
আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ দেয় এবং বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার (০৪ এপ্রিল) ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মোদি এ মন্তব্য করেন। খবর বাসসের।
মোদি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ইতিহাস একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় থেকে চলে আসছে। ভারত ‘প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক’ একটি বাংলাদেশকে সবসময় সমর্থন করবে।
বাংলাদেশে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে ভারত সমর্থন করে না দাবি করে মোদি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক জনগণের সাথে জনগণের, কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে নয়।’

বাসস লিখেছে, অধ্যাপক ইউনূসের আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও মর্যাদার কথা বৈঠকে বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের যে অনুরোধ বাংলাদেশ করেছে, সে বিষয়ে মোদির কাছে অগ্রগতি জানতে চান ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উসকানিমূলক মন্তব্য করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন, যা ভারতে তার আশ্রয়ের সুযোগের অপব্যবহার।’
বাসস লিখেছে, শেখ হাসিনার বক্তব্যকে ঘিরে উত্তেজনার জন্য মোদী সোশ্যাল মিডিয়াকে দোষারোপ করেন।
বাংলাদেশের তরফ থেকে সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গ তোলা হলে মোদি বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ‘কেবল আত্মরক্ষার্থে’ গুলি চালায় এবং মৃত্যুর ঘটনাগুলো ভারতীয় ভূখণ্ডেই ঘটে।
বাসসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যা বন্ধে যৌথভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেন দুই নেতা।
বাংলাদেশ বিমসটেকের পরবর্তী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় নরেন্দ্র মোদী অভিনন্দন জানান মুহাম্মদ ইউনুসকে, পাশাপাশি তাকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানান।
প্রায় ৪০ মিনিটের এই আলোচনায়, দুই নেতা ‘পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা’ প্রদর্শন করেন এবং ‘খোলামেলা মতবিনিময়’ করেন।
তারা পরস্পরের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ কামনা করে দুই দেশের শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য শুভকামনা জানান।
এদিকে আজকে দুই নেতার প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘বাস্তবতার নিরীখে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে ‘পরিবেশ নষ্ট’ করে এমন বক্তব্য পরিহার করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।