আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ করোনা নিয়ে মোটামুটি আমরা সকলেই কম বেশি চিন্তিত।এই ভাইরাসের তাণ্ডবে সারা বিশ্ব আজ লণ্ডভণ্ড।সকলেই নানা ভাবে চেষ্টা করছে কিভাবে কমানো যাবে এই মহামারি। কীভাবে রক্ষা পাবে মানুষের জীবন।
কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং শরীরে অন্যান্য রোগের সমস্যা কম, সেই সমস্ত মানুষ কম আক্রান্ত হচ্ছেন। অথবা আক্রান্ত হলেও খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠছেন। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, এই এই মারণ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার একটাই উপায়, দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে সেটা সম্ভব? পুষ্টিবিদরা বলছেন, ঘরে বসে কোনও রকম ওষুধের সাহায্য ছাড়াই শুধুমাত্র খাবারের সাহায্যেই বাড়ানো যায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এক্ষেত্রে খাবারের সঙ্গে আসবে মশলার কথা। বেশ কিছু মশলায় রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবার মহৌষধ। আজ ডায়েটেশিয়ান অরিত্র খাঁ জানালেন, আমাদের রান্নাঘরে থাকা সেই সব সাধাবণ মশলার অসাধারণ গুণাগুণ।
১. আদা: প্রথমেই আসি আদার কথায়। আদা ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে। আদাতে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম ও জিঙ্ক যা রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। আদার মধ্যে থাকা ফাইটো কেমিক্যাল অ্যালালাইট সালফাইট অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বিভিন্ন ইনফেকশন থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
২. হিং: অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি-ভাইরাল শক্তি আছে হিং-এর। হিং আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, পেটে ব্যথা এবং গ্যাসের সমস্যায় হিং অব্যর্থ। তরকারি, ডাল এবং অন্যান্য রান্নাতেও হিং যোগ করুন।
৩. হলুদ: এক চিমটে হলুদ আপনার পেটের সমস্যা কমাতে পারে। রান্নাঘরের এই মশলাটি যকৃতের সমস্যায় অব্যর্থ। হলুদের মধ্যে থাকা ফিনোলিক যৌগিক কারকিউমিন একটি ভালো অ্যান্টিসেপটিক। রান্নায়, ডালে, এমনকী এক গ্লাস গরম দুধে এক চিমটি হলুদ দিয়ে খেয়ে দেখুন। বিশেষ করে শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশনের বিরুদ্ধেও কাজ করে এই হলুদ দুধ। হলুদ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ বলে বিভিন্ন ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে শরীরকে।
৪. গোল মরিচ: গোটা হোক বা গুঁড়ো, কালো মরিচ গ্যাস এবং পেটে অন্যান্য সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। প্রদাহের সমস্যা কমানো ছাড়াও, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল হিসেবেও গোলমরিচ খুবই উপকারী। ডিমে, স্যান্ডউইচে, স্যুপে, স্যালাডে, গোল মরিচ ব্যবহার করতে পারেন। গোলমরিচ দিয়ে মশলা চা বানাতে পারেন।
৫. লবঙ্গ: লবঙ্গ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। লবঙ্গে আছে ইউগেনল যা রক্তে সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করে। লবঙ্গ কণ্ঠনালির জ্বালা ও টনসিলের সমস্যা কমাতে বিশেষ কার্যকরী।
৬. মেথি: মেথিতে থাকা ডায়াটরি ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। মেথিতে থাকা ট্রিগোনেলিন নামে এক ধরনের যৌগ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী। মেথি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকেও আমাদের রক্ষা করে। এছাড়াও হতাশা বা অবসাদ কমাতে মেথি খুব ভালো কাজ দেয়।
৭.দারুচিনি: দারুচিনি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ এবং শরীরে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালশিয়াম, ফাইবার এবং আয়রন সরবরাহ করে। দারুচিনি চায়ে মিশিয়ে খেতে পারেন, ভাতে দিতে পারেন, রান্নাতেও দিতে পারেন রোজ।