আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের ব্যাপক বিস্তারে তথা আর্থ-সামাজিক খাতে এর নেতিবাচক প্রভাবে সর্বগ্রাসী এক সংকট সৃষ্টি হয়েছে; সর্ব ক্ষেত্রেই দেখা দিয়েছে এক ধরনের অস্থিরতা। দেশের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে করোনা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ থাবা বসায়নি। করোনার কারণে সার্বিকভাবে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষের মধ্যে জীবন-জীবিকার তাগিদে যে ‘যুদ্ধাবস্থা’ তৈরি হয়েছে, চলমান সংকট যত দীর্ঘস্থায়ী হবে, সেটিও ততই তীব্রতর হবে। এতে করে মানুষের মনোজগতে বড় পরিবর্তন আসবে, বাড়বে সামাজিক অস্থিরতা।
বিভিন্ন গবেষণা বলছে, করোনাসৃষ্ট চলমান অচলাবস্থা দীর্ঘকাল চলতে থাকলে কর্মসংস্থান, অর্থনীতি, মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক শৃঙ্খলার ওপর এর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষত, সামাজিক সুরক্ষা বলয়ও যেহেতু এখানে সীমিত। লকডাউনের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠার ক্ষমতা ধনী রাষ্ট্রগুলোর থাকলেও নিম্ন ও মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রগুলো কতটা টিকে থাকতে পারবে সেটিই বরং অনেক বড় একটি প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
দেশে করোনা ছোবল হানার মাসখানেক পেরুতেই এর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে, শিক্ষায়, ব্যবসা-বাণিজ্যে, এমনকি রাজনীতিতেও বিরাজ করছে স্থবিরতা। আর চিকিৎসা খাতে এতটাই সংকট
সৃষ্টি হয়েছে যে, সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে, সেবার পরিবর্তে ভোগান্তি পেতে হচ্ছে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ। শিক্ষার্থীরা তাই অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হচ্ছে। রপ্তানি আয়ের অন্যতম খাত তৈরি পোশাকশিল্পে ক্রেতাদের অর্ডার কমে যাওয়ায় অনেক শিল্প-কারখানায় কর্মচারী-শ্রমিকদের বেতন বন্ধ আছে; শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনাও ঘটছে অহরহ। সঙ্গত কারণেই বাড়ছে বেকারত্ব। করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর পরই দেশে অপরাধমূলক কর্মকা- হ্রাস পেলেও এখন ফের বাড়তে শুরু করেছে। প্রতিটি সেক্টরে অস্থিরতা এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যে, তা মানুষের মনোজগতে আঘাত হানছে।