আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার গহিন পাহাড়ের পাইক্ষ্যংপাড়ার বম জনগোষ্ঠীর মানুষ প্রাণভয়ে ঘর ছেড়ে রোয়াংছড়ি সদরে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত উপজেলা সদরে আশ্রয় নিতে আসা নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ ১৩২ জনকে রোয়াংছড়ি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোরশেদ আলম চৌধুরী।
এদিকে উপজেলা সদরে গতকাল আশ্রয় পাওয়া ১৩২ জন ছাড়াও প্রায় ৯০ পরিবারসহ পাইক্ষ্যংপাড়ার অন্যরাও আশ্রয় পেতে রোয়াংছড়ি সদরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান চহাইমং মারমা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মীদের বরাত দিয়ে তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আশ্রয় প্রার্থীরা সবাই প্রাণভয়ে পাড়া ছেড়ে রোয়াংছড়ি সদরে চলে আসছে। রোয়াংছড়িতে আশ্রয় পাওয়া বম জনগোষ্ঠীর সদস্যদের মানবিক সহায়তা দিচ্ছে সেনাবাহিনী। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের নির্দেশে খাদ্যসামগ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণ করেছে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ। পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকেও মানবিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে।’
পুলিশ ও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ভোরে রুমা-রোয়াংছড়ি উপজেলার সীমানাঘেঁষা রুমার অভ্যন্তরে জুরবারংপাড়ায় অতর্কিত হামলা চালায় একটি সশস্ত্র গ্রুপ। সে সময় জুরবারংপাড়া থেকে বম জনগোষ্ঠীর ২২ জনকে ধরে নিয়ে যায় গ্রুপটি। পরের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের খামতাংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থানরত একটি সশস্ত্র গ্রুপকে লক্ষ্য করে অন্য একটি সশস্ত্র গ্রুপ গুলি চালায়।
এতে উভয় গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরের দিন শুক্রবার সকালে খামতাংপাড়া এলাকায় অন্য একটি দিক থেকে গুলির শব্দ পায় পাড়াবাসী। এরপর গোলাগুলির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আটটি মরদেহ ও দুটি গাদা বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। সে সময় রোয়াংছড়ি থানার ওসি আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশের ধারণা গোলাগুলির ঘটনাটি ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক ও কেএনএফ গ্রুপের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল। নিহত ব্যক্তিদের শরীরে সেনাবাহিনীর মতো এক ধরনের পোশাক ছিল।’