আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার (১০ মে) সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ বৃহস্পতিবার (১১ মে) থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি আগামী ১৩ মে রাত থেকে ১৪ মে সকালের মধ্যে কক্সবাজার উপকূলে ১৮০ থেকে ২২০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে।
বুধবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গভীর নিম্নচাপটি এখন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে আছে। এখন এর গতিপথ পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমমুখী। কাল পর্যন্ত এটি এভাবেই চলবে। এরপর যখন সাগরের কেন্দ্রে চলে আসবে তখন আশঙ্কা করছি, এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে; অর্থাৎ আমাদের কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূলের মাঝামাঝি দিয়ে অতিক্রমের আশঙ্কা আছে ১৪ মে।’ বুধবার সন্ধ্যার পর গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয় বেলা তিনটার দিকে। সেখানে সম্ভাব্য প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি নিয়ে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম (জিএফএস), ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য বলছে যে একটি ঘূর্ণিঝড় আসছে। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে রোববার ভোরের মধ্যে এটি আঘাত হানতে পারে টেকনাফ এবং মিয়ানমারের উপকূলে। এটি হতে পারে সুপার সাইক্লোন। এনামুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ১৮০ থেকে ২২০ কিলোমিটার হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের বিষয়েও জানান দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা কক্সবাজার জেলার ৫৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছি। মাঠ প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে ১৪ টন ড্রাই কেকসহ শুকনা খাবার, ২০ লাখ টাকা, ২০০ মেট্রিক টন চালও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’ প্রতিমন্ত্রী জানান, কক্সবাজার জেলায় সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হলে সেটি হয় সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়। বাতাসের গতিবেগ ৮৮ থেকে ১১৭ হলে তাকে বলা হয় তীব্র ঘূর্ণিঝড়। আর বাতাস যদি ১১৭ থেকে ২২০ কিলোমিটার বেগে বয়, তবে তা হয় অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়। আর ২২০ কিলোমিটারের ওপরে বাতাসের গতিবেগ উঠলে তাকে সুপার সাইক্লোন বলা হয়।