আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ইফতার রোজার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নাত। রোজাদার সূর্যাস্তের পর পানাহারের মাধ্যমে রোজা ভাঙে; তার এই পানাহারকে ইফতার বলা হয়। রমজানের বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে আল্লাহ বান্দার দোয়া কবুল করেন এবং পাপ মার্জনা করেন। যেমন- ইফতারের আগমুহূর্ত। এই সময়গুলোতে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি প্রার্থনা করা এবং অতীত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা আবশ্যক।
সূর্যের গোলক সম্পূর্ণ অদৃশ্য হলেই ইফতারের সময় হয়ে যায়। আর ইফতারের সময় হলে বিলম্ব না করে দ্রুত ইফতার করাটা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যদি অহেতুক বিলম্ব করে অথবা অন্ধকার হওয়ার অপেক্ষা করে অথবা আরো অধিক সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে পানাহার বর্জনের সময়কাল বাড়ানোর জন্য ইফতারকে বিলম্বিত করে তবে সে গোনাহগার হবে।
হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেছেন, বান্দা রোজা রাখে আমার জন্য। সে নিজের প্রবৃত্তির চাহিদা ও পানাহার আমার জন্য বর্জন করে। তাই এর পুরস্কার আমি নিজে দেব। রোজা হলো জাহান্নামের শাস্তির ঢাল। রোজাদারের জন্য দু’টি খুশি। প্রথমটি ইফতারের খুশি। দ্বিতীয়টি আমার সাথে সাক্ষাতের খুশি। (সহিহ বোখারি: ৭৪৯২)
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দ্বীন ততোদিন পর্যন্ত ঠিক থাকবে, যতদিন পর্যন্ত মানুষ তাড়াতাড়ি ইফতার করবে। কেননা, ইহুদি-খ্রিস্টানরা বিলম্বে ইফতার করে। (সুনানে আবু দাউদ: ২৩৫৫) মানুষ কল্যাণের ওপর থাকবে যতক্ষণ তারা দ্রুত ইফতার করবে। (সহিহ বোখারি: ১৯৫৭)
হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের নামাজ পড়ার আগে পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি পাকা খেজুর না থাকতো তাহলে শুকনো খেজুর দিয়ে। আর যদি তা-ও না থাকতো তাহলে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে ইফতার করতেন। (সুনানে আবু দাউদ: ২৩৫৮)
ইফতারের পূর্বের সময়টা অতি মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ এক সময়। এটা দোয়া কবুলের মোবারক সময়। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ন্যায়পরায়ণ শাসক, রোজাদার যখন সে ইফতার করে ও নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া। (ইবনে মাজাহ: ১৭৫২)
তিনি আরো বলেছেন, ইফতারের সময় রোজাদের ন্যূনতম একটি দোয়া অবশ্যই কবুল হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৭৫৩)
তাই ইফতারে বেশ আগে থেকে ইফতারি নিয়ে বসে দোয়া-মোনাজাতে মশগুল থাকা দরকার। ইফতারির আয়োজনে ব্যস্ত থেকে অনেকেই এ মোবারক সময়ের দোয়া থেকে নিজেকে বঞ্চিত করে। তাই বাড়ির কর্তাদের কর্তব্য বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া।