শ্রমবাজারে অশনিসংকেত।

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ পৃথিবীর ১৭০ দেশে এক কোটি ২০ লাখের মতো বাংলাদেশি কাজ করেন। এর মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশেরই কর্মসংস্থান মধ্যপ্রাচ্যে। শ্রমবাজারের এ বিশালসংখ্যক শ্রমিকের ওপর করোনা আঘাত হেনেছে। এ ছাড়া জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে প্রভাব পড়েছে। করোনার বাংলাদেশে ভুয়া টেস্টের কারণে ভাবমূর্তি ক্ষুণ হওয়ায় শ্রমবাজার অনিশ্চয়তায় পড়েছে। এ অবস্থায় চাকরিচ্যুত কিংবা অনেকটা বাধ্য হয়ে প্রতিদিন দেশে ফেরত আসছেন প্রবাসী শ্রমিকরা।

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল শুরু হলে বিপুলসংখ্যক শ্রমিককে দেশে ফিরতে হতে পারে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে কাজ নিয়ে বিদেশ গেছেন ৭ লাখের মতো কর্মী। এর মধ্যে শুধু সৌদি আরবেই গেছেন ৪ লাখ। করোনা সংকটে চাকরি হারানো প্রবাসী ছাড়াও অবৈধভাবে বসবাসকারী বিপুলসংখ্যক কর্মীর দেশে ফেরার আশঙ্কা করছে সরকার। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য থেকেই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি ফিরে আসতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, ওমান, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, ব্রুনাই থেকে কাজ হারিয়ে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী দেশে ফিরে আসতে পারেন। ফিরতে হতে পারে ইউরোপ, আমেরিকা থেকেও। শ্রমিক ফিরছেন মালদ্বীপ, আফ্রিকা থেকেও। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) তথ্যমতে, প্রতি মাসে গড়ে ৬০-৬৫ হাজার কর্মী বিদেশে যান। সে হিসাবে বছরে সাত থেকে আট লাখ কর্মী বিদেশে যান। বর্তমানে মহামারীর কারণে গত মার্চ মাস পর্যন্ত ১ লাখ ৫৩ হাজার কর্মীর ইমিগ্রেশন হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১ লাখের মতো কর্মী বিদেশে যেতে পেরেছেন।

এ ছাড়া ১ লাখ শ্রমিকের ভিসা হলেও করোনার কারণে যেতে পারেননি। তাদের যাওয়া এখন অনিশ্চিত। তা ছাড়া অর্থপাচার ও মানবপাচার মামলায় এমপি কাজী শহীদ পাপুল কুয়েতে গ্রেপ্তার, করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট, ভিয়েতনামের ঘটনার কারণে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় খুব শিগগির শ্রমিকরা বিদেশ যেতে পারবে বলে মনে করেন না সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, করোনার কারণে ১০ লাখেরও বেশি শ্রমিককে দেশে ফিরতে হতে পারে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে বিকল্প শ্রমবাজার খুঁজে বের করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জানানো হয়েছে। তাই বিকল্প শ্রমবাজারের অনুসন্ধানসহ কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো যেন শ্রমিকদের ফেরত না পাঠায় তার উদ্যোগ নিতে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

SHARE THIS ARTICLE