রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জরুরি আন্তর্জাতিক সম্মেলন চান ড. ইউনূস

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ‘নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ’ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি ‘জরুরি মনোযোগ’ দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ড. ইউনূস বলেন, রাখাইন রাজ্য (মিয়ানমার) বা গাজায় যারা অব্যাহতভাবে নিপীড়ন, উৎখাত ও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন, আমরা তাদের উপেক্ষা করতে পারি না।

সম্প্রতি নতুন করে আসা ৪০ হাজার রোহিঙ্গাসহ বাংলাদেশে বর্তমানে ১৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ বেসামরিক শিশু, নারী ও পুরুষদের রক্ষায় জাতিসংঘের চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায়। একইসঙ্গে গাজা ও লেবানন এবং বৃহত্তর অঞ্চলে শান্তি নিশ্চিতে সংলাপেরও তাগিদ দেয়।

তিনি বলেন, এই দিনে বাংলাদেশ তার অভিন্ন স্বার্থে আরও ন্যায়সংগত ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তুলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে। একইসঙ্গে সবার জন্য মর্যাদা ও অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে।

জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘ পরিবারের সব নারী ও পুরুষকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং জাতিসংঘ সনদের আদর্শের প্রতি তার (বাংলাদেশের) অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। 

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আট দশক ধরে জাতিসংঘ শান্তি প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার রক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নে কাজ করছে।

জলবায়ু পরিবর্তন, সংঘাত, বৈষম্যের মতো নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের সময়ে জাতিসংঘের ম্যান্ডেট দেওয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দায়িত্বশীল ব্যবহার এবং দেশজুড়ে প্রযুক্তির লাভজনক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার মতো উদীয়মান বিষয়গুলো সবার জন্য শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ ব্যবস্থার বর্ধিত ভূমিকার আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তৃতীয় বৃহত্তম শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘ ব্যবস্থার সঙ্গে সক্রিয় অংশীদারিত্বে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

তিনি আরও বলেন, শান্তি, ন্যায়বিচার ও সমতার প্রতি আমাদের অঙ্গীকার আমাদের জাতীয় মূল্যবোধের মধ্যে নিহিত। ন্যায়বিচারের জন্য আমাদের জনগণের চলমান অনুসন্ধানে যা দেখা গেছে। অতি সম্প্রতি আমাদের ছাত্র ও যুবকদের নেতৃত্বে গণবিপ্লবে প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জনগণ হিসেবে তারা বহুপাক্ষিকতার প্রতি দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। ‘টেকসই উন্নয়ন হোক বা বাণিজ্য কিংবা জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, বাংলাদেশ ও গ্লোবাল সাউথের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য নিয়মভিত্তিক বহুপক্ষীয় ব্যবস্থা প্রয়োজন।  

উল্লেখ্য, ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ সনদ কার্যকর হওয়ার বার্ষিকী হিসেবে ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস পালন করা হয়। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যসহ সনদে স্বাক্ষরকারীদের সংখ্যাগরিষ্ঠের দ্বারা এই প্রতিষ্ঠাকালীন নথি অনুমোদনের মাধ্যমে এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে অস্তিত্ব লাভ করে জাতিসংঘ।

SHARE THIS ARTICLE