আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশ নিতে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে তাঁর পরিবার। তাঁর জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সাতজন চিকিৎসকসহ অন্য সফরসঙ্গীদের ভিসাপ্রক্রিয়াও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রার কথা থাকলেও তা কয়েক দিন পেছাতে পারে। এরই মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনসহ সফরসঙ্গীরা যুক্তরাজ্যের ভিসা পেয়ে গেছেন।তবে এখনো যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাপ্রক্রিয়া চলমান। জানা গেছে, লং ডিসট্যান্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে প্রথমে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে নেওয়া হবে। সেখান থেকে তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কিংবা জার্মানি যেতে পারেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা থেকে খালেদা জিয়া প্রথমে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যাবেন। সেখান থেকে পরে তাঁকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কিংবা জার্মানির কোনো মাল্টিডিসিপ্লিনারি হেলথ সেন্টারে নেওয়া হতে পারে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনকে সর্বোচ্চ উন্নত চিকিৎসা দিতে সব ধরনের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি, দ্রুত তাঁকে বিদেশ নেওয়া সম্ভব হবে।’
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ওই বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপিপ্রধানের।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। ওই বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন তিনি। তখন থেকে সেখানেই আছেন।
এর পর থেকে পরিবারের আবেদনে প্রতি ছয় মাস পরপর বিএনপি নেত্রীর মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে আসছিল বিগত সরকার। সাময়িক মুক্তির পর তাঁকে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তাঁকে বিদেশে পাঠানোর জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার আবেদন করা হলেও বারবার তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিনই রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বিশেষ ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে সর্বশেষ ২১ আগস্ট গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি।