আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ সিলেটে হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেড়েছে অসহনীয় পর্যায়ে। গত তিনদিনের ব্যবধানে ৬৫ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে দুবার। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সিলেট নগরে সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এর তিনদিন আগে সোমবার (১১ অক্টোবর) একই পরিমাণ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ১৯৫৬ সালের পর সিলেটে এটি সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এটিই ছিল গত কয়েক বছরের মধ্যে সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, সিলেটে এর আগে এতো বেশি তাপমাত্রা কখনো হয়নি। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত কয়েক বছর থেকে ক্রমেই অক্টোবর মাসে সিলেটের তাপমাত্রা বাড়ছে। মূলত নগরায়ণ, গাছপালা ও সবুজায়ণ কমে যাওয়ায় এমনটি হতে পারে বলে আমার ধারণা।
তিনি বলেন, সিলেটে একসময় প্রচুর টিলা ছিল। এখন খুব বেশি নেই। এটিও একটি কারণ হতে পারে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার।
‘চলতি মাসের প্রথম দিকে বৃষ্টি হলেও তা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কম হয়েছে। আগামী ১৮ ও ১৯ অক্টোবরের আগে সিলেটে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও কম’—যোগ করেন আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী।
এদিকে চলতি বছরের গত ১৫ এপ্রিল বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নাল সায়েন্স ডিরেক্ট ‘সার্ফেস আরবান হিট আইসল্যান্ড ইনটেনসিটি ইন ফাইভ মেজর সিটিস অব বাংলাদেশ: প্যাটার্নস, ড্রাইভার্স অ্যান্ড ট্রোন্ডস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০ বছর অর্থাৎ দুই দশকে সিলেটের তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের পরিচালক হিমাংশু লাল রায় বলেন, গরমের সঙ্গে সঙ্গে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে যাওয়া অর্থাৎ শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) বা তার চেয়ে বেশি হওয়া হিট স্ট্রোকের অন্যতম লক্ষণ। এছাড়া আরও কিছু লক্ষণ আছে। তবে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে গরমের সময় শরীরকে পানিশূন্য হতে দেওয়া যাবে না বলে পরামর্শ দেন তিনি। ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, শরীরে পানির পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে বারবার সুপেয় পানি পান করতে হবে।
নগরের বাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আবিদ আলী বলেন, সিলেটে আজ খুবই গরম পড়েছে। দুপুরে একটা জরুরি কাজে আম্বরখানা এলাকায় গিয়েছিলাম। রোদের তীব্রতায় শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে গেছে।