ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারঃ আজ একটি গল্প দিয়ে শুরু করা যাক, গল্পটা হচ্ছে এরকম এক দেশে এক রাজা ছিলেন, তার বাম হাত ছিলনা আর বাম চোখ অন্ধ ছিল, তবে তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও সদয় ছিলেন। তাঁর রাজ্যের প্রত্যেকেই তাদের রাজার কারণে সুখী ও স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করছিলেন। একদিন রাজা রাজবাড়ির হলওয়ে দিয়ে হেঁটে যাবার সময় তাঁর পূর্ব পুরুষদের প্রতিকৃতি দেখতে পেলেন। তিনি ভাবলেন, একদিন তার বাচ্চারা একই হলওয়েতে হাঁটবে এবং এই প্রতিকৃতির মাধ্যমে সমস্ত পূর্ব পুরুষদের স্মরণ করবে।
তবে, বর্তমান রাজার কোন প্রতিকৃতি সেখানে ছিলনা। তার মনে সংশয় ছিল, শারীরিক অক্ষমতার কারণে, তাঁর চিত্রকর্মটি কিরকম হবে। তাই তিনি তাঁর এবং অন্যান্য রাজ্য থেকে বহু বিখ্যাত চিত্রশিল্পীকে দরবারে আমন্ত্রণ করে ঘোষণা করলেন যে, তিনি নিজের একটি সুন্দর প্রতিকৃতি প্রাসাদে স্থাপন করতে চান। যে চিত্রকর তাঁর সুন্দর প্রতিকৃতি আঁকতে পারবেন, তাকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে রাজা বলেন, যার আঁকা প্রতিকৃতি যত সুন্দর হবে তার উপর ভিত্তি করে তাকে পুরস্কৃত করা হবে।
চিত্রশিল্পী সকলেই ভাবতে লাগলেন যে, রাজার কেবল একটি পা এবং একটি চোখ রয়েছে। তার ছবি কীভাবে খুব সুন্দর করা যায়? অনেকেই ভাবলেন এটি সম্ভব নয়, যদি ছবিটি দেখতে সুন্দর না হয় তবে রাজা রাগান্বিত হয়ে তাদের শাস্তি দেবেন। তাই একে একে বিভিন্ন অজুহাত দেখাতে শুরু করেন এবং বিনয়ের সাথে রাজার চিত্র আঁকতে অস্বীকৃতি জানায়।
তবে একজন চিত্রশিল্পী তাঁর হাত তুলে বললেন যে আমি আপনার একটি খুব সুন্দর প্রতিকৃতি তৈরি করব যা আপনি অবশ্যই পছন্দ করবেন। শুনে রাজা খুশী হয়ে উঠলেন এবং অন্যান্য চিত্রশিল্পীরা কৌতূহলী হয়ে উঠলেন। রাজা তাকে অনুমতি দিলেন এবং চিত্রশিল্পী প্রতিকৃতি আঁকতে শুরু করলেন। একসময় চিত্রকর্মটি সম্পন্ন করে রাজাকে তার প্রস্তুতির সংবাদ দিলেন।
সমস্ত সভাসদ, অন্যান্য চিত্রশিল্পী সহ অনেকেই কৌতূহলী ছিলেন, বিশেষ করে রাজা শারীরিকভাবে অক্ষম থাকায় চিত্রকর কীভাবে রাজার প্রতিকৃতিকে সুন্দর করে তুলতে পারেন? রাজা যদি চিত্রকর্মটি পছন্দ না করেন এবং রাগান্বিত হন তাহলে কী হবে? কিন্তু চিত্রশিল্পী যখন প্রতিকৃতি উপস্থাপন করলেন, তখন রাজাসহ দরবারে সকলেই হতবাক হয়ে গেলেন।
চিত্রশিল্পী একটি প্রতিকৃতি তৈরি করেছিলেন যাতে রাজা এক পায়ে ঘোড়ার উপর বসে, ধনুকটি ধরেছেন এবং একটি চোখ বন্ধ করে তীরটি লক্ষ্যস্থির করেছেন। রাজা খুব সন্তুষ্ট হয়ে দেখলেন যে চিত্রশিল্পী চতুরতার সাথে রাজার অক্ষমতা লুকিয়ে একটি সুন্দর প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন। রাজা তাকে একটি অভিনব পুরষ্কার দিয়েছিলেন।
আমি আজকের লিখনিতে কোভিড মহামারির ২০২০ সময়ে আমাদের কমিউনিটির উদ্যোগে আয়োজিত কিছু ইতিবাচক কার্য্যক্রম, যতটুকু জানতে পেরেছি, জেনেছি, চিত্রায়িত করার চেষ্টা করেছি। ত্রুটি বিচ্যুতি কিংবা নেতিবাচক দিক নিয়ে আলোচনা সযতনে পরিহার করার চেষ্টা করেছি। স্বাভাবিকভাবেই অনেকের মনে হতে পারে, অনেক কিছুই প্রকাশিত হয় নাই। এমন কিছু ইতিবাচক কিছু জানা থাকলে আমাকে জানালে আমি অদূর ভবিষ্যতে প্রকাশের প্রচেষ্টা নেবো।
প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগঃ ২০২০ সালে কোভিড মহামারির সময়ে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশী কমিউনিটির বেশ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ আমরা লক্ষ্য করেছি। এসব ইতিবাচক কার্য্যক্রম সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
ইনসপায়ার্ড কমিউনিটি আয়ারল্যান্ডঃ মার্চ মাসে প্রথম লক ডাউন দেবার পর ডাবলিন থেকে “ইনসপায়ার্ড আয়ারল্যান্ড” নামক সংগঠন ডাবলিনের কয়েকটি হাসপাতালে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নিয়ে সমাজে প্রশংসিত হন।
কাউন্টি সংগঠনঃ
গলওয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটির উদ্যোগে স্থানীয় হাসপাতালে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। গলওয়ে কমিউনিটির সভাপতি জনাব আজিমুল হোসেইন জানান যে কমিউনিটি কার্য্যকরি কমিটির উদ্যোগে এই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ সকল মহলে প্রশংসা অর্জন করে।
কিলকেনীতে বাংলাদেশী কমিউনিটির উদ্যোগে হাসপাতালে যারা ফ্রন্ট লাইন ওয়ার্কার তাদেরকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। কিলকেনি থেকে জনাব শিপন দেওয়ান জানান যে, কমিউনিটি সদস্যরা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে এগিয়ে আসেন এবং ব্যাক্তগত চাঁদা সংগ্রহ করে, স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে রান্না করে খাবার পৌঁছে দেয়া হয়।
ক্যাভানে চিলি লাউঞ্জ রেস্টুরেন্টের সত্ত্বাধিকারী জনাব শায়েক আলীর উদ্যোগে স্থানীয় হাসপাতালে এবং গার্ডাদের জন্য ২ দফা খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।
ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটির উদ্যোগে এবং স্থানীয় চিলি শেখর রেস্টুরেন্টে, শাপলা রেস্টুরেন্ট ও সাবওয়ের পক্ষ থেকে লেটারকিনি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে খাবার বিতরণ করা হয়। ডুনেগালে গত ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বর্ণবাদবিরোধী মানববন্ধন। ডুনেগাল ট্রাভেলার প্রজেক্টের ডাইরেক্টর জনাব ওবায়দুর রহমান রুহেল ও শাকিল আহমেদের নেতৃত্বে ডোনেগাল বাংলাদেশী কমিউনিটি এই মানব বন্ধনে অংশ গ্রহন করেন। এছাড়াও ডোনেগাল ভলান্টিয়ার সেন্টারের সাথে যৌথ উদ্যোগে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ভিডিও ক্লীপ নির্মাণ, ভার্চুয়াল ঈদ পুনর্মিলনী আয়োজন ও মিলাদ মাহফিল উল্লেখযোগ্য।
কাউন্টী কার্লোঃ কাউন্টী কার্লোতে ছোট হোক, বড় হোক, একটা অনুষ্ঠান হতেই হবে। কিন্তু এবার করোনার কারণে ২০২০ সালটা অনেকটাই থেমে গিয়েছিলো। সামাজিক কিংবা সাংস্কৃতিক মিলন মেলা ছিলো না বললেই চলে, তবে অনেকেই অনলাইনে বেশ সরব ছিলেন। সাইমা শহিদ লিফার উদ্যোগে অনলাইনে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত শিশুদের বাংলা শিক্ষা দেন। কার্লোর ‘এ কে বিতু‘ সপ্তাহে দুদিন করে বাচ্চাদের কে অন লাইনের মাধ্যমে আর্ট ক্লাস শুরু করেন, এখন পর্যন্ত উনি খুব সফলতার সাথে ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছে্। নাসরিন আকতার নামে একজন গৃহবধূ হোমমেড ফুড ডেলিভারী শুরু করেছেন, যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই বিভিন্ন ধরনের পিঠা, মিষ্টি এবং যে কোনো ধরণের খাবার অর্ডার করতে পারেন।
কাউন্টী কেরিঃ কাউন্টী কেরিতে পরিচালিত মসজিদ কমিটির উদ্যোগ এবং সাফল্য ছিল অত্যন্ত গৌরবের। ইতিমধ্যে কিলার্নী থেকে হাফেজা তানহা রহমান (১৩) সম্পুর্ন কোরান মুখস্ত করে আমাদের সকলকে গর্বিত করেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ট্রালি থেকে হাফিজ আবিয়াদ রহমান আরিক (১৩) সম্পুর্ন কোরান মুখস্ত করার গৌরব অর্জন করেছেন। এই অর্জন ইহজাগতিক এবং পারলৌকিক সাফল্যের দ্বার উন্মোচন করবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
আল্লাহ তাদের এই সাফল্য ধারণ করার ক্ষমতা প্রদান করুন। কাউন্টি কেরির মসজিদ কমিটির প্রধান এবং অল বাংলাদেশী এসোসিয়েশন (আবাই) এর নির্বাচিত মহাসচিব জনাব ইকবাল মাহমুদ জানান যে, সেখানে মক্তবে আরবি পাঠদানের কর্মসূচী তারা পুরোদমে চালিয়েছেন এবং সম্প্রতি এই মক্তব ভার্চুয়ালি পরিচালনার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া গত সেপ্টেম্বর মাসে সেখানে ইসলামী মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
ডাবলিনঃ ক্লনডালকিনের, আলখিদমা কমিউনিটির পক্ষ থেকে আরবি শিক্ষার ভার্চুয়াল কর্মসূচী অব্যাহত আছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে কোভীড সচেতনামূলক আলোচনা আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আল খিদমার সাধারণ সম্পাদক জনাব সাইফুজ্জামান খান (তুহিন)।
ডাবলিনের ক্লনডালকিন মসজিদ (আই এম সি সি), আয়োজিত ১৭তম তাফসিরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ২৫শে ডিসেম্বর। এবারের মাহফিল ছিল ব্যাতিক্রমী, প্রতিবছর এই অনুষ্ঠান হয়ে থাকে প্রত্যক্ষ কিন্তু কোভিড মহামারীর কারনে এবারের মাহফিল ছিল পরোক্ষ (ভার্চুয়াল), জুমের মাধ্যমে। মূল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ সাইয়েদ কামাল উদ্দিন আব্দুল্লাহ জাফরী। সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দ্বিতীয় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডঃ মোহাম্মদ রুহুল আমিন, গ্লোবাল প্রেসিডেন্ট, ওয়ার্ল্ড মুসলিম হেরিটেজ রিসার্চ সেন্টার। যুক্তরাজ্য থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ডঃ আব্দুস সালাম আজাদি, পরিচালক কিউ এন এস একাডেমী, যুক্তরাজ্য।
এছাড়াও আই এম সি সি কর্তৃপক্ষ প্রায়শই ভার্চুয়াল ইসলামী আলোচনা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েছেন সারা বছর জুড়ে। ক্লনডালকিন মসজিদ (আই এম সি সি) এর সভাপতি জনাব আব্দুল মান্নান জানান, ক্লনডালকিন মসজিদ থেকে কোভিডকালীন সময়ে প্রতিসপ্তাহে এবং প্রতি মাসে একটি করে ধর্মীয় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্টিত হয় ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান যেখানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আব্দুল মোমেন এবং আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশী হাই কমিশনার মুনা তাসনিম উপস্থিত থাকেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ডে একটি দূতাবাস স্থাপনের ব্যাপারে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। মান্যবর রাষ্ট্রদূত একটি দূতাবাসের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে ঐক্যমত্য পোষণ করে তার অব্যাহত সহযোগিতার কথা জানান। এছাড়াও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন এবং বংগবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আয়ারল্যান্ড এর পক্ষ থেকে দলীয় অন্যান্য অনুষ্ঠানের পাশাপাশি স্বাধীনতা দিবস এবং একুশে ফেব্রুয়ারি ভার্চুয়ালী উদযাপিত হয়।
পিস মিশন অফ আয়ারল্যান্ডের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কাউন্টিতে অসুস্থ এবং বয়স্কদের সহায়তা সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে। কাউন্টি কেরিতে কমিউনিটির একজন সদস্যের সহায়তায় ১,৫০০ ইউরোর মত অর্থ সাহায্য প্রদান করা হয়। এছাড়া, কোভীড সচেতনামূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় অনলাইনে, এতে বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, উত্তর আয়ারল্যান্ড থেকে ডাঃ সামরান এবং যুক্তরাজ্য থেকে ডাঃ আমিনুল ইসলাম মুকুল এবং ডাঃ গালিব।
সংবাদপত্রঃ আয়রল্যান্ডে বাংলাদেশীদের উদ্যোগে বেশ কয়েকটি অনলাইন বাংলা পত্রিকা প্রকাশিত হয়ে আসছে।
১।আইরিশ বাংলাবার্তাঃ এই সংবাদপত্র কোভিড কালীন সময়ে পুনরায় কিছুদিনের জন্য প্রকাশিত হলেও এখন আর সংবাদপত্রের কার্য্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছেনা।
২।জনাব আব্দুর রহিম ভুঁইয়া সম্পাদিত আইরিশ বাংলাটাইমস, প্রকাশিত হয়ে আসছে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে। এব্যাপারে সম্পাদক জনাব আব্দুর রহীম ভুঁইয়া জানান যে, তারা সম্প্রতি তাদের সম্পাদনা পরিষদের ব্যাপ্তি বৃদ্ধি করেছেন। মূলতঃ শিক্ষাজীবনের সমান্তরাল কাজে আগ্রহ থেকে এবং আয়ারল্যান্ডে কমিউনিটির সংবাদ তুলে ধরার মত তেমন কোন বাহনের অভাব অনুভব করেই তিনি এই সংবাদপত্র প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশী কমিউনিটি সংবাদ পরিবেশন, সংবাদের মান উন্নয়ন এবং সমাজ সম্পৃক্ততা তার মূল উদ্দেশ্য।
আব্দুর রহিম ভুঁইয়া সম্পাদিত আইরিশ বাংলা টাইমস কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে একটি ভার্চুয়াল দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে কমিউনিটির সদস্যদের মধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
সম্প্রতি জনাব আবুর রহিম ভুঁইয়া জুনিয়র সার্টিফিকেট এবং লিভিং সার্টিফিকেট পরিক্ষার্থীদের একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরি করে আগামী প্রজন্মের সন্তানদের শিক্ষাখাতে উৎসাহী করার লক্ষ্যে এওয়ার্ড প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। অনেকেই এই উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন এবং এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
আইরিশ বাংলা টাইমস একাডেমী নামে আরেকটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, এই উদ্যোগ হচ্ছে একটি ভার্চুয়াল কোরানিক আরবি শিক্ষার কোর্স, এটি চলছে অনলাইনে। মদিনার একটি কারিকুলাম অনুযায়ী এখানে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগটিও প্রশংসার, আমরা এই উদ্যোগের সফলতা এবং সার্থকতা কামনা করছি।
৩।আইরিশবাংলা ন্যাশন পত্রিকার সম্পাদক কাউন্টি মেয়ো থেকে জনাব কামাল উদ্দিনের সাথে কথা বললে উনি জানান যে, এই পত্রিকার ওয়েবসাইট মূলত বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। আয়ারল্যান্ড থেকে তিনি নিজে এবং তার সাথে কয়েকজন মাঝে মধ্যে স্থানীয় কিছু সংবাদ পরিবেশন করে থাকেন। তিনি অবশ্য মনে করেছেন, আয়ারল্যান্ড থেকে ৪/৫ টি পত্রিকা প্রকাশনা কষ্টসাধ্য হবে এবং তিনি মনে করেছেন যে, কোভিড পরবর্তী সময়ে এই পত্রিকাগুলোর বেশীরভাগই টিকে থাকতে পারবে বলে তিনি মনে করেন না।
৪।আইরিশ বাংলাপোস্টের সম্পাদক জনাব এ কে আজাদ জানান তিনি দীর্ঘদিন থেকে এই সমাজে তথ্য প্রবাহ নিয়ে কাজ করছেন। তিনি এ টি এন বাংলার স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। অতীতে তিনি বাংলা বার্তা এবং আইরিশ বাংলা বার্তার সাথে যুক্ত ছিলেন। জনাব আজাদ জানান, আইরিশ বাংলাপোস্টকে তিনি সার্বজনিন একটি সংবাদ পত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান।
তাঁর ফোকাস হচ্ছে মাতৃভূমি বাংলাদেশ, স্থানীয় আইরিশ বাংলাদেশী কমিউনিটি, আন্তর্জাতিক সংবাদ পরিবেশন, এছাড়াও সাহিত্য এবং নিয়মিত ফিচার প্রকাশিত হয়ে আসছে। পত্রিকাটিকে তিনি আবেগের স্থান হিসেবে প্রকাশ করে বলেন পাঠক সমাজকে কিছুটা সেবা দিতে পারলেই তিনি নিজেকে ধন্য মনে করবেন। সংবাদপত্রের মাধ্যমে জনসেবা করাটাই তার মূল লক্ষ্য।
বার্তা সম্পাদক জনাব শিপন দেওয়ান জানান যে, তিনি এই ধরনের একটি সংবাদ পত্রের সাথে যুক্ত হতে অনেক দিন থেকেই আগ্রহী ছিলেন। তিনি বলেন, সঠিক তথ্য প্রবাহ সমাজকে সচেতন করে তুলে এবং সামাজিক অগ্রগতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। তাই তিনি সমাজ সেবার অংশ হিসেবে এখানে যুক্ত হয়েছেন।
ক্যান্সার সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠানঃ “প্রেসিশন অনকোলজী আয়ারল্যান্ড” নামক রিসার্চ অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয় ক্যান্সার সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাংলাদেশী শিশুদের জন্য চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ডের ক্যান্সার গবেষণায় নিয়োজিত স্বনামধন্য বৈজ্ঞানিক ও চিকিৎসকগণ বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানটী মূলতঃ মহিলাদের উদ্দেশ্য করে আয়োজন করা হয়েছিলো কিন্তু কমিউনিটির প্রত্যাশিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি। অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে ৬৫ জনের মত সদস্য অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ফেইসবুক পেইজ এবং গ্রুপঃ ডাবলিন বাংলা বার্তা ফেইসবুক গ্রুপের উদ্যোক্তা জনাব মানিক মনিরুজ্জামান জানান দীর্ঘদিন থেকেই প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির সংবাদ প্রচার করে আসছেন। জনাব মানিক জানান যে, তিনি ডাবলিন বাংলা বার্তাকে বাংলাদেশী কমিউনিটির কন্ঠ হিসেবে সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট এবং ব্লগ হিসেবে ধারণ করে আছেন। নিজস্ব পেশার বাহিরে এই কাজটাকে দীর্ঘদিন থেকেই তিনি ধারণ করে আছেন। ভবিষ্যতে এটাকে অনলাইন বাংলা পোর্টাল অনলাইনে হিসেবে আত্নপ্রকাশ করার চিন্তা আছে তার।
আইরিশ নোটিশ বোর্ড নামে একটি পেইজ পরিচালনা করে আসছেন জনাব মশিউর রহমান। এই পেইজটিকে আইরিশ বাংলা টাইমসের সাথে সংযুক্তির কথা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন আয়ারল্যান্ড নামে একটি ফেইসবুক গ্রুপ পরিচালিত হয়ে আসছে যার সদস্য সংখ্যা এই মুহূর্তে ১,৭৬৫ জন্য। এই গ্রুপের এডমিন হিসেবে আছেন জনাব পিনাকী দেব অপু, মোডারেটর হিসেবে জনাব গালিব হক এবং ফেরদৌসি বিকন যুক্ত আছেন।
আমরা আয়ারল্যান্ড প্রবাসী নামে একটি ফেইসবুক গ্রুপ পরিচালিত হয়ে আসছে। এই গ্রুপে সদস্য সংখ্যা ৮৬৫ জন। এই গ্রুপের এডমিন হিসেবে ডাঃ মুশাব্বির হোসেন, মোডারেটর হিসেবে আছেন নাসিম মাহমুদ, আরিফ ভুয়া, জাকিয়া রহমান এবং শিপন দেওয়ান। এডমিন ডাঃ মুশাব্বির হোসেইন জানান যে, এই গ্রুপটি অত্যন্ত সজীব এবং ইতিমধ্যে তারা আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী শিশুদের মধ্যে একটি চিন্ত্রাংকন প্রতিযোগিতা সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছেন।
হেলথ সাপোর্ট গ্রুপ বাংলাদেশ নামে একটি স্বাস্থ্য সচেতনামূলক গ্রুপ পরিচালিত হয়ে আসছে। এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ২৭৩ জন। এই গ্রুপের এডমিন জনাব সাইফুজ্জামান খান তুহিন জানান যে, তাদের গ্রুপের মূল উদ্দেশ্য বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে আয়রল্যান্ডের প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টি করা। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তারা বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ফিচার, ভিডিও মেসেজ এই গ্রুপ থেকে শেয়ার করেছেন যা পাঠক শ্রোতাদেরকে সচেতন করেছে বলে তিনি আশা করেন।
মন্তব্যঃ আগামীকাল শেষপর্ব প্রকাশিত হবে ইন শা আল্লাহ।