আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ২০২০-২১ অর্থবছরে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় প্রথম ধাপে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর ১৭টি নির্মিত হয় বরাইদ আশ্রয়ণ প্রকল্পে। ওই ঘরগুলো নির্মাণে সরকারের ২৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়। অথচ দুই বছরের ব্যবধানে ১৭টি ঘরের মধ্যে ১৬টিই তালাবদ্ধ পড়ে আছে।
বালিয়াটি ইউনিয়নের ভূমিহীন মো. হানিফ আলীও এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ পান। তবে একদিনও এখানে থাকেননি। নিজের ঘরটি মো. সুজন মিয়া নামে একজনের কাছে মাসিক ৫০০ টাকায় ভাড়া দিয়েছেন। এখনও হানিফ বাস করেন বালিয়াটিতে। জানা গেছে, বালিয়াটির মো. হানিফ আলী, মো. হেলাল উদ্দিন, সুফিয়া বেগম, আয়নাল হক, মোসলেম উদ্দিনসহ ১৫ জন এ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। তাদের কেউই এখানে থাকেন না। আশ্রয়ণ প্রকল্পের চারদিকে আগাছা জন্মে গেছে।
গত শনিবার সেখানে গিয়ে একমাত্র পরিবারকে থাকতে দেখা যায়। ওই পরিবারের প্রধান মো. পাপন মিয়া বলেন, বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি জমে যায়। এ ছাড়া ঘরের চালা দিয়েও ভেতরে পানি পড়ে। অন্যরা নিজ নিজ বাড়ি চলে গেছেন। এসব সমস্যা দেখে তিনিও পরিবার নিয়ে চলে যাওয়ার চিন্তা করছেন।
স্থানীয় লোকজনের কাছে আশ্রয়ণ প্রকল্পটি ‘বস্তি’ হিসেবে পরিচিত। তাদের ভাষ্য, এখানে ঘর বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের প্রায় সবাই সচ্ছল পরিবারের মানুষ। বাড়িও অন্য ইউনিয়নে। যাচাই-বাছাই কমিটি বরাইদের ভূমিহীন লোকদের যদি ঘর বরাদ্দ দিত, তা হলে তারা সেখানে থাকতেন, ঘরগুলোরও যত্ন নিতেন।
সাটুরিয়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ কেন্দ্রে কয়েক লক্ষাধিক টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া। যে কারণে বেশির ভাগ ঘরেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
বরাইদ ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হাইয়ের ভাষ্য, আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকার জন্য তাঁর ইউনিয়নের অনেক ভূমিহীন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এ ইউনিয়নের কেউ ঘর বরাদ্দ পাননি। যারা পেয়েছেন, তারা এ ইউনিয়নের নন। তিনি মনে করেন, ঘর বরাদ্দের সময় যাচাই-বাছাই কমিটির উচিত ছিল সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি নির্ধারণ করায় ভুল হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন সাটুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম। তিনিও বলেন, যাচাই-বাছাই কমিটি সঠিকভাবে ঘরগুলো বরাদ্দ দেয়নি। অন্য ইউনিয়নের লোকজন এখানে ঘর পেয়ে আর থাকছেন না।
সাটুরিয়ার ইউএনও শান্তা রহমান বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা কোন ইউনিয়নের সেটি দেখার বিষয় নয়। তারা কেন সেখানে থাকেন না, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।