রমজান মাসে নারীদের যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি


এই মর্মে এক হাদিস হতে এসেছে, আল্লাহ বলেন, মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে ব্যক্তির পুণ্যের কাজ করবে তাকে আমি নিশ্চয়ই পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্মে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব’। (সূরা নাহল আয়াত ৯৭ )

তবে রমজান মাসে এমন বহু নারীরা রয়েছে যারা আল্লাহর পুন্য লাভের প্রতি উদাসীন থাকে। যা ইসলামিক দৃষ্টিতে এই রমজান মাসে কোন ভাবেই কাম্য নয়।

তাই চলুন জেনে আসি পবিত্র রমজান মাসের প্রত্যেকটি নারীদের যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি:

১. ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক বিশেষ কিছু দিনগুলোতে নারীদের নামাজ ও রোজা রাখা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তারা এ সময় কোন ধরনের ইবাদাত বন্দেগি করতে পারবে না। এই বিশেষ সময়েও তারা বিভিন্ন ধরনের জিকির, তওবা, ইস্তেগফার ও দোয়া করতে পারে।

কিন্তু রমজান মাসে এমন বহু নারীকে দেখা যায় যারা তাদের বিশেষ দিনগুলোতে সব ধরনের ইবাদত এবং প্রার্থনা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখে। যা সম্পর্কে প্রত্যেক নারীদের খেয়াল রাখা উচিত।

২. প্রত্যেক নারীদের উচিত রমজানে শিশুদের ইবাদতে অভ্যস্ত করে তোলা। যদিও ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক শিশুদের জন্য নামাজ কিংবা রোজা আবশ্যক নয়। তবে তাদের ধীরে ধীরে ইবাদতে অভ্যস্ত করে তোলাও প্রত্যেক নারীর এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

৩. রমজান মাসে ঈদকে ঘিরে বহু নারীগণ কেনাকাটাই ব্যস্ত থাকেন। এতে সময় ও অর্থ দুই ব্যায় হয়। এতে নামাজের ওয়াক্ত চলে যায় ও নামাজ কাযা হয়ে যায়, সাথে পর্দা নষ্ট হওয়া এবং অর্থ ব্যায় সহ এবাদত এর সুযোগ হারিয়ে যায়।

আল্লাহ মুমিনদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন এভাবে, ‘সেসব লোক, যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ, নামাজ কায়েম ও যাকাত প্রদান থেকে বিরত রাখে না। তারা ভয় করে সেদিনকে যেদিন অনেক অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে’। (সূরা নূর আয়াত ৩৭)

৪. এমন অনেক নারী রয়েছে যারা রমজান মাসে অনর্থক রাত জেগে থাকে। সংসারের যাবতীয় কাজ শেষ করার পরও বহু নারী অনর্থক রাত জেগে টেলিভিশন দেখে কিংবা মোবাইল ফোনে থাকে। কিন্তু ইসলামিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে যে, কোন কারনে কোন ব্যক্তির ঘুম না এলে কোরআন তেলাওয়াত ও তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার জন্য।

কিংবা আল্লাহর ইবাদতের মশগুল থেকে তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা। এই মর্মে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা রাতের ঘুম খুব সামান্য অংশই ঘুমাতো এবং শেষ রাতে তারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতো’। (সূরা জারিয়াত, আয়াত ১৭-১৮)

৫. রমজানের শেষ দশক মুমিন ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এই শেষ দশকে লাইলাতুল কদর রয়েছে। এই সময়ে আমাদের বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিক পরিমাণে ইবাদত বন্দেগী করতেন। অথচ এমন বহু নারী রয়েছে যারা শেষ দশকে পারিবারিক ব্যস্ততায় দিন পার করে।

তারা তাদের দিন অতিবাহিত করে ঈদের কেনাকাটা, মেহমান আপ্যায়ন, ঘরবাড়ি প্রস্তুতকরণ এবং ঈদের রান্নাবান্না নিয়ে। যা নারীদের জন্য ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই প্রত্যেক নারীদের উচিত রমজান মাসের শেষ দশকে যাবতীয় ব্যস্ততা উপেক্ষা করে ইবাদাত বন্দেগীতে মনোযোগী হওয়া।

রমজান মাস প্রত্যেক মুসলিম বান্দার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অপার মহিমান্বিত মাস। তাই এই মাস জুড়ে সকল ব্যস্ততাকে দূরে রেখে নারীদের এই মাসের যথাযথ মূল্যায়ন করা উচিৎ।

মহান রাব্বুল আলামিন বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহকে রমজান মাসে রোজা রাখা সহ বেশি বেশি ইবাদাত বন্দেগী করার তৌফিক দান করুণ।
(আমিন )

SHARE THIS ARTICLE