বাংলাদেশে ‘রেড জোনে’ যা করতে পারবেন, আর যা পারবেন না

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ নিয়ন্ত্রণ রাখতে এলাকায় মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহের বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে ২ মাসের সাধারণ ছুটির পর গত ৩১ মে সীমিত পরিসরে অফিস-কর্মস্থল ও গণপরিবহন চলাচলে অনুমতি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সারা দেশে জোনিং সিস্টেম (রেড, ইয়োলো ও গ্রিন) চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শর্তসাপেক্ষে জনগণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার থেকে বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে।

বিধিনিষেধ চলাকালে ‘রেড জোন’ অর্থাৎ লকডাউনের আওতাভুক্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করে সেগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-

১) স্বাস্থ্যবিধি মেনে বর্ধিত সময়ে কৃষিকাজ করা যাবে।

২) স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রামাঞ্চলে কলকারখানা ও কৃষিপণ্য উৎপাদন কারখানায় কাজ করা যাবে। তবে শহরাঞ্চলে সব বন্ধ থাকবে।

৩) বাসা থেকেই অফিসের কাজ করতে হবে।

৪) কোনও ধরনের জনসমাবেশ করা যাবে না। কেবলমাত্র অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে যেতে পারবেন।

৫) স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে পারবেন। রিকশা ভ্যান, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ট্যাক্সি বা নিজস্ব গাড়ি চলাচল করবে না।

৬) সড়ক পথ, নদী পথ ও রেলপথে জোনের ভেতরে কোনও যান চলাচল করবে না।

৭) রেড জোনের ভেতরে ও বাহিরে মালবাহী নৌযান ও জাহাজ কেবলমাত্রা রাতে চলাচল করতে পারবে।

৮) প্রত্যেক এলাকায় সীমিত পরিমাণে প্রবেশ ও বহিরাগমণ পয়েন্ট নির্ধারণ করে কঠোরভাবে জনগণের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

৯) এই জোনের আওতাভুক্ত মুদি দোকান ও ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। রেস্টুরেন্ট ও খাবার দোকানে কেবলমাত্র হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু থাকবে। বাজারে শুধুমাত্র প্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিংমল, সিনেমা হল, জিম/ স্পোর্টস কমপ্লেক্স কেন্দ্র, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

১০) আথিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম যেমন টাকা জমাদান/ উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেবলমাত্র এটিএম বুথের মাধ্যমে করা যাবে। তবে সীমিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে।

১১) এলাকর রোগীদের পর্যাপ্ত কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা করা হবে। সনাক্ত রোগীরা হোম আইসোলেশন বা প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে থাকবে।

১২) শুধুমাত্র মসজিদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মসজিদ/উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব রেখে ইবাদত করতে পারবেন।

১৩) সাধারণভাবে রেড জোন ২১ দিনের জন্য বলবত হবে। পরিরিস্থিতির উন্নতি হলে রেড জোন পরিবর্তন করা হবে।

এরইমধ্যে ঢাকার ৪৫টি এলাকাকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বা ‘রেড জোন’ ভুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে তা লকডাউনের সুপারিশ করেছে করোনা প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭টি ও দক্ষিণ সিটিতে রয়েছে ২৮টি এলাকা। এছাড়াও দেশের দ্বিতীয় রাজধানী খ্যাত বাণিজ্যিক ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের ১০টি এলাকাকেও রেড জোনের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ভাইরাসটির সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। বন্ধ করে দেয়া হয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর দফায় দফায় সেই ছুটি বাড়ানো হয়। তবে ঈদের পর গত ৩১ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৫ জুন পর্যন্ত সরকারি অফিস, কর্মস্থল ও গণপরিবহন সীমিত পরিসরে চালুর ঘোষণা দেয় দরকার। কিন্তু এর মধ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সেটি বাড়ানো হলো ৩০ জুন পর্যন্ত।

SHARE THIS ARTICLE