
আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ রেকর্ড নিম্ন জন্মহার এবং দিন দিন বাড়তে থাকা বয়স্ক লোকজনের কারণে দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক কর্মী সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যস্ত জীবনযাত্রা ও জীবনযাপনের উচ্চব্যয় জন্মহার বৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। দেশটির সন্তান জন্মদানে সক্ষম জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পারিবারিক জীবনে প্রবেশই করতে পারছেন না; আর যারা প্রবেশ করছেন— তারাও সন্তান জন্মদান- লালনপালন ও কর্মসংস্থান সামলাতে গিয়ে ক্ষেত্রে নানা সমস্যার মুখোমুখী হচ্ছেন।
জনগণের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে প্রথমবারের মতো বিদেশি গৃহকর্মী নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। প্রাথমিক পর্যায়ে রাজধানী সিউলের বিভিন্ন বাসা-বাড়ির জন্য পাইলট প্রকল্পের আওতায় ১০০ গৃহকর্মী নেওয়া হবে।
সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানিয়েছেন সিউলের মেয়র ওহ সে হুন।
মেয়রের দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে এই প্রকল্পের আওতায় গৃহকর্মী নিয়োগ। আগত প্রত্যেক বিদেশি গৃহকর্মীর ন্যূনতম মাসিক বেতন ২ হাজার ৬০০ ডলার নির্ধারণ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৮ টাকা।

মূলত চাকরি-ব্যবসা ও অন্যান্য আর্থিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত নারী-পুরুষকে আরও বেশি পরিবারমুখী করতে তোলা এবং তাদের ওপর চাপ কমানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সন্তান জন্মদান ও লালনপালন করতে গেলে নারীদের কর্মসংস্থান থেকে কয়েক বছর বিরতি নিতে হয়। কিন্তু দেশটির কর্মক্ষেত্রে তীব্র প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি থাকায় অধিকাংশ নারী ভয়ে থাকেন যে, মাতৃত্বকালীন বিরতি নিলে তারা প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে পড়বেন।
সরকারের নীতিনির্ধারকরাও মনে করছেন, এক্ষেত্রে কর্মজীবী নারীদের বড় সহায়ক হতে পারবেন গৃহকর্মীরা। বাসায় সার্বক্ষণিক গৃহকর্মী থাকলে সন্তান লালনপালন ও কর্মসংস্থান উভয় চালিয়ে নেওয়া নারীদের জন্যও সুবিধাজনক হবে।
ফেসবুক পোস্টে সিউল এর মেয়র ওহ সে হুন বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় ও প্রধান সমস্যা হলো নিম্ন জন্মহার এবং এই সমস্যার কোনো একক সমাধান নেই। বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে ধাপে ধাপে আমদেরকে জন্মহার বাড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, দক্ষিণে কোরিয়াকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং জনগণকে পরিবার ও কর্মক্ষেত্রের ভারসাম্য রক্ষায় বিদেশি গৃহকর্মীরা বলে আমরা মনে করছি।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে নিম্ন জন্মহারের দেশ হিসেবে পরিচিতি পায় দক্ষিণ কোরিয়া। সরকারি পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির সন্তানধারণ ও জন্মদানে সক্ষম নারীরা গড়ে তাদের সারাজীবনে একটির কম, দশমিক ৭৮ সংখ্যক সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন।