আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জো বাইডেন আমলের শতাধিক নির্বাহী আদেশ বাতিলে সই করেছেন তিনি।
শুধু নির্বাহী আদেশই নয়, ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরে যেসব নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, তার মধ্যে একটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি। আরেকটি জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইনসংক্রান্ত।
অভিবাসন–সংক্রান্ত বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের পরপরই নথিপত্রহীন অবৈধ অভিবাসীদের ধারপাকড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে। এর পাশাপাশি সন্দেহভাজন অভিবাসীদের ব্যাপক মাত্রায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরা।
জানা গেছে, অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে চলমান অভিযানে এরই মধ্যে নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (আইস)।
নিউইয়র্কে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আইন কর্মকর্তা খাদিজা মুনতাহা রুবা বলেন, নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে আড্ডা দেওয়া অবস্থায় নথিপত্রহীন চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে আইস। এ সময় তাঁরা সাদাপোশাকে ছিলেন।
এই কঠিন সময়ে অহেতুক পুলিশি অথবা অন্য কোনো বিবাদ অথবা ঝামেলায় না জড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি রাজু মহাজ জানিয়েছেন, ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যাঁরা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ দক্ষিণ আমেরিকার পথ ধরে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ঢুকতেন, সেই পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। সে হিসাবে অভিবাসীরা বিভিন্ন জায়গায় চাকরির ব্যাপক সুযোগ পেয়েছেন। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে সেসব নিয়োগ নির্ধারিত হবে। ফলে ছাটাই হতে পারেন অসংখ্য বাংলাদেশি।
এদিকে নিউইয়র্ক ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সব ভারতীয় নাগরিককে শনাক্ত করতে এবং ফিরিয়ে নিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে ভারত সরকার। নতুন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সহযোগিতা ও বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে নয়াদিল্লির আগ্রহের প্রাথমিক সংকেত হিসেবেই একে দেখা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১৮ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে শনাক্ত করেছে। তাদের ভারতে ফেরত পাঠানো হবে। এই জন্য ভারত যাচাই-বাছাই করে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু করবে। তবে প্রকৃত সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি হতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে কতজন ভারতীয় অবৈধ অভিবাসী রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।