আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর নামে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার উক্তিকে জঘন্য অপবাদমূলক মিথ্যাচার উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৬৬ জন শীর্ষ উলামা মাশায়েখ।
গত ৫ জুলাই রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে আলেমগণ বলেন, ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ই মে, ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য দ্বিতীয় কারবালার একটি নির্মম, কালো ও রক্তাক্ত ইতিহাস। শুকরিয়া মাহফিল নয়, এর চাইতে বড় কিছু করেও তা ভুলানো যাবে না। হাজার বছর অতিবাহিত হলেও শাপলা চত্বরের শহীদদের বুকের তাজা রক্ত কথা বলবে।
তারা বলেন, যারা এই খুনকে অস্বীকার করবে তারা স্বার্থপর সুবিধাবাদী ও জাতীয় গাদ্দার। ৫ই মে’র ভয়ংকর কালো রাত্রির শেষ প্রহর পর্যন্ত যে সকল মর্দে মুজাহিদ গুলি ও বুলেটের মুখে জীবনবাজি রেখে শাপলা চত্বরে মৃত্যুর মুখোমুখী হয়েও ষ্টেজে বসে লাখ লাখ নেতা কর্মীদেরকে হিম্মত ও সাহসিকতার সাথে ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছেন, তিনি আপোসহীন জননেতা দেশ ও জাতির কান্ডারী আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি জেল জুলুম নির্যাতন নিপীড়নের দরাজ ফিরিস্তির বাস্তব প্রাণপুরুষ ।
আলেমগণ আরো বলেন, ঈমান-আক্বিদার পতাকা সমুন্নত রাখা ও বাতিলের বিরুদ্ধে আপোষহীন সেই আল্লামা বাবুনগরীকে আজ ‘জামায়াতের সাথে মিলে শাপলা চত্বরে মার খাওয়াইছে’ বলা জঘন্য মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়। আমরা এমন মিথ্যাচারিতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে শীর্ষ উলামা-মাশায়েখগণ বলেন, আমরা দেখে আসছি আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র সকল কর্মসূচী বাস্তবায়নে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী অত্যন্ত আগ্রহ ও আন্তরিকভাবে সর্বৌত সাহায্য ও আনুগত্যের পরিচয় দিয়েছেন এবং কোন কর্মসূচী বাস্তবায়নে আমীরে হেফাজতের সাথে তার এ যাবৎ কোনরূপ মতপার্থক্য হয়নি।
তারা বলেন, কিন্তু আজ কিছু সংখ্যক কুচক্রী মহল আমীরে হেফাজতের সাথে মহাসচিবের মতপার্থক্য ও দূরত্ব খুঁজে বেড়াচ্ছেন এবং সর্বস্তরের মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য শক্তিশালী ঈমানী সংগঠন হেফাজতকে দুর্বল করার ও ভাঙ্গার হীন চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন ।
উলামায়ে কেরাম বলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মজলুম জননেতা আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে নিয়ে জনৈকি ব্যক্তি ফোনালাপে যেই মিথ্যাচার করেছেন, তা অত্যন্ত জঘন্য ও নিন্দনীয়। আল্লামা বাবুনগরী হক্কানী উলামায়ে কেরামের আপোষহীন রাহবর। তাঁর সাথে মওদূদীবাদী জামায়াতের বিন্দুমাত্র কোন সম্পর্ক নেই। ফাঁস হয়ে পড়া ফোনালাপ পরিকল্পিত মিথ্যাচার এবং কোন অপশক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নে উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপবাদ।
তারা বলেন, ইতিমধ্যে আমরা লক্ষ্য করেছি, স¤প্রতি আধিপত্যবাদি শক্তির দোসর হিসেবে চিহ্ণিত গুটিকয়েক অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়া নানা কল্পকাহিনী তৈরি করে মিথ্যা ও বানোয়াট কল্পকাহিনী সাজিয়ে দেশের শীর্ষ আলেম ও যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দীস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্ত করে যাচ্ছে । আমরা এসব অপপ্রচারেরও তিব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উলামাগণ আরো বলেন, আল্লামা বাবুনগরী একমাত্র ব্যক্তি যিনি শাপলা চত্বরে ৫ই মে’র রাতে ভয়াবহ আগ্রাসী হামলায়ও পিছপা হননি, বরং ৬ মে ভোরে চরম ঝুঁকির মধ্যেও তিনি আমীরের প্রতি আনুগত্যের পরাকাষ্ঠা প্রমাণ করে লালবাগে হেফাজত আমীরের নির্দেশনার জন্য তাঁর কাছে উপস্থিত হন এবং সেখানে গ্রেফতার হন। রিমান্ডে অমানুষিক নির্যাতনে চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন। তারপরও সকল প্রকার ভয় ভীতি ও অপশক্তির রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে প্রতিটা অন্যায় জুলুম নির্যাতন এবং সকল ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ করে আকাবীরে উলামায়ে দেওবন্দের ইতিহাসও ঐতিহ্য ও সম্মান উঁচু রাখতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। অতএব, গুটিকয়েক চিহ্ণিত ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্রে ও অপপ্রচারে আল্লামা বাবুনগরীর ক্লিন ইমেজ বিনষ্ট করতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। তাই দেশ বিদেশের হেফাজত কর্মী সমর্থক ও শুভাকাঙ্খিদেরকে এসকল মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড ও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিদাতা আলেমগণ হলেন- আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা হাফেজ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা নূরুল ইসলাম আদীব (ফেনী), মাওলানা আব্দুল হামিদ মধুপুর, মাওলানা মুনিরুজ্জামান সিরাজী (বি. বাড়ীয়া), মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী (হবিগঞ্জ), মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা আরশাদ রহমানী, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী (ময়মনসিংহ), অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী (পীর সাহেব কাপাসিয়া), মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী (ময়মনসিংহ), মাওলানা আব্দুল আউয়াল (নারায়ণগঞ্জ), মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা আব্দুল বাসেত খান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী, মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা মুজিবুর রহমান চাঁদপুরী, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা মাসউদুল করিম (গাজীপুর), মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা জামিল আহমদ আনসারী (মৌলভীবাজার), মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা আনওরুল করিম (যশোর), মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন (খুলনা), মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা লোকমান মাযহারী, মাওলানা হামেদ জহিরী, মুফতী সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মাওলানা ফজলুর রহমান (সাইনবোর্ড), মুফতী আজহারুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী (সাভার), মাওলানা আলী আকবর (সাভার), মুফতী কামরুজ্জামান (ফরিদপুর), মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমুদী (বরিশাল), মাওলানা আবু তাহের কাসেমী (নেত্রকোনা), মাওলানা মাহফুজুর রহমান (নেত্রকোনা), মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ জামী (কিশোরগঞ্জ), মাওলানা আবুল কাশেম (জামালপুর), মুফতি শামসুদ্দিন (জামালপুর), মাওলানা ইউনুস (রংপুর), মাওলানা মতিউর রহমান (দিনাজপুর), মাওলানা আমিনুল হাসান সিদ্দিকী(কেরানীগঞ্জ), মাওলানা বশির আহমদ (মুন্সীগঞ্জ), মুফতী শরিফুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল হামিদ (কুষ্টিয়া), মাওলানা আব্দুল লতিফ খান (কুষ্টিয়া), মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান (নারায়ণগঞ্জ) প্রমুখ।