আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে হেনস্তার অভিযোগে প্রবাসী বাদল মির্জার গ্রামের বাড়িতে হামলা করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শনিবার (১৫ জুলাই) সকালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বাদলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
হামলাকারীদের বিষয়ে জানার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে জয়াগ ইউনিয়নের আমকি গ্রামের আমকি মিয়াবাড়িতে (বর্তমান চেয়ারম্যানের বাড়ি) এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বাদল মির্জা ওই বাড়ির আবু বাহারের ছেলে।
জয়াগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আকবর বলেন, ‘বাদল দেশে থাকার সময় রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতো। ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় যায়। আফ্রিকা থেকে আমেরিকা গেয়েছিল। আমেরিকায় গিয়ে নিজের নামের সঙ্গে মির্জা পদবি ব্যবহার করে বাদল মির্জা হয়ে যায়। দেশে তার বাবা-মা ও বড় ভাই হাসানুজ্জামান বিপ্লব থাকে। শামীম ওসমানের ঘটনার প্রতিবাদে সকালে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে শুনেছি। হামলার সময় বাদলের পরিবারের কেউ বাড়িতে ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাদল বিএনপি সমর্থক। রাজমিস্ত্রির কাজ করে পেট চালাতো, সে আর কীসের রাজনীতি করবে। দেশে বিএনপির সমর্থক থেকে বিদেশ গিয়ে বিএনপির নেতা হয়ে গেছে, এমনটা শুনলাম।’https://d02b8ccfb374b2ca865d843a1a6c4bfe.safeframe.googlesyndication.com/safeframe/1-0-40/html/container.html
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১২ জুলাই স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র সফররত শামীম ওসমানের সঙ্গে প্রথমে বাগবিতণ্ডা ও পরে তাকে হেনস্তার চেষ্টা করেন বাদল। সেই ভিডিও-ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনার সঙ্গে সোনাইমুড়ীর বাদল জড়িত—এটি শনাক্ত হওয়ার পর স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর সূত্র ধরে শনিবার সকালে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ৫০-৬০টি মোটরসাইকেল নিয়ে বাদলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। তবে বাদলের পরিবারের কেউ না থাকায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সুজন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে এভাবে অপমান করা মানে আমাদের দলকে অপমান করা। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছি। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে সকালে আমি ও আমাদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল উদ্দিনসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রায় ৫০-৬০টি মোটরসাইকেল নিয়ে প্রথমে বাদলের বাড়ির সড়কে ও সামনে বিক্ষোভ মিছিল করি। পরে প্রায় ৩০ জন নেতাকর্মী তার বাড়িতে প্রবেশ করে। তবে বাদলের ঘরে তালা লাগানো ছিল এবং পরিবারের কেউই ছিল না। পরে লোকজনের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি, আমাদের বিক্ষোভ মিছিল দেখে তারা ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। নেতা-কর্মীরা কয়েকটি পটকা ফাটিয়েছে, এর বাইরে আর কিছু হয়নি।’
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক জিয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বাদলদের ঘরের বাইরে লাঠি দিয়ে আঘাত আর কিছু পটকার বিস্ফোরণ হয়েছে বলে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়নি।’