সিদ্দিকুর রাহমান, স্পেন থেকে: স্পেনের মাদ্রিদে স্থানীয় সরকার কর্তৃক স্বাস্থ্যসেবা সীমিত করণের নিন্দা জানাতে চিকিৎসাকর্মীদের ডাকা ধর্মঘটে আড়াই লাখ মানুষ রাস্তায় মিছিল করেছে। রবিবার (১২ ফেব্রয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুর ১২ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা ধর্মঘট মিছিলে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ এনে মাদ্রিদ আঞ্চলিক সরকার প্রধান ইছাবেল দিয়াজ আইয়ুসোর পদত্যাগ দাবি করা হয়।
আয়োজকরা দাবি করেছেন, মাদ্রিদ ও আশপাশের শহর থেকে ধর্মঘট ও মিছিল সমাবেশে ১০লক্ষ নাগরিক জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য রাজধানীর রাস্তায় নেমেছেন। যদিও সরকারি প্রতিনিধিদলের হিসেবে সে সংখ্যা আড়াই লাখ। মাদ্রিদের ৭০টিরও বেশি বিভিন্ন সংগঠন এ ঘর্মঘট মিছিলে অংশগ্রহণ করে। মাদ্রিদের পৃথক চারটি স্থান নুয়েভোস মিনিস্টেরিয়োস, প্লাসা দে এস্পানিয়া, হসপিটাল দে লা প্রিন্সেসা ও লেগাস্পি থেকে পৃথক চারটি বিক্ষোভ মিছিল প্লাসা সিভেলেস-এ মিলিত হয়।
‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’, ‘আইয়ুসো (মাদ্রিদ আঞ্চলিক সরকার প্রধান) কাপুরুষ’, ‘আইয়ুসো নরকে যাবে’- এমন নানা প্লাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা জনস্বাস্থ্যের পক্ষে নানা স্লোগান দেন। চিকিৎসকদের ধর্মঘট মিছিলে স্থানীয় বাংলাদেশি সংগঠন ‘ভালিয়ান্তে বাংলা’র ব্যানারে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিরাও অংশগ্রহণ করেন। ‘ভালিয়ান্তে বাংলা’র সভাপতি মো. ফজলে এলাহি বলেন, চিকিৎসকদের যৌক্তিক ধর্মঘট বিক্ষোভে লক্ষ লক্ষ মানুষ সমবেত হয়েছে।
মাদ্রিদ আঞ্চলিক সরকার যেভাবে স্বাস্থ্যসেবা সঙ্কুচিত করছে, তাতে আমরা অভিবাসীরাও সমস্যায় পড়বো। যেভাবে স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে, তাতে অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঘন্টার পর ঘন্টা সেবা নেয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ভালিয়ান্তে বাংলার সাধারণ সম্পাদক রমিজ উদ্দিন বলেন, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা- এ দাবিতে আমরাও একাত্ম হয়েছি চিকিৎসকদের বিক্ষোভ ধর্মঘটে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বর থেকে মাদ্রিদে পারিবারিক ডাক্তার এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা নতুন করে পেশাদার আরো চিকিৎসক নিয়োগ প্রদানের দাবি এবং নিজেদের কাজের অতিরিক্ত বোঝা, অবিরাম সময়সূচি এবং রোগীদের যত্ন নেওয়ার জন্য সময়ের অভাব ও কয়েকটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র বন্ধের সরকারী ঘোষণায় মাদ্রিদের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে বলে দাবি করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে রয়েছেন। মাদ্রিদের ১০লক্ষ নাগরিক এবং ২লক্ষ শিশু সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও তারা দাবি করছেন।