আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ অস্ট্রেলিয়ায় চলমান আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব শেষে সুপার টুয়েলভের চারটি ম্যাচও সম্পন্ন হয়েছে। তবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু আজ। সকাল ১০টায় হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে সাকিব আল হাসানের দল।
বাংলাদেশ সরাসরি সুপার টুয়েলভ পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও ডাচদের প্রথম পর্বের বৈতরণী পার হয়ে আসতে হয়েছে। আবার আইসিসি র্যাংকিংয়েও বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। সাকিব আল হাসানের দল রয়েছে ৯ নম্বরে, আর ডাচরা ১৭ নম্বরে। যদিও এটি স্রেফ একটি সংখ্যা হতে পারে। কেননা এ মুহূর্তে দারুণ ফর্মে আছেন ডাচ ক্রিকেটাররা। প্রথম পর্বে নামিবিয়া ও সংযুুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভে উঠেছে স্কট এডওয়ার্ডসের দল। শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতের কাছে নামিবিয়া হেরে গেলে সুপার টুয়েলভের টিকিট পায় ডাচরা।
টেস্ট খেলুড়ে বাংলাদেশই আজ পরিষ্কার ফেভারিট হিসেবে নামবে, তবে ডাচরাও হয়তো ছেড়ে কথা বলবে না। আর দল হিসেবে বাংলাদেশের ফর্মটাও ভালো যাচ্ছে না। এ বছর মাত্র চারটি টি২০ ম্যাচ জিততে সমর্থ হয় তারা। এর মধ্যে দুটি আবার দুর্বল আরব আমিরাতের বিপক্ষে। এছাড়া সম্প্রতি ক্রাইস্টচার্চে তিন জাতি সিরিজে চার ম্যাচ খেলে একটিও জেতা হয়নি সাকিবদের।
প্রথম পর্বে আলো ছড়িয়েছেন ডাচ পেস বোলাররা। ফ্রেড ক্লাসেন, বাস ডি লিডি ও পল ফন মিকিরেন গতির সঙ্গে নিখুঁত বোলিং করেন। প্রথম রাউন্ডে সব দলের মধ্যে ডাচদের স্পিন সবচেয়ে মিতব্যয়ী ছিল (ওভারপ্রতি রান খরচ ৫.৬৫)। বামহাতি স্পিন জুটি টিম প্রিঙ্গল ও রোয়েলফ ফন ডর মারউই দুজনই ভালো করেছেন। পেস ও স্পিনের সম্মিলিত আক্রমণ বাংলাদেশের অধারাবাহিক ব্যাটিং লাইনআপকে বিপাকে ফেলতেই পারে।
আজকের ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশ দলনায়ক সাকিব বেশ আত্মবিশ্বাসী। তিনি গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমাদের খুব ভালো প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ক্রাইস্টচার্চের চারটি ম্যাচ থেকে আমরা উপকৃত হয়েছি, বিশেষ করে হোবার্টের কন্ডিশন অনেকটা ক্রাইস্টচার্চের মতোই। কাজেই প্রত্যেকেই আগামীকালের (আজ) ম্যাচের জন্য তৈরি, একই সঙ্গে রোমাঞ্চিতও।
ডাচরাও ভালো সূচনা চায়। দলটির ব্যাটসম্যান টম কুপার গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যেই আমরা এ টুর্নামেন্টে এসেছি। শেষ দিন (প্রথম পর্ব) আমরা ভাগ্যের সহায়তা পেলেও এখন আমরা সুপার টুয়েলভে এবং এখন লড়াই করার কথা ভাবছি। আশা করি, বাংলাদেশের বিপক্ষে ভালো সূচনা পাব।
টি২০-তে এখন পর্যন্ত তিনবার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস। এর মধ্যে বাংলাদেশ দুটিতে ও ডাচরা একটিতে জয় পেয়েছে। ২০১২ সালে দ্য হেগ শহরে ডাচদের ৮ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। একই শহরে পরের ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে যায় ১ উইকেটের ব্যবধানে। এরপর দুই দলের দেখা হয় ২০১৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপে। ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচেও লড়াই করে হেরেছে ডাচরা। ১৫৩ রানের পুঁজি নিয়ে বাংলাদেশ জিতেছিল ৮ রানে। টি২০-তে আজ চতুর্থবারের মতো দেখা হচ্ছে দুই দলের এবং বিশ্বকাপের দ্বিতীয় লড়াই এটা।
ওয়ানডেতে দুবারের মোকাবেলায় একটি করে জয় পেয়েছে দুই দল। ২০১০ সালে গ্লাসগোয় প্রথম মোকাবেলায় ৬ উইকেটের জয় পায় ডাচরা। ২০১১ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ জিতেছে একই ব্যবধানে।
টি২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত মাত্র সাতটি ম্যাচ জিততে সমর্থ হয়েছে। যদিও এ সাত জয়ের মধ্যে মূল পর্বে মাত্র একটি! ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারানোর পর মূল পর্বে আর কোনো জয় নেই টাইগারদের। এরপর ২০১৪ আসরে আফগানিস্তান ও নেপালকে, ২০১৬ আসরে নেদারল্যান্ডস ও ওমানকে এবং ২০২১ আসরে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনিকে প্রথম পর্বে হারায় বাংলাদেশ। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত আসরে সুপার টুয়েলভ পর্বে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, আজ বেলা ২টায় ‘গ্রুপ-টু’র দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে।