আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ আজ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ভোট। সারাদেশের দৃষ্টি এখন নারায়ণগঞ্জে। ভোটের আগে এখন চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। ভোট সুষ্ঠ হওয়া নিয়েও আছে দ্বিধা-সংশয়। নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে অংশ নেয়া সেলিনা হায়াৎ আইভীকে এগিয়ে রাখলেও, তৈমুর আলম খানের জনপ্রিয়তাকেও কোনো ভাবে এড়িয়ে যাচ্ছেন না কেউই। অনেকদিন পর কোনো নির্বাচনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলো আওয়ামী লীগ।
নারায়ণগঞ্জের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবার মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনে মোট প্রার্থী সংখ্যা ১৮৯ জন। এদের মধ্যে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াত আইভী (নৌকা), খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন (দেয়ালঘড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার (হাতি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া)।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ীর সংখ্যাই বেশি। এবার উচ্চশিক্ষিত প্রার্থীদেরর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে বন্দরনগরীর দুই মেয়র প্রার্থীর দিকেই চোখ সকলের।
ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি, নারী ভোটারদের কাছে জনপ্রিয়তা এবং প্রতিপক্ষ শিবিরে সমন্বয়হীনতার বিপরীতে দলীয়প্রধানের নি:শর্ত সমর্থন- এই তিন নিয়ামকে ভর করে নৌকার আইভী রহমান এগিয়ে আছেন বলে মনে করেন বন্দরবাসী। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের কারণেই নিজ দল থেকে অব্যাহতি পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারের প্রচারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগ দেওয়ায় সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ‘তৈমুর ম্যাজিক’ বলে আখ্যা পেয়েছে।
নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদ জানিয়েছেন তৈমুর আলম খন্দকার ও সেলিনা হায়াত আইভী।
জয়ের আশাবাদ জানিয়ে হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার পূর্বপশ্চিমকে বলেন, আমি শুধু চাই একটি সুষ্ঠু ভোট। জনগণ ভোট দিতে পারলে আমি বড় ব্যবধানে জয় পাব। যে কোনো মূল্যে আমি শেষমুহূর্ত পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকতে চাই।
নৌকার মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভী পূর্বপশ্চিমকে বলেন, আমি খুবই সাধারণভাবে জীবনযাপন করা গরীব ঘরের মানুষ। আমার ব্যক্তিগত কোনো চাওয়াপাওয়া নাই। আমি চাই নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন। নারায়ণগঞ্জের মানুষ গত দুই মেয়াদে আমার কাজ দেখেছেন। তারা চান উন্নয়নে গতি অব্যাহত থাকুক। তাই এবারও তাদের ভোটে আমি জয়ী হবো বলো আশা রাখি।
সিটি করপোরেশনে ২৭টি ওয়ার্ডের ১৯২টি কেন্দ্রের এক হাজার ৩৩৩ ভোটকক্ষে পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে। এ জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে দুই হাজার ৯১২টি ইভিএম মেশিন। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রয়োজনের তুলনায় দেড়গুণ ইভিএম রাখা হবে। এরই মধ্যেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে পৌঁছানো হয়েছে নির্বাচনী সামগ্রী। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচনে সহিংসতা রোধে ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।