ভারতের কর্নাটকের একটি কলেজে গেরুয়া ওড়না পরা একদল যুবক অবিরত উত্ত্যক্ত করে যাচ্ছিলেন হিজাব পরা তরুণীকে। কিন্তু তার জায়গা থেকে তাকে একচুল সরাতে পারেননি। তিনি নিজের জায়গায় শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
ওই মুসলিম ছাত্রীটি একাই উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যান। সামাজিকমাধ্যমে সেই ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই তরুণী তার স্কুটার পার্ক করে কলেজ ভবনের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানে তার দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন একদল উগ্রবাদী তরুণ।
তাকে মোটেও বিচলিত করতে পারেনি তারা। বরং পাল্লা ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দিয়ে তিনি জবাব দেন। স্লোগান দিতে দিতে তিনি এগিয়ে যেতে থাকেন সামনে, আর উত্যক্তকারীরাও তার পিছু নেন।
এরপর দাঁড়িয়ে এক উত্ত্যক্তকারীকে জিজ্ঞাসা করেন, আমি বোরকা পরলে তোমাদের সমস্যা কী? এরই মধ্যে স্লোগান দেওয়া লোকজন তার কাছে পৌঁছে যান।
পরে কলেজ কর্মকর্তারা এসে তাকে নিয়ে নিরাপদে নিয়ে যান। মুসকান নামের ওই তরুণী বলেন, একাই তাদের মুখোমুখি হতে আমি উদ্বিগ্ন না। হিজাব পরার অধিকারের দাবিতে তিনি লড়াই অব্যাহত রাখবেন বলেও অঙ্গীকার জানিয়েছেন।
ভারতের মুসলিম নারীদের হিজাব পরা বন্ধ করতে কর্নাটকে মঙ্গলবার বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। হরিয়ানা ও দাবানগেরেসহ বিভিন্ন শহরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দেখা গেছে। বিক্ষোভকারীরা পরস্পরের দিকে পাথর ছুড়ে মেরেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে কাঁগানে গ্যাস ও লাঠিপেটা করতে হয়েছে।
তিনদিনের জন্য সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল কলেজে হিজাব ও গেরুয়া পরিধানকারীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে তাদের দিন শুরু করেন।
শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে শিক্ষার্থীসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কর্নাটকের হাইকোর্ট। উদুপির একটি সরকারি কলেজের পাঁচ নারীর আবেদন করা একটি পিটিশনের শুনানি চলছে আদালতে।
গত মাসে সরকারি মহিলা পিইউ কলেজ থেকে প্রথম হিজাব প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। তখন হিজাব পরে কলেজে আসলে ছয় শিক্ষার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এরপর তা দেশটির বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
বেশ কয়েকটি কলেজে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হলে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। হিজাবের বিরুদ্ধে গেরুয়ারা জোরালো ও মুখোমুখি অবস্থান নিতে শুরু করেন। শনিবার সমতা, ঐক্য ও জনশৃঙ্খলা নষ্ট করে এমন পোশাক পরা নিষিদ্ধ করেছে কর্নাটক সরকার।