অনিয়মিত অভিবাসীদের আশ্রয় চাওয়ার অধিকার স্থগিত করতে চায় পোল্যান্ড

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ প্রতিবেশী বেলারুশ থেকে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের ঠেকাতে আশ্রয় চাওয়ার অধিকার স্থগিত করার পরিকল্পনা করছে পোল্যান্ড৷ অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে ‘ক্ষমাহীন’ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টুস্ক৷

১২ অক্টোবর পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টুস্ক জানিয়েছেন, পোল্যান্ড তার ভূখণ্ডে আশ্রয় চাওয়ার অধিকারকে অস্থায়ীভাবে স্থগিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে৷ মূলত বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে আসা অনিমিত অভিবাসীদের ঠেকাতে এবং এসব অভিবাসীরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশে যেন আশ্রয় চাইতে না পারে, সেজন্য এই কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে দেশটি৷

গত তিন বছর ধরে রাশিয়া ও বেলারুশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে সামরিক জোট ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র পোল্যান্ড৷ তারা বলছে, মূলত মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসীদের এনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ব সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডের দিকে ঠেলে দিচ্ছে রাশিয়া ও বেলারুশ৷ আর এটিকে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে ‘হাইব্রিড অ্যাটাক’ বলছে ওয়ারশ৷

কী বললেন টুস্ক?

পোলিশ সংবাদ সংস্থা পিএপি জানিয়েছে, নিজ দল লিবারেল সিভিক কোয়ালিশন (কেও)-এর একটি দলীয় সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন ডোনাল্ড টুস্ক৷ সেখানে তিনি বলেন, অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে ‘ক্ষমাহীন’ লড়াই চালিয়ে যেতে তার সরকার অভিবাসন ইস্যুতে নতুন কৌশল নিতে যাচ্ছে৷

তিনি বলেন, ‘আমি খুব দৃঢ়ভাবে এবং গর্বের সঙ্গে বলছি, আমাদের অভিবাসন কৌশলটি হলো আমাদের ভূখণ্ডে আশ্রয় চাওয়ার অধিকার স্থগিত করা।’

পরিকল্পটি নিয়ে বিশদ কিছু বলেননি টুস্ক৷ শুধু জানিয়েছেন, ‘পোল্যান্ডে কে ঢুকছেন আর কে বেরিয়ে যাচ্ছেন—তার শতভাগ নিয়ন্ত্রণ আমরা রাষ্ট্রের কাছে ফিরিয়ে আনতে চাই৷’

টুস্ক পরিষ্কার করে বলেন, ‘আশ্রয় চাওয়ার অধিকারের সুযোগটির অপব্যবহার করছে লুকাশেঙ্কো (বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো), পুতিন (রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন), চোরাকারবারী আর মানবপাচারকারীরা৷’

তিনি বলেন, ‘তারা যা করছে, তা হলো আশ্রয় চাওয়ার যে অধিকার, তার সম্পূর্ণ বিপরীত৷’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে ইউরোপিয়ান কাউন্সিল৷ আর সেই প্রতিষ্ঠানটির এক সময়ের প্রধান ছিলেন ডোনাল্ড টুস্ক৷ তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তকে ইউরোপ স্বীকৃতি দিবে’ এমনটাই আশা করে ওয়ারশ৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন আশ্রয়নীতি ও অভিবাসন বিষয়ক চুক্তি প্রসঙ্গে ডোনাল্ড টুস্ক বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করবে এমন কোনো ইউরোপীয় ধারণাকে আমরা সম্মান জানাতে চাই না, বাস্তবায়নও করতে চাই না৷’

উল্লেখ্য, ২০২৬ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এই অভিন্ন আশ্রয়নীতি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে৷ কিন্তু ৯ অক্টোবর অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে নীতি কঠোর করা এবং জোটের বহিঃসীমান্তে সুরক্ষা বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্র৷

সূত্র: ডয়চে ভেলে।

SHARE THIS ARTICLE