ব্যক্তির কোনো অপকর্মের দায় বাংলাদেশ পুলিশ নেবে না।

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনাকে অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত জানিয়ে দোষী ব্যক্তির দায় পুলিশ বাহিনী নেবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ কর্মকর্তাদের সংগঠন ‘পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’। একটি স্বার্থান্বেষী মহল ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং কিছু প্রচলিত গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালিয়ে চলমান আইনি কার্যক্রমকে প্রভাবিত করছে।  উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দুটি পেশাদার বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর এই অপচেষ্টা দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত।

গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি (ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার) মোহা. শফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক (নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অভিমত জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চায়, ব্যক্তির কোনো অপকর্মের দায় বাংলাদেশ পুলিশ নেবে না। বাংলাদেশ পুলিশ অপরাধীকে কঠোর শাস্তি দিতে সব সময় সর্বাত্মক আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘অ্যাসোসিয়েশন বিশ্বাস করে, অতীতের মতো বাংলাদেশ পুলিশ ও বাংলাদেশ  সেনাবাহিনীর মধ্যকার বিদ্যমান আস্থা, বিশ্বাস এবং আন্তরিক ও শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক অটুট থাকবে এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ভবিষ্যতে তা আরো দৃঢ় ও সংহত হবে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য, গত ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার বিষয়টি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত ঘটনা। এ ঘটনায় দেশবাসীর মতো পুলিশের প্রতিটি সদস্য অত্যন্ত দুঃখিত ও মর্মাহত। এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইনি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মামলা করা হয়েছে এবং তা তদন্তাধীন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ও বাংলাদেশ পুলিশপ্রধান যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত  হলে তার জন্য ব্যক্তিই দায়ী থাকবেন; প্রতিষ্ঠান দায় নেবে না। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ওই  যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ের বক্তব্যকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে সাধুবাদ জানাচ্ছে। ওই ঘটনাকে উপজীব্য করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল অপ্রচার চালাচ্ছে দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই অশুভচক্রের এ ধরনের ঢালাও নেতিবাচক প্রচার-প্রচারণার পরও তাঁদের মনোবল অটুট রেখে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাঁরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবেন। আমরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বলতে চাই, বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি পূর্ণ আনুগত্যশীল থেকে সংবিধান ও মানবাধিকার সমুন্নত রেখে দেশ ও মানুষের কল্যাণে সর্বদা কাজ করে যাবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে জাতীয় নির্বাচন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন মেগা ইভেন্টের নিরাপত্তাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যেকোনো ক্রান্তিকালে বাংলাদেশ পুলিশ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশপ্রেম ও নিষ্ঠার সঙ্গে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির আবহে একযোগে কাজ করে দেশ ও জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছে। জাতিসংঘ মিশনেও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি, অতীতের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামী দিনগুলোতেও দেশ ও মানুষের সেবায় একযোগে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবে।’

SHARE THIS ARTICLE