আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ইউক্রেনে অবস্থানরত বাংলাদেশের শিপ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রাশিয়ার রকেট হামলা হয়েছে। ৪৭ই ব্যাচের মেরিন ইঞ্জিনিয়ার (জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার) হাদিসুর রহমান নিহত হয়েছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জাহাজের বাকি সবাই নিরাপদে জাহাজ ত্যাগ করেছেন। নিহত হাদিসুর রহমান মোবাইলের নেটওয়ার্ক পেতে জাহাজের ব্রিজে গেলে তখন তার উপরেই রকেটটি আঘাত করে। তার দেহাবশেষ পাওয়া যায় নাই। ২ মার্চ (বুধবার) স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে অলভিয়া বন্দরে থাকা ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে এ হামলা হয়।
ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমানের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার ৩ নম্বর হোসনাবাদ ইউনিয়নে।
ছোটবেলা থেকে অত্যন্ত মেধাবী ছিরেন হাদিস। এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ পাওয়া আরিফ চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমির ৪৭তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন,লেখাপড়া শেষ করে তিনি এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি নেন।
হামলার বিষয়টি সময় নিউজকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী। হামলার পরই নাবিকরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এরইমধ্যে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান মারা গেছেন বলেও জানান ক্যাপ্টেন আনাম।
এর আগে, ইউক্রেনের জলসীমায় আটকে পড়েছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) এর এই জাহাজটি। এতে ২৯ জন নাবিক রয়েছে বলে বিএসসি সূত্রে জানা গেছে।
বিএসসি সূত্রে জানা যায়, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়।
তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেন শিপিং করপোরেশনের কর্মকর্তারা। শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ।
এদিকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ভোরে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর দেশটির বন্দরগুলোতে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি জাহাজটির মতো আরও কয়েকটি জাহাজ সেখানে আটকা পড়েছে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি ওই বন্দরের সামনে নদীতে নোঙর করে রাখা ছিল। জাহাজটি অলভিয়া বন্দর থেকে পণ্য বোঝাই করে ইতালির রেভেনা বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল।
এরপর জাহাজের একাধিক নাবিক নিজেদের ফেসবুক পেজে পরিস্থিতি জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তারা উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে সহায়তা চেয়েছিলেন। এরইমধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটল।