আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক থাকা বন্ধু এই দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে নয়টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। বৈঠক বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হয়ে দেড় ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য ভার্চুয়াল এই বৈঠকে বিভিন্ন খাতের নয়টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এ বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৬৫ সালের আগের পুরনো চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল সংযোগটি সুদীর্ঘ ৫৫ বছর পর পুনরায় উদ্বোধন করা হবে। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় এটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানান, এই বৈঠককালে ঢাকা পানি বণ্টন, কোভিড-১৯ সহযোগিতা, সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্য ঘাটতি, যোগাযোগ, বিদ্যুত ও রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ প্রধান সব দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলো তুলে ধরবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আজকের বৈঠকে দুদেশের প্রবাহমান অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টনের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। ঢাকা দুদেশের মধ্যে বয়ে চলা প্রধান সাতটি নদী মনু, মুহুরি, গোমতি, ধরলা, দুধকুমার, ফেনী ও তিস্তার পানি বণ্টনের ইস্যুটিকে একটি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার প্রস্তাব দেবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শীঘ্রই, এমনকি যদি সম্ভব হয় আগামী মাসেই এই অভিন্ন সাতটি নদীর পানি বণ্টন ইস্যুর সমাধানের লক্ষ্যে একটি কাঠামো গড়ে তুলতে মন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক আয়োজনের প্রস্তাব রাখা হবে। সূত্রটি জানায়, বহুল আলোচিত তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের চূড়ান্ত চুক্তি হয়েছে, এখন শুধু তা বাস্তবায়নের অপেক্ষা।
জানা গেছে, কোভিড-১৯ মহামারী ইস্যুতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যের বৈঠকে প্রধান এজেন্ডা হিসেবে স্থান পেতে পারে। ভারত সর্বপ্রথম বাংলাদেশকেই কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে বলে ইতোমধ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং বৈঠকে বিষয়টি আরও জোরালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে ঢাকা ভারতকে জাতিসংঘে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাবে। এ বছর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য পদের জন্য বাংলাদেশ ভারতকে সমর্থন দিয়েছে। বৈঠকে বলা হবে, যদি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান না হয় তবে গোটা অঞ্চলেই অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে, যা মিয়ানমারে ভারতের বিনিয়োগকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্তে হত্যা বন্ধে ভারতের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হবে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আজকের বৈঠক থেকে যৌথভাবে ‘স্বাধীনতা সড়ক’ ঘোষণা দেবেন। সড়কটি বাংলাদেশের পশ্চিম সীমান্তে মেহেরপুরের মুজিবনগরে জিরো লাইনে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত বিদ্যমান। সড়কটি যে স্থানে অবস্থিত সেখানে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নেয়। সড়কটি দুদেশের জনগণের জন্য খুলে দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত করলেন ॥ খবর বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পৃথক স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত করেছেন। তিনি বুধবার বিকেলে তার সরকারী বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ ডাকঘর কর্তৃক ইস্যু করা স্মারক ডাক সামগ্রী অবমুক্ত করেন। ডাকটিকেটগুলো রাজধানীর জিপিও’র ফিলালেটিক ব্যুরো থেকে বিক্রয় করা হবে এবং পরে এগুলো অন্যান্য জিপিও বা ডাকঘরে পাওয়া যাবে। অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার উপস্থিত ছিলেন।