে উন্নত, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা-দা‌রিদ্র্যমুক্ত ‌সোনার বাংলা‌দেশ হি‌সে‌বে গ‌ড়ে তুল‌ব ব‌লে আশা করি।

শেখ হা‌সিনা ব‌লেন, সে‌দি‌কে আমরা অনেকদূর এ‌গিয়ে গি‌য়ে‌ছি। আজ‌কে আর বাংলা‌দে‌শের মানু‌ষের সেই হাহাকার নেই। খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নি‌শ্চিত কর‌তে পে‌রে‌ছি, চি‌কিৎসা‌ সেবা মানু‌ষের দোর‌গোড়ায় পৌঁছে দি‌য়ে‌ছি। আজ‌কে ৯৯.৯৯ ভাগ লোক বিদ্যুৎ সু‌বিধা পা‌চ্ছে, রাস্তা ঘাট, পুল ব্রিজ, অবকাঠা‌মোগত উন্নয়ন হ‌চ্ছে, স্বাক্ষরতার হারও আমরা প্রায় ৭৪ শতাংশে আমরা বৃ‌দ্ধি কর‌তে সক্ষম হ‌য়ে‌ছি, মানু‌ষের আয়ুষ্কালও ৭৩ বছ‌রে বৃ‌দ্ধি পে‌য়ে‌ছে।

তিনি বলেন, মানুষ এখন অনেক আশাবা‌দী, মানুষ এখন স্বপ্ন দে‌খে সুন্দর জীব‌নের। যে স্বপ্নটা জা‌তির পিতা দে‌খি‌য়ে‌ছি‌লেন, যে স্বপ্নটা হা‌রি‌য়ে গি‌য়ে‌ছিল পঁচাত্তরে জা‌তির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিব‌কে নির্মমভা‌বে হত্যার মধ্য দি‌য়ে। আমরা আবার জা‌তির পিতার সেই আদর্শ নি‌য়েই বাংলা‌দে‌শের মানু‌ষের সাম‌নে একটা উন্নত, সমৃদ্ধ জীবনের স্বপ্ন তা‌দের দেখা‌তে সক্ষম হ‌য়ে‌ছি। বাংলা‌দেশ এ‌গি‌য়ে যা‌চ্ছে। বাংলা‌দেশ এ‌গি‌য়ে যা‌বে। আর কখ‌নও বাংলা‌দেশ‌কে কেউ পেছ‌নে টান‌তে পার‌বে না।

জা‌তির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবুর রহমা‌নের আজীবন সংগ্রা‌মের কথা অনুষ্ঠা‌নে তু‌লে ধ‌রার পাশপা‌শি মু‌ক্তিযু‌দ্ধে প্রবাসী‌দের অবদা‌নের কথাও স্মরণ ক‌রেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠা‌নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ‌ কে আব্দুল মো‌মেন, তথ‌্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকা‌রি শিল্প ও বি‌নি‌য়োগ বিষয়ক উপ‌দেষ্টা সালমান এফ রহমান, যুক্তরা‌জ্যে বাংলা‌দে‌শের হাইক‌‌মিশনার সাইদা মুনা তাসনীমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপ‌স্থিত ছিলেন।

SHARE THIS ARTICLE