
আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বাড়ার প্রভাবে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় রাশিয়ার তেল-গ্যাস আমদানি বন্ধ করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের মতপার্থক্যের জেরে বর্তমানে কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে জ্বালানি তেলের দাম। এতে গত শুক্রবার ইউরোপের পুঁজিবাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে গত শুক্রবার পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। মিশ্র প্রবণতা দেখা গিয়েছে এশিয়ার পুঁজিবাজারে।
ইউরোপের অন্যতম প্রধান পুঁজিবাজার যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক গত শুক্রবারে ৫৬ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়েছে। জার্মানির ব্লুচিপ সূচক ডিএএক্স ১৮৬ পয়েন্ট এবং ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক ৫৩ পয়েন্ট বেড়েছে। স্পেন, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, তুরস্ক ও নেদারল্যান্ডসের পুঁজিবাজারেও উত্থান হয়েছে।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ২৩০ পয়েন্ট কমেছে। এছাড়া এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৫৫ ও নাসডাক সূচক ২৮৬ পয়েন্ট হারিয়েছে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো ও কানাডার পুঁজিবাজারও এ সময়ে নিম্নমুখী ছিল। তবে ভেনিজুয়েলার পুঁজিবাজারের সূচকগুলো ছিল ঊর্ধ্বমুখী।
গত শুক্রবার এশিয়ার অন্যতম প্রধান পুঁজিবাজার জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ৫২৮ পয়েন্ট হারিয়েছে। ভিয়েতনামের হ্যাং সেং সূচক কমেছে ৩৩৬ পয়েন্ট। এ সময় চীনের সাংহাই সূচক ১৪ ও ভারতের বিএসই সেনসেক্স ৮৬ পয়েন্ট বেড়েছে। পাশাপাশি হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনের পুঁজিবাজারও পয়েন্ট হারিয়েছে। তবে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের পুঁজিবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী।
মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, সৌদি আরব ও বাহরাইনের পুঁজিবাজারে পয়েন্ট যোগ হলেও কাতার ও ওমানের পুঁজিবাজার ছিল নিম্নমুখী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এতে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায় বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে। মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে কয়েক দফায় আলোচনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইউরোপের পক্ষে তাত্ক্ষণিকভাবে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব না হওয়ার কারণে তেলের বাজার বর্তমানে কিছুটা সহনশীল রয়েছে। এতে ইউরোপের পুঁজিবাজারে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল না হলেও যুক্তরাষ্ট্রের তেল সংগ্রহের কার্যকর বিকল্প উৎস নিয়ে কিছুটা চিন্তিত বিনিয়োগকারীরা। ফলে এর প্রভার পুঁজিবাজারেও পড়েছে।