আইরিশ বাংলা পোস্ট ডেস্কঃ শারজাহ স্টেডিয়ামে গতকাল রোববার সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। ৭ বল বাকি থাকতে, শ্রীলংকা সহজেই বাংলাদেশের দেয়া টার্গেট ১৭১ রান পেরিয়ে যায়।
শ্রীলংকা দলের চারিথ আসালঙ্কা (৮০*) এবং ভানুকা রাজাপাকসের (৫৩) দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সাহায্যে শ্রীলঙ্কা শারজায় ২০২১ সালের টি -টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সুপার ১২ ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দিলো। ম্যাচের দশম ওভারে শ্রীলঙ্কা ৭৯/৪ হয়ে যাওয়ার পর পঞ্চম উইকেটে আসালঙ্কা এবং রাজাপক্ষ ৭৬ রান যোগ করেন। এর আগে, আসালঙ্কা ওপেনার পথুম নিসঙ্কার (২৪) সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়েন কিন্তু পরে সাকিব আল হাসানের ওভারে দুই উইকেট নিলে শ্রীলঙ্কার ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। এর আগে বাংলাদেশ ওপেনার মোহাম্মদ নাইম (৬২) এবং মুশফিকুর রহিমের (৫৭) সাহায্যে প্রথম ব্যাট করার সময় বাংলাদেশ দল ১৭১ রান করেছিলো। শ্রীলঙ্কার হয়ে চামিকা করুণারত্নে, বিনুয়ারা ফার্নান্দো এবং লাহিরু ফার্নান্দো একটি করে উইকেট পান।
বাংলাদেশে দল সাকিবের প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে প্রাপ্তি ছিল ২ উইকেট। পঞ্চম ওভারে প্রথম বোলিংয়ে আসেন বাঁহাতি এই স্পিনার। আঁটসাঁট বোলিংয়ে দেন কেবল মাত্র ৫ রান। নবম ওভারে আবার যখন ফেরেন আক্রমণে, তখন চারিথ আসালাঙ্কা ও পাথুম নিসানকার জুটিতে এগিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। দারুণ এক ওভারে স্রেফ ১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে আবার ম্যাচে ফেরান সাকিব। পরের ওভারে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন এনে দেন আরেকটি উইকেট। দশম ওভারে ৭৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন পথহারা শ্রীলঙ্কা।
লঙ্কানদের আরও চেপে ধরার বদলে তখন মূল বোলারদের সরিয়ে নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। দুই বাঁহাতি চারিথ আসালাঙ্কা ও ভানুকা রাজাপাকসার জন্য দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণে আনা হয় অফ স্পিন। অধিনায়ক নিজে বল তুলে নেন হাতে, সঙ্গে আফিফ হোসেন।
অধিনায়ক করেন দুই ওভার, দেন ২১ রান। আফিফ হোসেন এক ওভারে দেন ১৫ রান। আফিফের ওভারে একটা সুযোগ এসেছিল কিন্তু ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি লিটন দাস।
১৩ ও ১৪তম ওভারে দুই অফ স্পিনারের বোলিংয়ে ৩১ রান নিয়ে কঠিন সমীকরণ অনেকটা সহজ করে ফেলে শ্রীলঙ্কা। সাকিব যখন আবার বল হাতে পান, তখন ম্যাচ অনেকটাই শ্রীলঙ্কার নাগালে। শেষ ৪ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। সে সময় আর তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি বাঁহাতি এই স্পিনার।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাবেক অধিনায়ক মুশফিক বলেন, “আজ সাকিবের জায়গায় যে বোলিং করেছে, সে কিন্তু একটা সুযোগ তৈরি করেছে। সেটা কাজে লাগাতে পারলে পরে ডানহাতি ব্যাটসম্যান আসত। তখন সাকিব আরও বেশি কার্যকর হতে পারত।”
ক্রিজে দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান থাকলে দুই প্রান্তে অফ স্পিন আনা বাংলাদেশের অনেক দিনের কৌশল। সে সময়ে বাঁহাতি স্পিনারদের বোলিংয়ের বাইরে রাখার অংসখ্য নজির আছে।
বাংলাদেশের হারের পেছনে লিটনের দুই ক্যাচ মিসের হয়ত ভূমিকা আছে। বেশি সময় অপেক্ষা না করে সাকিবকে আগেও আক্রমণে আনা যেত। মুশফিক জানালেন, “শেষের ভাবনায় তা করা হয়নি। আমার মনে হয়, সঠিক সময়ে সেরা বোলাররা বোলিং করছে কী না, এটা গুরুত্বপূর্ণ। আর এক দিকে যেহেতু বাউন্ডারি ছোট ছিল, যেকোনো সময়ে একজন বাঁহাতি স্পিনার আনা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। সাকিব একজন চ্যাম্পিয়ন বোলার, ডেথ ওভারে বোলিং করতে পারে, শেষ ওভারেও বোলিং করতে পারে। যদি এমন হতো যে শেষ ওভারে প্রয়োজন, তখন সে-ই হতো আমাদের বোলার।”
“ইনিংসের শেষদিকেই তো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো হয়, তখন আমরা চেয়েছিলাম সাকিবকে আনব। কারণ শেষদিকেই কঠিন সময়টা আসে। সে এই সব মুহূর্তের চাপ সইতে পারে। আমরা এটা ভেবেছিলাম। এই হারের জন্য সাকিবকে বোলিংয়ে না আনাটা কারণ নয়। এখানে আমরা প্রয়োজনের সময়ে সুযোগ মিস করেছি, এটাই কারণ।”