বিশ্বের আলোচিত ২৪ টি আকাশচুম্বী স্থাপনা

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ বুর্জ খলিফা: দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত
Burj Khalifa (Dubai, United Arab Emirates)
বর্তমান পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থাপনা বুর্জ খলিফা । দুবাই শহরেই আরেকটি আলোচিত স্থাপনা বুর্জ আল আরব বুর্জ খলিফার দূরত্ব মাত্র ১৬ কিলোমিটার । শুধুমাত্র পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থাপনাটি দেখার জন্য প্রতিবছর অসংখ্য পর্যটক ভীড় করেন দুবাই সিটিতে । বুর্জ খলিফা বস্তুত পর্যটকদেরকে আকর্ষণ করা এবং আমিরাতের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করার জন্য আমিরাতের দুরদর্শী শাসকরা নির্মাণ করেছিলেন । মেঘমালা ভেদ করে দুবাই শহরের বুকে গোটা আমিরাতের অহংকারের মতোই মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকা বুর্জ খলিফা না দেখে দুবাই থেকে ফিরে যাওয়া দূর্ভাগ্যই বটে । এর উচ্চতা ৮২৮ মিটার , ১৬৩ তলা বিশিষ্ঠ এই ভবনটি উদ্বোধন হয় ২০১০ সালে । জুমেইরা সমূদ্র বন্দরের আশেপাশেই রয়েছে বুর্জ খলিফা এবং বুর্জ আল আরব। বুর্জ খলিফার স্থপতি আদ্রিয়ান স্মিথ একজন মার্কিন স্থপতি, বত্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত স্থপতিদের একজন । ৬ জানুয়ারি ২০০৪ থেকে ১ অক্টোবর ২০০৯ এর মধ্যে মাত্র ৫ বছরে এর নির্মাণকাজ শেষ করে তাক লাগিয়ে দেয়া এই স্তপতি এটি ছাড়াও আরো বহু আলোচিত ভবনে নিজের মেধার প্রমাণ রেখেছেন । বুর্জ খলিফা একটি হোটেল, অফিস, ট্রেড সেন্টার হিসাবে ত ব্যবহার করা হচ্ছেই কিন্তু সবকিছু ছাড়িয়ে এটি এখন আরব আমিরাতের উপার্জনের একটি অন্যতম উপায় হয়ে উঠছে ।

The Burj Khalifa - Izkiz

তাইপেই ১০১: তাইপেই, তাইওয়ান
Taipei 101 (Taipei, Taiwan)
জিন মাও টাওয়ারের শৈলীর অনুরূপ, তাইপেই ১০১ ঐতিহ্যগত চীনা স্থাপত্য শৈলীতে নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১০ সালে সমাপ্ত এর নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়। ডিজাইন করেছেন চু-ইয়ুয়ান লি এবং সিপি হয়েছে। ৫০.৮.২ মিটারের এই ভবনটির নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয় ৩১ ডিসেম্বর ২০০৪ সালে , এর ভবন সংখ্যা ১০১ টি । No. 7, Section 5, Xinyi Road, Xinyi District এ অবস্থিত ভবনটির মালিকানা তাইপেই সরকারের। বর্তমান পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থাপনা বুজ্জ খলিফার নির্মাতা এটিতেও অর্থায়ন করেছেন। এটি একটি ট্রেড সেন্টার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

Taipei 101 Observatory, Taipei - Book Tickets & Tours Free cancellation |  GetYourGuide

পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার: কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া
Petronas Twin Towers (Kuala Lumpur, Malaysia)
বাংলাদেশি আমেরিকান প্রসিদ্ধ স্থপতি ফজলুর রহমান খান বিশ্বব্যাপী তার অনন্য স্থাপত্যকলা ও আর্কিটেকচারের বহু তত্ব দেয়ার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। Tube in Tube Design নামে তার একটি বিখ্যাত তত্ব আছে যার হাতেনাতে প্রমাণ হল মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার । এই ভবন নির্মানে তাঁর ডিজাইন থিওরিটি কাজে লাগানো হয়।

৮৮ তলা বিশিষ্ঠ ৪৯১.৯ মিটার উঁচু এই জমজ ভবনগুলি একটি পুল দ্বরা পরষ্পরের সাথে যুক্ত রয়েছে। এই অভূতপূর্ব নির্মাণশৈলীই প্রধাণত বহু সুউচ্চ ভবনকে পেছনে ফেলে এর জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে । টুইন টাওয়ার আরো আছে কিন্তু টুইন টাওয়ার বললেই পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই মালয়েশিয়ার পেটড়োনাস টুইন টাওয়ারের কথাই বুঝেন পুরো বিল্ডিং জুড়ে ব্যবহৃত আটটি থাম মালয়েশিয়ার সংস্কৃতি অনুযায়ী সৌভাগ্যের প্রতীক। এর ডিজাইন করেছিলেন বিখ্যাত ডিজাইনার প্রয়াত সিজার পেলি। ঝুলন্ত উদ্যানের ব্যাবিলনীয় স্থাপত্যশৈলী আরবরা গ্রহণ করেছিলেন সর্বত্রই, আরবীয় স্থাপত্যশৈলী আজও বিস্বের দরবারে সমাদৃত, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের এই ঝুলন্ত সংযোগ স্থাপনকারী সেতুটি আরবীয় স্থাপত্যশৈলীকেই অনুসরণ করে তৈরী করা হয়েছিল ।

Petronas Twin Towers - Kuala Lumpur: Get the Detail of Petronas Twin Towers  on Times of India Travel

এর একটা বিশেষ ব্যাপার হল টাওয়ারের নিচে ৩৭৪ ফুট পর্যন্ত গভীর পাইলিং , এটা সাধারণ পর্যটকের জন্য কোন আগ্রহের বিষয় না হলেও ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্রদের জন্য এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। মাটি নরম হবার কারণে এই কাজটা করতে হয়েছিল স্থপতিদেরকে , এটা যে সম্ভব তার একটা বাস্তব প্রমাণ হিসাবেও টাওয়ারগুলির গুরুত্ব রয়েছে । Jalan Ampang, Kuala Lumpur, Malaysia তে অবস্থিত এই বিশ্ববিখ্যাত যমজ টাওয়ারগুলি ৩১ আগস্ট ১৯৯৯ সাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে ।

এডোব ৩১৮ : মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
Abode318 (Melbourne, Australia)
এডোব ৩১৮ এর দিকে তাকালে মনে হবে এটি পানির উপর থেকে আপনি দেখছেন , বিল্ডিংটির ঢেউ খেলানো আকৃতি কেবল নান্দনিকতার জন্যই নয় , একটি আবাসিক স্থাপনাকে প্রাকৃতিক ক্ষয় প্রতিরোধী করার জন্যও এই নকশাটি করা হয়েছে । এর ভেতরে সাজানো রয়েছে মেলবোর্নের কিছু অপূর্ব দৃশ্য যা অস্ট্রেলিয়ার সৌন্দর্য্যকে প্রতিফলিত করে।

Abode318 - The Skyscraper Center

302-324 Russell Street, Melbourne, Australia তে অবস্থিত এই স্থাপনাটির কাজ সমাপ্ত হয় ২০১৫ সালে । Elenberg Fraser এবং Disegno Australia এর ডিজাইন করেন ।

উইলিস টাওয়ার (শিকাগো, ইলিনয়)
Willis Tower (Chicago, Illinois)
১৪৫০ ফুট উচ্চতার ১১০ তলা বিশিষ্ঠ এই স্থাপনার কাজ ১৯৭৩ সালে সমাপ্ত হয়। উইলিস টাওয়ারটি দীর্ঘকাল ধরে শিকাগোর বহুতল স্কাইলাইনের সবচেয়ে আইকনিক অংশ । পূর্বে সিয়ার্স টাওয়ার নামে পরিচিত, কালো বার্ণিশের কাঠামোটি পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে লম্বা পর্যবেক্ষণ ডেকগুলির মধ্যে একটি। উইলিস টাওয়ারের ডিজাইন করেছে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান স্কিডমোর, ওউংস এবং মেরিল। ১৯৭৩ সালের মে মাসে টাওয়ারটির নির্মাণ সম্পন্ন হয়। উইলিস টাওয়ার ২০১৫ সালে ব্ল্যাকস্টোন ১.৩ বিলিয়ন ডলারে কিনেছিল।

United cutting down HQ space in Willis Tower - Chicago Tribune

ট্রান্সআমেরিকা পিরামিড (সান ফ্রান্সিসকো, ক্যালিফোর্নিয়া)
Transamerica Pyramid (San Francisco, California)
সান ফ্রান্সিসকোর আকাশ ভরাট করে ভবনটি ১৯৭২ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি গোল্ডেন সিটির প্রতীক হয়ে উঠেছে। এটি উইলিয়াম পেরেইরা ল্যান্ডমার্ক ডিজাইন করেছিলেন এবং একটি ‘মুকুট জুয়েল’ স্থাপন করেছিলেন শীর্ষে যা ছুটির দিন এবং স্মরণের দিনগুলিতে আলোকিত করা হয়। উচ্চতা ২৬০ মিটার। এটি অবস্থিত : 600 Montgomery Street, San Francisco, California তে ।

San Francisco's Iconic Transamerica Pyramid Sold To NYC Developer

আল হামরা টাওয়ার (কুয়েত সিটি, কুয়েত)
Al Hamra Tower (Kuwait City, Kuwait)
আল হামরা টাওয়ার হল একটি মাল্টিমিডিয়াম বিল্ডিং যা দূর থেকে দেখলে মনেহয় ফ্লোরগুলি উপরে নিচে উঠানামা করছে। ফার্ম স্কিডমোর, ওয়িংস ও মেরিল, রামশির ও ক্যালিসন দ্বারা ডিজাইনকৃত কাঠামোটির উচ্চতা ৪১৪ মিটার। এটি অবস্থিত 13085 Jaber Al-Mubarak Street এ। ২০১১ সালে এর নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়।

Alhamra Tower and Mall - Stores, Location and Timings

৪৩২ পার্ক এভিনিউ (নিউ ইয়র্ক, নিউ ইয়র্ক)
432 Park Avenue (New York, New York)
১৩৯৬ ফুট (৪২৫.৫ মিটার) উঁচু ‘432 পার্ক অ্যাভিনিউ’ হল পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে উঁচু আবাসিক ভবন। রাফায়েল ভিনোলি দ্বারা ডিজাইন করা, ব্লকের মতো টাওয়ারটি নিউ ইয়র্কের রাতের আকাশে তারকার পাশে এক অভূতপূর্ব শোভা বর্ধন করে দাঁড়িয়ে থাকে, আলো বিচ্ছুরনের জন্য এর সাথে যুক্ত করা হয়েছে আলোক বিচ্ছুরনের যান্ত্রিক ব্যবস্থা যা একে বহু দূর থেকেও রাতের বেলায় চিহ্নিত করা যায়। প্রতিসম বর্গাকৃতি আলোক বিচ্ছুরণের কাঠামো দিয়ে একে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা বিচ্ছুরিত আলোকে সবদিকে ছড়িয়ে দেয়। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫ তে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। ঠিকানা : 432 Park Avenue, Manhattan, New York.

432 Park Avenue | SkyriseCities

মেরিনা বে স্যান্ডস হোটেল (সিঙ্গাপুর)
Marina Bay Sands Hotel (Singapore)
দ্য মেরিনা বে স্যান্ডস হোটেল সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে স্বীকৃত ভবনগুলির মধ্যে একটি। মোশে সাফদির ডিজাইন করা, তিন কলামের বিল্ডিংটি ছাদে সবচেয়ে বড় রুফটপ ইনফিনিটি পুল দ্বারা সংযুক্ত।
২০১০ সালে উদ্বোধনের সময় এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ক্যাসিনো হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ৮ বিলিয়ন সিঙ্গাপুরি ডলার দাম ধরা হয়েছিল এর জমির মূল্য সহ।রিসর্টটিতে রয়েছে ২৫৬১ রুমের একটি হোটেল, একটি ১২০০০ বর্গ-মিটার এর সম্মেলন-প্রদর্শনী কেন্দ্র, ৭৪০০ বর্গ-মিটার এর বিপনী বিতান, রয়েছে ‘সেলিব্রিটি শেফ’ রেস্তোরাঁ, দুটি ভাসমান ক্রিস্টাল প্যাভিলিয়ন, শিল্প-বিজ্ঞান প্রদর্শনী, এবং ৫০০ টি টেবিল আর ১৬০০ টি স্লট মেশিন সহ এটি হল বিশ্বের বৃহত্তম অ্যাট্রিয়াম ক্যাসিনো। এটি 10 Bayfront Avenue, Singapore 018956 এ অবস্থিত।

ইভলিউশন টাওয়ার: মস্কো , রাশিয়া
Evolution Tower (Moscow, Russia)
ভবনটি দুটি মুচড়ে দেয়া ফিতার মতো দেখতে। টাওয়ারের প্রতিটি তল তার নীচের একটির সাথে তিন ডিগ্রি বাঁক নেয়। পুরো টাওয়ারটি মোট ১৩৫ ডিগ্রি মোচড় দেয়। ভবনের শীর্ষে একটি বলরুম রয়েছে। সিটি প্যালেসের ধারণাটি ছিল ডিজাইনার আর.এম.জে.এম এর ইনার সাথে দুজন স্কটিশ শিল্পি টনি কেটল এবং ফোর্বস যৌথভাবে ডিজাইন সম্পন্ন করেন । প্রকল্পের প্রধান স্থপতি ছিলেন ফিলিপ নিকান্দ্রভ। ২৪৬ মিটার উচ্চতার এবং ৫৫ তলার এই ভবনটির ঠিকানা হল :
Moscow International Business Center, Moscow, Russia। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তে এর নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়।

আকবর টাওয়ার: বার্সিলোনা, স্পেন
Agbar Tower (Barcelona, Spain)
আগবার টাওয়ারের বুলেট-আকৃতির নির্মাণ কাঁচের মোজাইকে লেপা যা স্পেনের স্থাপত্যশৈলীর একটি অনন্য নিদর্শন । আন্তোনি গাউডি এর স্বপ্নদ্রষ্টা ডিজাইনার ছিলেন যা বাস্তব রুপলাভ করে ফরাসি স্থপতি জিন নুভেলের পরিশ্রমে, শুরুতে অগোচরে থাকা এই ভবনটি এখন কাতালান শহরের একটি গৌরবের বিষয়ে পরিণত হয়েছে । পর্যটকদের কাছে এটি হয়ে উঠেছে একটি আকর্ষণীয় স্থান । এর শুধু বাণিজ্যিক মূল্য নয় শিল্পমূল্যটাই বরং এখন প্রধাণ হয়ে উঠছে। ১৪৪.৪৪ মিটার উচ্চতার এই ভবনে ৩৩ টি ফ্লোর আছে । ২০০৪ সালে সম্পন্ন হয় এবং জুন ২০০৫ এ উদবোধন হয় এই টাওয়ারটি । স্পেনে একে বলা হয় তূর-এ-আকবর । অফিস ও কনফারেন্স হাউজ হিসাবেই এর ব্যবহার হচ্ছে । Barcelona, Catalonia, Spain এটি অবস্থিত ।

টোকিও স্কাইট্রি:টোকিও, জাপান
Tokyo Skytree (Tokyo, Japan)
নিককেন সেক্কেই দ্বারা ডিজাইন করা, নিওফিউচারিস্টিক ব্রডকাস্ট টাওয়ারটি ২০১২ সাল থেকে জাপানের টোকিও শহরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। জাপানি প্যাগোডার মতো করে ডিজাইন করা টোকিও স্কাইট্রি জাপানি স্থাপত্যশৈলীতেই নির্মাণ করা হয়েছে যা এর শিল্পমানের কারণে পর্যটকদের প্রধাণ আকর্ষণ। “স্কাইট্রি হোয়াইট” জালি বলে একটা আলোকের উৎস ব্যবহার করে রাতের বেলা একে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে । ৬৩৪ মিটার উচ্চতার ২৯ তলার এই ভবনটিতে সব সময় লোকসমাগম থাকে এটি একটি বিশাল ক্যাফে ও রেস্টুরেন্ট হবার কারণেই । 1 Chome-1-2 Oshiage, Sumida City, Tokyo 131-0045, Japan হল এর ঠিকানা । ২২ মে ২০১২ সাল থেকে ভবনটি তার যাত্রা শুরু করে।

সাংহাই ওয়ার্ল্ড ফাইন্যান্স সেন্টার: সাংহাই, চীন
Shanghai World Finance Center (Shanghai, China)
ভবনটির ডিজাইন করেছেন কোহন পেডারসেন ফক্স, সাংহাই ওয়ার্ল্ড ফাইন্যান্স সেন্টারের (ডানদিকে) একটি আয়তক্ষেত্রাকার ফাঁক সহ সামান্য বাঁকা ট্র্যাপিজয়েড ডিজাইনটি ২০০৮ সালে সম্পন্ন হয়েছিল। অফিস, হোটেল, যাদুঘর, পার্কিং, গ্যারেজ এবং বিপনী বিতান হিসাবে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে । No.100 Century Avenue, Pudong New Area, Shanghai,200120 China তে অবস্থিত এই ভবনটির উচ্চতা ৪৯২ মিটার , ফ্লোরের সংখ্যা ১০১। ২৮ আগস্ট ২০০৮ থেকে ভবনটি ব্যবহার হয়ে আসছে । এটি তৈরীও করেছিল সাংহাই ওয়ার্ল্ড ফাইন্যান্স সেন্টার ব্যবসার স্থান হিসাবে ।

আবরাজ আল-বাইত টাওয়ার: মক্কা, সৌদি আরব
Abraj Al-Bait Tower (Mecca, Saudi Arabia)
সাতটি-বিল্ডিং এর একটি কমপ্লেক্সের অংশ হিসাবে, চারমুখী ঘড়ির টাওয়ারটি মক্কার পবিত্র মসজিদগুলির দৃশ্য দেখা যায়। এর নিওক্লাসিক্যাল নির্মাণশৈলী পুরানো ও নতুন দুটো শৈলীকেই ধরে রেখেছে। হাজীদের কাছে এটি সুপরিচিত এর হোটেলগুলির জন্য । এটি জার্মান সংস্থা এসএল রাশ দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল। ১২০ তলা বিশিষ্ট এই ভবনের উচ্চতা ৬০১ মিটার। ২০১২ সালে নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয় এবং সে বছর থেকেই এটি আবাসিক ও হোটেল উভয় কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে ।

জন হ্যাংকক সেন্টার: শিকাগো, ইলিনয়েস
John Hancock Center (Chicago, Illinois)
আবলুশ কাঠের রঙের মতো রঙ করা এই বিল্ডিংটি দেখে মনেহয় পুরোটাই কাঠের তৈরী, যমজ অ্যান্টেনা সহ আইকনিক বিল্ডিংটি ম্যাট স্ট্রাকচারাল বিম দিয়ে তৈরী। এর ডিজাইনে জ্যামিতিক কাঠামো খুব স্পষ্টভাবেই লক্ষণীয় । স্কিডমোর, ওয়িংস এবং মেরিল দ্বারা ডিজাইন করা এবং শিকাগোর মাইল জেলায় এটি অবস্থিত, টেপার করা কাঠামোটি শহরের স্কাইলাইনের একটি প্রিয় অংশ হয়ে উঠেছে। ১০০ টী ফ্লোরের ৩৪৪ মিটার উচু ভবনটি গত শতকের নির্মাণ শৈলির নিদর্শন, এর কাজ শেষ হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। ভবনটির ঠিকানা : 875 North Michigan Avenue (additional entrances at 175 East Delaware Place and 170 East Chestnut Street)। নির্মাণকালের সময় এটি ছিল পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভবন ।

টার্নিগ টরসো: মালামো, সুইডেন
Turning Torso (Malmö, Sweden)
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ভবনের মধ্যে এটি একটি। এরকম মোচড়ানো আরো ভবন থাকলেও এর ডিজাইন্টি এতই সাদারণ যেখানে সব মিলে এটিকে ভবনের চেয়ে বেশ ভাষ্কর্যই মনে হয় । নিওফিউচারিস্টিক শৈলীতে নির্মিত ভবনটি আরো বেশি দৃশ্যমান হয় এর আশেপাশে এই রকম উচু ভবন না থাকায় । প্রতিটি ফ্লোর একটি অনিয়মিত পঞ্চভুজ আকৃতির যা দুটি ফ্লোর পর পর মোচড় নেয় এবং টপ ফ্লোর গ্রাউন্ড ফ্লোরের চেয়ে ৯০ ডিগ্রী সরে গেছে মোচড় দিয়ে । এটি স্প্যানিশ স্থপতি, কাঠামোগত প্রকৌশলী, ভাস্কর এবং চিত্রশিল্পী সান্তিয়াগো ক্যালাট্রাভা দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল । ভবনটি ৫৪ তলা বিশিষ্ঠ এবং ১৯০ মিটার উঁচু। ২৭ আগস্ট ২০০৫ সাল থেকে এটি চালু হয় । ঠিকানা : Lilla Varvsgatan 14, 211 15 Malmö, Sweden.

ক্যানটন টাওয়ার: গোয়াংজু, চীন
Canton Tower (Guangzhou, China)
ডিজাইনার মার্ক হেমেল এবং বারবারা কুইট এর যৌথ সহযোগিতায় এবং সেইসাথে অরুপ নামে একটি ডিজাইনিং টিম দ্বারা এর ডিজাইন করা হয়। ক্যান্টন টাওয়ার হল সবচেয়ে উপভোগ্য দৃশ্য দেখার একটি স্থান যা বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু খোলা আকাশের সিঁড়িযুক্ত একমাত্র ভবন। দর্শনার্থীরা এই টাওয়ারে উঠতে পারেন। কাঠামোর ক্লাইম্বিং ব্যবহার করে তৈরী করা এই ভবনটি কাঠামোগতভাবে অনন্য । এটি তৈরীই করা হয়েছিল সাইট সিয়িং ( দৃশ্য দেখার/পর্যবেক্ষণ টাওয়ার ) টাওয়ার হিসাবে । নির্মাণের সময় এর নাম দেয়া হয়েছিল Guangzhou TV Astronomical and Sightseeing Tower । টাওয়ারটির উচ্চতা ৬০৪ মিটার , এতে রয়েছে ৩৭ টি ফ্লোর । ২০১০ সাল থেকে টাওয়ারটি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়। ঠিকানা : Yuejiang Road West/Yiyuan Road, Haizhu District, Guangzhou, Guangdong.

স্পেস নিডল: সিয়াটল, ওয়াশিংটন
Space Needle (Seattle, Washington)
সুতো বাঁধা বেলুন আর স্পেস সসারের কাল্পনিক ডিজাইনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে , এই দুটিকে একসাথে একই ডিজাইনে মিশেল ঘটিয়ে এই ভবনটি ডিজাইন করেছিলেন এডওয়ার্ড ই, জন গ্রাহাম এবং কার্লসন । এটি মূলত ওয়াচ টাওয়ার হিসাবেই ব্যবহার হয়। একই শহরে এরচেয়ে উঁচু একাধিক ভবন থাকলেও কয়েকটি কারনে এটি জনপ্রিয় , তার একটি হল বহু চলচ্চিত্রে এর দৃশ্যধারণ , অনন্য ডিজাইন, এবং আত্মহত্যার ঘটনার জন্যও এটি পরিচিত হয়েছে। প্যাশুটিস্টদের কাছে স্পেস নিডল থেকে ঝাপ দেয়া পছন্দের হলেও এটি বহু শর্তসাপেক্ষে করা যায়, কিন্তু নিয়ম না মেনেও এই কাজটা করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন । 400 Broad Street, Seattle, Washington, U.S এ অবস্থিত এই স্থাপনাটি কিন্তু অনেক পুরানো , ২১ আগস্ট ১৯৬২ তে এটি উদবোধন হয় । ১৫৪-১৮৪ মিটার পর্যন্ত এর উচ্চতা যা ফ্লোর ও এন্টেনার শীর্ষ পর্যন্ত উচ্চতা যথাক্রমে।

বুর্জ আল আরব জুমেইরা: দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত
Burj Al Arab Jumeirah (Dubai, United Arab Emirates)
আরব আমিরাত সুউচ্চ ভবনের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছে বিশ্বব্যাপী, বুর্জ আল আরব সেই উচ ভবনগুলির এবং একই সাথে নান্দনিক ভবনের একটি । এটি পৃথিবীর শীর্ষ ব্য্য়বহুল হোটেলগুলির একটি। ৩২১ মিটার উঁচু আর ৩ টি আন্ডারগ্রাউন্ড ফোর সহ মোট ৫৬ টি ফ্লোরের এই ভবনটি উদবোধন হয় ১ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে । জাহাজের পালের আকারের এই স্থাপনাটি বর্তমান পৃথিবীতে আলোচিত স্থাপনাগুলোর প্রথমদিকে রয়েছে । ঠিকানা : Burj Al Arab, Jumeirah, United Arab Emirats. কাঠামোটি ডিজাইন করেছিলেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত স্থপতি টম রাইট

সি এন টাওয়ার: টরোন্ট, ওন্টারিও
CN Tower (Toronto, Ontario)
এর স্বীকৃত সূঁচের মতো ডিজাইন ছাড়াও, CN টাওয়ারের এজওয়াক অনেক আগ্রহী ভ্রমণকারীদের জন্য একটি বালতি তালিকা আইটেম। অস্ট্রেলিয়ান স্থপতি জন অ্যান্ড্রুজ দ্বারা ডিজাইন করা, রেকর্ড-ব্রেকিং টাওয়ারটি 1976 সালে শেষ হয়েছিল এবং 2007 সাল পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু কাঠামোর রেকর্ড ছিল।
সুঁচের মতো তীক্ষন ডিজাইন ছাড়াও আরও বহু কারণেই এটি পর্যটকদের কানাডা ভ্রমণে দর্শনীয় স্থানের তালিকায় অবশ্যই থাকে, তার একটি কারণ হল ২০০৭ সাল পর্যন্ত এটিই ছিল বিস্বের সবচেয়ে উঁচু স্থাপনা কিন্তু এটি নির্মিত হয়েছিল বহু আগে, ১৯৭৬ সালে। অস্ট্রেলিয়ান স্থপতি জন অ্যান্ড্রুজ এর ডিজাইন করেছিলেন। টাওয়ারের উচ্চতা ৪৪৬.৫ থেকে ৫৫৩.৩ মিটার ভচুতা যথেক্রমে সর্বোচ্চ ফ্লোর ও এন্টেনার শীর্ষ পর্যন্ত । স্থাপনাটি সমগ্র ওন্টারিওতে টিভি সম্প্রচারকে সহজ করার জন্যই কানাডার সরকার নিজস্ব খরচে এটি নির্মাণ করেছিল। 290 Bremner Boulevard, Toronto, Ontario, M5V 3L9 এখনও বহু পর্যটক শুধু টাওয়ারটি দেখার জন্যই প্রতিবছর ভীড় করেন।

জিন মাও টাওয়ার: সাংহাই, চীন
Jin Mao Tower (Shanghai, China)
৭ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প পর্যন্ত সামলে টিকে থাকতে পারে এমন স্কাইস্ক্রেপার পৃথিবীতে দূর্লভ, জিন মাও টাওয়ার এমনই দৃঢ় একটি স্থাপনা। এটি যেকোন টাইফোন সামাল দেয়ার মতো শক্তিশালী করে ডিজাইন করা হয়েছে । উত্তর-আধুনিক জিন মাও টাওয়ার তৈরি করার সময় এর স্থপতিরা ঐতিহ্যবাহী চীনা স্থাপত্য দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। সাংহাইয়ের আর্থিক জেলার সবচেয়ে স্বীকৃত কাঠামোর মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। ১৩৮০ ফুট উঁচু ভবনটিতে পুরানো স্থাপত্যশৈলীর সাথে নতুন উন্নত স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করা হয় একে বিশ্বের অন্যতম দৃঢ় ইমারত হিসাবে গড়ে তোলার জন্য। ১৯৯৯ সালে এর নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়। ভবনটি 88 Century Avenue, Pudong District, Shanghai 200121, China তে অবস্থিত। এর ফ্লোরের সংখ্যা ৮৮ টি । আদ্রিয়ানা স্মিথ এবং সোম নামে দুজন ডিজাইনার এটি ডিজাইন করেন । ভবনটি অফিস, হোটেল ও বিপনী বিতান হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

দ্য শার্ড: লন্ডন, ইংল্যান্ড
The Shard (London, England)
রেললাইনের সমান্তরাল রেখার দূরে একটি বিন্দুতে মিলিত হবার ভ্রম, এবং চার্চের স্থম্ভাকৃতির ডিজাইন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ইতালিয়ান স্থপতি রেঞ্জো পিয়ানো এই ভবনটির ডিজাইন করেন। London, SE1 তে অবস্থিত ভবনটির উদবোধন হয় ১ লা ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তে। ইংল্যান্ডে এটি শার্ড অব গ্লাস, শার্ড লন্ডন ব্রিজ (Shard of Glass, Shard London Bridge) নামেও পরিচিত। ৯৫ তলার ৩০৯.৬ মিটার উচ্চতার এই ভবনে ৭২ টি ফ্লোরে বসবাস করা হয় বাকিগুলি স্ট্রাকচারাল ডিজাইনের জন্য নির্মিত।

সাংহাই টাওয়ার (সাংহাই, চীন)
Shanghai Tower (Shanghai, China)

অপূর্ব এই জলমলে ভবনটি সবুজ ভবনের খেতাব অর্জন করেছে । এর ডিজাইনে কাঁচের দ্বিস্তরের ব্যবহার করা হয়েছে তাপ শোষনের ক্ষমতা বাড়াতে এবং ত্রিকোণাকার ডিজাইনের উদ্দেশ্য হল দৃঢ়তা যা স্থাপত্যশিল্পের অতি প্রাচীন একটি কৌশল। ১২৮ তলার ৩ টি তলা আন্ডারগ্রাউন্ড , ৬৩২ মিটার উঁচু ভবনটি 501 Yincheng Middle Rd, Lujiazui, Pudong, Shanghai তে অবস্থিত । ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তে এটি উদবোধন করা হয়। আমেরিকার আর্কিটেকচারাল ফার্ম জেস্লার এর ডিজাইন করেছিল।

এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং: নিউ ইয়র্ক, আমেরিকা
Empire State Building (New York, New York)
মোট ১৫ বার এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং এর নকশা পরিবর্তন করা হয় যেন এটি সেই সময়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থাপনা হতে পারে। ৩৮১ মিটার উচ্চতায় সর্বশেষ ফ্লোর নিয়ে এই স্থাপনাটির নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয় ১১ এপ্রিল ১৯৩১ সালে । তারপর এটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থাপনা ছিল কিন্তু ৮২৮ মিটার উঁচু বুর্জ খলিফার কাছে যেন এটি একটি কুড়েঘর । এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং এর ডিজাইন শার্ভ, লেম্ব, হারমন নামে তিনজন মেধাবী ডিজাইনার এর ডিজাইনের কাজ সম্পন্ন করেছিলেন । আর ১০ বছর পরই এটি তার ১০০ বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছে । বিল্ডিংটি 350 Fifth Avenue, Manhattan, New York 10118 তে অবস্থিত।

ওয়ান ওয়ার্ড ট্রেড সেন্টার: নিউ ইয়র্ক, আমেরিকা
One World Trade Center (New York, New York)
স্কিডমোর , ওয়িংস এবং মেরিল নামে তিনজন স্থপতি ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ডিজাইন করেন । দক্ষিণ গোলার্ধে এটিই এখনো সবচে উঁচু ট্রেড সেন্টার । ৩ নভেম্বর ২০১৪ তে এর উদ্বোধন হয়। সাইক্রেপারের শহর নিউইয়র্কেই এটি অবস্থিত 285 Fulton Street , Manhattan, New York City, U.S. এই ঠিকানায় । ৫৪১.৩ থেকে ৫৪৬.২ মিটার উঁচু এই ভবনটিতে ফ্লোর আছে ৯৯ টি যার ৫ টি ভূগর্ভস্থ (আন্ডারগ্রাউন্ড) ।

SHARE THIS ARTICLE