বাংলাদেশী কিশোর সাদাত ২০২০ সালের “আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি” পুরষ্কার অর্জন

 

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ সাইবার বুলিইং এর বিরুদ্ধে কর্মকান্ডের জন্য বাংলাদেশী কিশোর সাদাত রহমান ২০২০ সালের “আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি” পুরষ্কার অর্জন করে বাংলাদেশকে সম্মানিত করেছে। নেদারল্যান্ড ভিত্তিক “কিডস রাইটস ফাউন্ডেশন” প্রতি বছর শিশু অধিকার এবং অসহায় শিশুদের রক্ষায় গুরুত্ত্বপূর্ন অবদান রাখার জন্য এই পুরষ্কার প্রদান করে থাকে। এবছর ৪২ টি দেশ থেকে সর্বমোট ১৪২ জন এই পুরষ্কারের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তার মধ্য থেকে সাদাত রহমান এই পুরষ্কার পাওয়ার গৌরব অর্জন করেন। গতবছর এই পুরষ্কার পান পরিবেশ আন্দোলন কর্মী, গ্রেটা থুনবার্গ। এর আগে মালালা ইউসুফজাই নিজেও এই সম্মানিত পুরষ্কার অর্জন করেছিলেন। 

মানবাধিকার কর্মী এবং নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই ২০২০ সালের এই পুরষ্কারের ঘোষণা প্রদান করেন। সাইবার ধর্ষণ বন্ধ করার জন্য “নড়াইল ভলান্টিয়ার” নামক সামাজিক সংস্থা গঠন এবং “সাইবার টিনস” নামক মোবাইল এপ্লিকেশন তৈরিতে অবদানের জন্য ১৭ বছর বয়সী বাংলাদেশী কিশোর সাদাতকে এই পুরষ্কার প্রদান করা হয়। আজ শুক্রবার নেদারল্যান্ডস থেকে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। 

বাংলাদেশি কিশোরের হাতে আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার

১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী সাইবার বুলিইং এর কারনে আত্নহত্যা করলে, অসহায় কিশোর কিশোরীদের সহায়তার উদ্দেশ্যে সাদাত একটি সামাজিক সংস্থা “নড়াইল ভলান্টিয়ার” এবং সাইবার বুলিইং বিরোধী এপ্লিকেশন “সাইবার টিনস” প্রতিষ্ঠা করেন। এপ্লিকেশনটি সাইবার হুমকি মোকাবেলায় শিশু কিশোরদের জড়তা, ভয়, ভীতি কাটিয়ে তুলতে সহায়তা প্রদান করে এবং আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের ব্যার্থতাসমূহকে প্রকাশ করে। গত বছরের অক্টোবর থেকে থেকে নড়াইল জেলা পুলিশের সহায়তায় তারা ৬০০ টিরও বেশি অভিযোগের সমাধান করতে পেরেছেন, আটজন দুষ্কৃতিকারীকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সাদাত স্কুল-কলেজে সেমিনার আয়োজন করে সারা বাংলাদেশ জুড়ে ইতিমধ্যে ৪৫,০০০-এরও বেশি কিশোর-কিশোরীদের সংযুক্ত করেছেন। 

যুবসমাজকে ডিজিটাল সাক্ষরতা সম্পর্কে শেখানোর জন্য তিনি তার স্থানীয় এলাকার প্রতিটি স্কুলে “সাইবার ক্লাব” তৈরি করেন। বর্তমানে তিনি ‘নিরাপদ ইন্টারনেট, নিরাপদ কিশোর’ নামে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রচারের কাজ করছেন। সাদাত পুরোপুরি অ্যাপ্লিকেশনটিকে আরও বিকশিত করতে এবং সারা বিশ্বের মডেল হিসাবে পরিবেশন করতে পুরষ্কার থেকে প্রাপ্ত ১ লক্ষ ইউরো (১ কোটি টাকা) ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছেন।

নেদারল্যান্ডের হ্যাগে পুরষ্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল নড়াইলের সন্তান সাদাত বলেন, “২০১৩ সালে যখন লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা মায়ানমারে সহিংসতার কারনে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেন, তখনি আমি যুবকদের একত্রিত করার শক্তি আবিষ্কার করি………।।” আবেগ জড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, “আমি আমার কাজ দিয়ে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্ববোধ করছি”।

তিনি আরও বলেন, “আমার চূড়ান্ত সফলতা তখনই আসবে যখন আমার এই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে না এবং আর কোনও সাইবার বুলিইং থাকবে না।”

সূত্রঃ ওয়ার্ল্ড এশিয়া প্যাসিফিক।

SHARE THIS ARTICLE