
আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত বিদেশি কোনো নাগরিক আর যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করতে পারবেন না৷ স্থানীয় নির্বাচনের ঠিক আগে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার লক্ষ্যে অভিবাসন নীতিতে নতুন এই বিষয়টি যুক্ত করেছে ব্রিটিশ সরকার৷
আশ্রয়ের আবেদন দ্রুততর সময়ে নিষ্পত্তি করতে কাঠামো সংস্কার করা, আশ্রয় দাবি প্রক্রিয়াকরণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার নিয়েও ভাবছে যুক্তরাজ্য সরকার৷ অভিবাসীদের পারিবারিক জীবনের অধিকারকে আদালত কীভাবে মূল্যায়ন করে সেদিকেও বিশেষ দৃষ্টি রেখেছে যুক্তরাজ্য সরকার৷
বৃহস্পতিবার দেশটিতে স্থানীয় নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে৷ তার আগেই যৌন অপরাধী হিসাবে দোষী সাব্যস্ত কোনো ব্যক্তির আশ্রয় চাওয়ার অধিকারের সুযোগ বন্ধ করে দিল দেশটির সরকার৷
ইংলিশ চ্যানেলে থামছে না অভিবাসীবাহী নৌকা৷ চলতি বছর এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি অভিবাসী ফরাসি উপকূল থেকে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন৷ ফলে, সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চাপ বাড়ছে সরকারের উপর৷ এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার বলেন, ‘যৌন অপরাধী, যারা সমাজের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে তাদের জন্য যুক্তরাজ্যে শরণার্থী সুরক্ষা সুবিধা পাওয়ার সুযোগ থাকা উচিত নয়।’
অভিবাসীদের পারিবারিক জীবনের অধিকার
আশ্রয় ব্যবস্থাকে গতিশীল করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে ব্রিটিশ সরকার৷ আশ্রয় প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কীভাবে যুক্ত করা যায়, সেদিকটা নিয়েও কাজ চলছে৷ কারণ ২০২৪ সালের শেষে দেখা গেছে, প্রাথমিক সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়ে গেছে অন্তত ৯১ হাজার আশ্রয় আবেদন৷
ব্রিটিশ রাজনীতিতে অভিবাসন এখনও প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর একটি৷ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত দেশটির নিট অভিবাসন ছিল রেকর্ড সাত লাখ ২৮ হাজার৷
২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি আশ্রয়প্রার্থী ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্য এসেছেন৷ সংখ্যাটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি৷ তাই প্রত্যবাসন প্রক্রিয়া গতিশীল করতে চাইছে সরকার৷
ইউরোপীয় মানবাধিকার কনভেনশনের আট নম্বর ধারাকে ব্রিটিশ আদালত কীভাবে দেখছে, সেই বিষয়টিও পর্যালোচনা করছে সরকার৷ কারণ, এই ধারাটি পারিবারিক জীবনের অধিকার রক্ষা করে৷ আশ্রয়প্রার্থীরাও তাদের আবেদনে এই প্রসঙ্গটি উল্লখ করেন৷ ব্রিটিশ মন্ত্রীরা বলছেন, আদালতের বর্তমান ব্যাখ্যা বেশ বিস্তৃত এবং অভিবাসীদের কার্যকর অপসারণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে৷
সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এটি পর্যালোচনা করছি৷ কারণ আমরা বিশ্বাস করি, আদালতে এটি যেভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, তাতে সংকট তৈরি হচ্ছে৷’
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস।