আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ আফগানদের ছুঁড়ে দেয়া চ্যালেঞ্জ টপকাতে শুরুতেই চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। পরাজয়ের শঙ্কাও উঁকি দিচ্ছিল! ৬৪ রানে সাকিব চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে ফেরার পর জুটি গড়েন তাওহীদ হৃদয় ও শামীম পাটোয়ারি। দুই তরুণ টাইগার ধীরে ধীরে ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের মোড়। শেষে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। জয় থেকে ১৮ রান দূরে শামীম ফেরার পর হ্যাটট্রিক করে নাটক জমিয়ে তুলেছিলেন করিম জানাত। সব ছাপিয়ে আফগানদের বিপক্ষে ২ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন হৃদয়।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টসে জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাটে পাঠায় বাংলাদেশ। নির্ধারিত ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১৫৪ রান তোলে সফরকারী দলটি। জবাবে নেমে হৃদয়-শামীমের ৭৩ রানের ঝড়ো জুটিতে ১৯.৫ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে জয়ে নোঙর ফেলে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টিম টাইগার্স।
চ্যালেঞ্জে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে হারায় রনি তালুকদারকে। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ফজলহক ফারুকীর দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হন ডানহাতি ওপেনার। ৫ বলে ৪ রান করে ফেরেন।
রনি ফেরার পর স্বাভাবিক গতিতে রান তুলতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন কুমার দাস। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে দলীয় ৩০ রানে মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন শান্ত। ১২ বলে ১৪ রান করে যান।
পরের ওভারে ওমরজাই’র শিকার হন লিটন। ৬.৩ ওভারে ৩৯ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুজিবের ক্যাচ হয়ে লিটন ফেরেন ১৯ বলে ১৮ রান করে। অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে হানা দেয় বৃষ্টি। বৃষ্টির আগে টাইগাররা তোলে ৩ উইকেটে ৪২ রান।
বৃষ্টি বিরতির পর আফগানদের উপর চড়াও হন সাকিব আল হাসান। দীর্ঘ সময় ক্রিজে টিকতে পারেননি টাইগার অধিনায়ক। এগারোতম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ৬৪ রানে শিকার হন ফরিদ আহমেদের। উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ পয়েন্ট অঞ্চলে ধরা দেন করিম জানাতের হাতে। তিন চারের মারে ১৭ বলে ১৯ রান করে যান সাকিব।
সেখান থেকে চাপ কাটিয়ে তোলেন তাওহীদ হৃদয় ও শামীম হোসেন। ১৩তম ওভারে ওমরজাই’র উপর চড়াও হন দুজনে। চার বাউন্ডারিতে ওভারটিতে তোলেন ২১ রান। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে স্বাগতিকদের হাতে।
১৬.২ ওভারে মুজিবের বলে লংঅনের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে আউটের শঙ্কা জাগান হৃদয়। বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডার সহজ ক্যাচ ফেলে দেয়ায় বেঁচে যান।
আঠারোতম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাংলাদেশকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছিয়ে রশিদ খানের শিকার হন শামীম। ফেরার আগে হৃদয়ের সঙ্গে জুটি গড়েন ৭৩ রানের। চারটি চারের মারে ২৫ বলে ৩৩ রান করে ফেরেন।
ম্যাচ তখন বাংলাদেশের দিকেই। ১৯.২ ওভারে করিম জানাতের শিকার হন ৬ বলে ৮ রান করা মেহেদী হাসান মিরাজ। পরের দুই বলে তাসকিন ও নাসুমকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক তোলেন করিম জানাত।
নাটক তখন জমে ক্ষীর! কিন্তু পরের বলেই চিত্র পাল্টে যায়। শরিফুল এসে মেরে দেন চার। শেষ ওভারে ৬ রানের সমীকরণ মিলে যায়। টাইগারদের জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে হৃদয় ৩২ বলে অপরাজিত থাকেন ৪৭ রানে। ৩ চারের সাথে ২ ছয়ের ইনিংস তার। শরিফুল অপরাজিত থাকেন ১ বলে ৪ রানে।
আফগানদের হয়ে তিনটি উইকেট নেন করিম জানাত। একটি করে উইকেট নেন ফজলহক ফারুকী, মুজিব উর রহমান, রশিদ খান, আজমতুল্লাহ ওমরজাই ও ফরিদ আহমেদ।
এরআগে ব্যাটে নেমে মোহাম্মদ নবীর ফিফটিতে দেড়শ পেরোয় আফগান দল। নবী অপরাজিত থাকেন ৪০ বলে ৫৪ রানে। টাইগারদের হয়ে দুটি উইকেট নেন সাকিব। নাসুম, মিরাজ, তাসকিন, মোস্তাফিজ ও শরিফুল নেন একটি করে উইকেট।