
আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ২৬শে মার্চ ২০২২, শনিবার ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার একান্নতম বর্ষপূর্তি। দিবসটিকে প্রবাসী বাংলাদেশীরা এবারই প্রথম ঐতিহাসিক করে তুললেন, লিমেরিক কাউন্টী কাউন্সিলের নির্বাচিত কাউন্সিলর আজাদ তালুকদারের ব্যাতিক্রমে উদ্যোগে। আজাদ তালুকদারের অনন্য প্রয়াসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে প্রথমবারের মত আয়ারল্যান্ডের লিমেরিক কাউন্টী কাউন্সিলকে মনোরম আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়। আলোক সজ্জা ছিল মনোহর এবং চিত্তাকর্ষক।
শ্যানন নদী এবং এবে নদীর মোহনায়, তরঙ্গায়িত নদীর পাশে অবস্থিত কাউন্টী হলের নাগরিক বিল্ডিং এর আলোকসজ্জা সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করে। এই বিশেষ মুহূর্তকে স্মরণীয় করার জন্য লিমেরিকে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী শিশু, কিশোর, নারী, পুরুষ সহ অন্যান্য কাউন্টী থেকে আগত বাংলাদেশীরা লাল সবুজের পতাকা হাতে এবং লাল সবুজে রঞ্জিত পোশাকে সমবেত হন কাউন্টি কাউন্সিলের আলোকিত ভবনে। ভবনের পাশেই প্রবাহিত নদীর তরঙ্গের শব্দের সাথে কেউ কেউ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের শব্দের সামঞ্জস্য খোঁজার চেষ্টা করেন। এ যেন লিমেরিকে থেকেই বাঙ্গালদেশে থাকার অনুভূতি।
কাউন্টী হল নিমেষেই রূপান্তরিত হয় এক খন্ড বাংলাদেশে। সমবেত বাংলাদেশীরা সকলে মিলে গেয়ে উঠেন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি”। আনন্দে উদ্বেলিত প্রবাসীরা মেতে উঠেন ফটো সেশনে। সংবাদ কর্মীরা ভিডিও এবং স্থির চিত্র ধারণ করেন। আইরিশ বাংলা টাইমসের পক্ষ থেকে গোলাম ফারুক নিউটন এই আনন্দ সমাগম লাইভ সম্প্রচার করেন এবং অনেকের অনুভূতিগুলোকে তরঙ্গায়িত করে ফেইসবুকে প্রকাশিত করে দেন জীবন্ত।
শিশু কিশোরদের জন্য এই সন্ধ্যা ছিল ব্যাতিক্রমী। প্রবাসে থেকেও তারা জানতে পেরেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা কি এবং তার গুরুত্ব কতটুকু। আনুষ্ঠিকতার কোন বাস্তব পরিকল্পনা না থাকলেও, সংবাদকর্মীদের উদ্যোগে কিছু কথামালা ভিডিও করা হয়েছে। কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার অনুভূতির প্রকাশে তার আনন্দের কথা প্রকাশ করে বলেন, তিনি আনন্দে আপ্লুত যে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে আজ তিনি প্রবাসের মাটিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে উজ্জীবিত করতে একটি ভূমিকা রাখতে পেরেছেন। তিনি সকলকে জানান যে, আজ তার সহধর্মিনী শাহানা আকতারের জন্ম দিবস। তিনি তার সুযোগ্য সহধর্মিনীকে পাশে নিয়ে ছবি তুলেন আর উপস্থিত সকলেই করতালিতে এবং সংগীতে তাকে জন্ম দিবসের শুভেচ্ছা জানান।
ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার বলেন, তিনি আজ গর্বিত এবং আনন্দে আপ্লুত। বিশেষ করে শিশু, কিশোর আর মহিলাদের আনন্দের সাথে অংশগ্রহণ করে তিনি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেছেন। তিনি বলেন আজকে প্রবাসের মাটিতে আরেকটি ইতিহাস রচিত হলো। আগামী দিনে সকলে মিলে এই আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবার প্রয়াস অব্যাহত রাখার জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
কিলকেনি থেকে আগত জনাব সাইয়েদ মুস্তাফিজুর রহমান, এই ঐতিহাসিক দিবসে জনাব আজাদ তালুকদারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি এই গৌরবোজ্জ্বল দিনে সকলের পাশে থাকতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছেন বলে জানান।
লিমেরিক থেকে জনাব মনিরুল ইসলাম বলেন, তিনি তার সমগ্র পরিবার নিয়ে আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পূর্তির এই সমাবেশে আনন্দে শরিক হয়েছেন। তিনি সকলের সুস্বাস্থ্য এবং অগ্রগতি কামনা করেন।
কাউন্টী নাভান থেকে আগত জনাব মোশাররফ হোসেন বলেন, আজ তিনি প্রথমবারের মত প্রবাসে স্বাধীনতার আনন্দ উপভোগ করছেন। এই সুযোগ করে দেবার জন্য তিনি আজাদ তালুকদারকে ধন্যবাদ জানান।
লিমেরিক থেকে জনাব আনোয়ারুল হক উপস্থিত ছিলেন তার পরিবার নিয়ে। ৯ মাসের শিশুকে নিয়ে তিনিও ছিলেন আনন্দে আপ্লুত। তিনি সকলের সাথে আজকের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে তার আনন্দের কথা অবহিত করেন।
কাউন্টী গলওয়ে থেকে আগত শিবলি চৌধুরী সকলের এই আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়ে নূতন করে একটি ইতিবাচক সমাজ গড়ার কথা প্রত্যয়ে ব্যাক্ত করেন।
গলওয়ে থেকে জনাব সৈয়দ জুয়েল উপস্থিত থেকে স্থির চিত্র এবং ভিডিও ধারণে সার্বক্ষনিক ব্যাস্ততায় ছিলেন।
লিমেরিক থেকে বিশিষ্ট লিখক জনাব সাজেদুল ইসলাম রূনেল তার পরিবার নিয়ে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, আজকের দিনটি তার জন্যে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
কর্ক থেকে আগত ডা. মুসাব্বির হোসাইন উল্লসিত কণ্ঠে জানান, আজকে এই গৌরবান্বিত দিনে প্রবাসের মাটিতে সকলের সাথে আনন্দ ভাগ্য করে নিতে পেরে তিনি আজ আনন্দিত। কর্ক থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন জনাব হাসান সরকার ঝিনুক, তিনি সকলের সাথে স্বাধীনতার আনন্দ উপভোগ করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেছেন বলে জানান।
লিমেরিক থেকে শম্পা লিলি সকলকে নিয়ে “রক্ত লাল রক্ত লাল” গানটি সমবেত কণ্ঠে গেয়ে উঠেন। স্বাধীনতা দিবসের প্রাণ ভরে যারা উপভোগ করেছেন তাদের কিছু নাম আমরা এখানে প্রকাশ করলাম। এই অঙ্গনে মহিলাদের মধ্যে ছিলেন, লিলি শম্পা, মুক্তা মতিন, তফুরা খাতুন, শিরিন আখতার, নদী চৌধুরী, লুবনা আকতার, মনসুরা আরেফিন, আইনুন নাহার, আয়েশা আখতার, কলই, রাখি, সালমা আনিকা, নীলিমা রহমান, এশা চৌধুরী, সাজাং সীমা, হাসি, লুনা কামাল, সেরিনা সোমা, সাইয়েদা তানজিলা, তাসলিমা সরকার, ফারজানা, শোভনি, আয়েশা এবং অন্যান্য।
শিশু কিশোরদের মধ্যে তাশফিয়া, আমিরাহ, ফারজানা, প্রান্ত, মাহিম, রাসেল, তানিশা, টিনা, মিনা, রাহুল, সাইয়েরা, সাজফা, রামিন, আনহা, জাসমির, জীহান, জান্নাত, মেহরাজ, মিনহাজ, রাহুল, মারিয়া, আজরা, আরসালান, নামিরা, হুজাইফা, তাফু, উম্মে, অলি, মাহিমা, ইউয়ান, জাফিরা, রাইসিয়া, রায়িদ, আহনাফ, জয়া, তায়িফ এবং আরও অনেকে।
পুরুষদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ফকরুজ্জামান মিলাদুন নোভ, চঞ্চল তালুকদার, মান্নান সরকার, সাইয়েদ মনিরুল ইসলাম লিটন, ফিরোজ আহমেদ, আতিকুর রহমান, ওয়াসিম আকরাম রফিক, আকতার হোসেন, গোলাম মোস্তাফা, মিজানুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, শামিম আহমেদ, শাকিল আহমেদ, সাজ্জাত হোসেন এবং আরও অনেকে।
বাংলাদেশের সুনাম আরও বর্ধিত হোক, জনজীবন স্পন্দিত হোক, স্বাধীনতা নন্দিত হোক এই ছিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের একান্ত কামনা। আগামী দিনে স্বাধীনতা দিবস আরও উজ্জীবিত হোক এই আমাদের কামনা।।