আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ আসন্ন ইদুল ফিতরের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে ঘরমুখী মানুষের যাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবার বিশেষ করে কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট জালিয়াতির বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাধারণ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট পায় না, অথচ বেশি দামে খোলা বাজারে ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় বলে অভিযোগ আছে।
শুক্রবার দুপুরে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, প্রতিবারের মত এবারও কমলাপুর স্টেশনে থাকছে র্যাব-৩ এর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এরই মধ্যে র্যাবের পক্ষ থেকে কন্টল রুম চালু করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে সবসময় দায়িত্ব পালন করা শুরু করেছে র্যাবের একটি টিম। সাধারণ মানুষ ঈদ উদযাপন করে ঢাকায় ফিরে আসা পর্যন্ত এই নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে।
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। তবে এবার আর সেই সুযোগ পাবে না বলে জানান অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। করোনা পরবর্তী সময়ে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের মাত্রাতিরিক্ত চাপ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে করে টিকিট কালোবাজারিরাও সর্তক থাকবে। তবে টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে র্যাবের পক্ষ থেকে বিশেষব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে কোনো প্রকার টিকিট জালিয়াতি হবে না।
ইদের জন্য ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে আগামীকাল শনিবার (২৩ এপ্রিল) থেকে। পাঁচ দিনব্যাপী টিকিট বিক্রি চলবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে ভোগান্তি কমাতে এবার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। টিকিটি কাটতে যাত্রীর চাপ কমাতে কমলাপুর রেলস্টেশন ছাড়াও ঢাকা শহরের আরো চারটি স্টেশন থেকে টিকিট বিক্রি করা হবে। এছাড়া একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন। তবে এবার টিকিট কেনার সময় এনআইডি কার্ড বা জন্মসনদ অবশ্যই কাউন্টারে দেখাতে হবে যাত্রীদের।
ঈদে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবে ৩৬ জোড়া ট্রেন। যার আসন সংখ্যা ২৬ হাজার ৬৭২টি। এই সংখ্যক টিকিটের অর্ধেক টিকিট কাউন্টার থেকে আর অর্ধেক অনলাইনে বিক্রি হবে। এছাড়া ঢাকা থেকে দুটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলবে। যাতে আসন সংখ্যা এক হাজার ৫০০টি। এই টিকিট কাউন্টার থেকে বিক্রি হবে।
টিকিট কালোবাজারী বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল হক ঢাকাটাইমসকে বলেন, এবার একটি টিকিটও কালোবাজারি হবে না। পুলিশের পক্ষ থেকে টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া স্টেশনের টিটি, টিএস, আনসার ও পুলিশের সদস্যসহ সবাইকে সর্তক করা হয়েছে। কোনো প্রকার টিকিট কালোবাজারি হবে না।
মোবাইল কোর্ট চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে মাজহারুল হক বলেন, আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় মোবাইল কোর্ট চালানো সম্ভব না। তবে যদি কোনো সংস্থার পক্ষ থেকে টিকিট কালোবাজারির বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট চালায়, তাহলে কমলাপুর রেলওয়ে থানার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
কমলাপুর স্টেশনের নিরাপত্তাসহ টিকিট কালোবাজারি বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার ঢাকাটাইমসকে বলেন, এবার ঈদে টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে কয়েকবার বৈঠকে বসা হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে স্পাষ্ট বলা হয়েছে টিকিট কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। এছাড়া রেলের স্টাফদেরও এ বিষয়ে সর্তক করা হয়েছে, যাতে কোনো প্রকার কালোবাজারি না হয়।
স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, এবার কমলাপুর ছাড়াও আরও চার জায়গা থেকে ঈদের জন্য ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে। সব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ রেলের স্টাফদেরও সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।