এ,কে,আজাদ, আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ
দিনগুলো যেমনই হোক, ঠিকই যায় কেটে
তবে বলো লাভ কি পুরোনো স্মৃতি ঘেঁটে?
এই বছরে পূর্ণ হোক তোমার সকল আশা,
নতুন বছরের থেকে এটাইআমার প্রত্যাশা..
ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২ টা বাজতে না বাজতেই শুরু হয়ে যাই সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানোর পালা। আট থেকে আশি সকলেই হোয়াটস্যাপ ও ফেসবুকে একে অপরকে নববর্ষের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানোতে মেতে ওঠে।
আজ শুক্রবার, পহেলা বৈশাখ। শুভ নববর্ষ ১৪৩০। জীর্ণ পুরাতন সবকিছু ভেসে যাক, ‘মুছে যাক গ্লানি’ এভাবে বিদায়ী সূর্যের কাছে এ আহ্বান জানায় বাঙালি। পহেলা বৈশাখ আমাদের সব সংকীর্ণতা, কূপমণ্ডূকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবনব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মনের ভেতরের সব ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক সম্মানিত জাতি।
পহেলা বৈশাখ উদযাপন কিংবা চৈত্র মাসের শেষ দিন চৈত্রসংক্রান্তি, বসন্তবরণ, নবান্ন, হালখাতা উৎসব ইত্যাদি আমাদের ঋতুর সঙ্গে জড়িত। আমাদের ঐতিহ্য ঋতুকেন্দ্রিক। ইউরোপ বা আমেরিকায় চার ঋতু। আমরা পেয়েছি ছয় ঋতু। ষড়ঋতুর বাংলাদেশ। ষড়ঋতু এই ভূখণ্ডের নিজস্ব। পুরো ভারত অঞ্চলে এটা আছে এবং সবাই উদযাপন করে।
বাংলা সন উদ্ভাবন করেছিলেন পন্ডিত জ্যোতির্বিজ্ঞানী আমীর ফতেহ উল্লাহ সিরাজী। মুঘল সম্রাট আকবর তাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ১৫৮৪ খৃষ্টাব্দে। আমীর ফতেহ উল্লাহ সেকালে প্রচলিত ও অপ্রচলিত বিভিন্ন পঞ্জিকা তুলনামূলক পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, হিজরী চন্দ্র সনকেই সৌর গণনায় আনেন। হিজরী সনের বছর ৩৫৪ দিনের স্থলে ৩৬৫ দিনে এনে যে নতুন সন উদ্বাবন করেছিলেন, সেটিই বাংলা সন। ১৫৮৫ খৃষ্টাব্দে বাদশাহ আকবর এটি চালু করেছিলেন।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীসহ বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। নববর্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের, জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি ও দলের মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
আজ সরকারি ছুটি। বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ উদযাপনে রাজধানীর সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নববর্ষকে বরণ করে নেওয়ার জন্য শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা, গান, আবৃত্তি, সেমিনার, নাটক প্রদর্শনী ও খাবার বিতরণ। বিটিভিসহ বেসরকারি টিভিতে দিনটি উদযাপনের জন্য নানা অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করা হবে। এছাড়া, ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করবে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করবে। ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে। পাশাপাশি শিল্পকলা একাডেমি, সুরের ধারা, বাংলা একাডেমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন রাজধানীতে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।
আইরিশ বাংলাপোষ্ট পত্রিকার পক্ষ থেকে সবাইকে নতুন বছরের অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এই বছর আপনার জীবনে সুখী ও সমৃদ্ধ ভরে উঠুক। আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে শুভ নববর্ষ!