চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে লিপজিগকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়ল প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টায় শুরু হওয়া ম্যাচটিতে লিপজিগ-এর বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতে ফাইনালে উঠে পিএসজি।
ম্যাচের প্রথমার্ধে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে নেয় পিএসজি। লিপজিগকে শাসন করে বিরতির আগ পর্যন্ত পিএসজি দেয় দুই গোল। প্রথমে আনজেল ডি মারিয়ার ফ্রি-কিক থেকে হেডে গোল করেছেন মার্কিনিয়োস। ১৩ মিনিটের ওই গোলের পর ৪২ মিনিটে লিপজিগ গোলরক্ষক পিটার গুলাকসি আবার গড়বড় পাকিয়েছেন। নিচ থেকে খেলা বিল্ড আপ করতে গিয়ে পিএসজির পায়ে বল তুলে দিয়েছিলেন তিনি। পরে নেইমারের ফ্লিক থেকে ডি মারিয়া নিজেও গোল করেছেন।
নেইমার অবশ্য প্রথম আর দ্বিতীয় দুই গোলের আগে নিজেও গোল করতে পারতেন। কিলিয়ান এমবাপের থ্রু পাস থেকে গোলের সামনে গিয়ে ম্যাচের একেবারে শুরুতেই গোল করতে পারেননি নেইমার। তখন বারপোস্টে লেগেছে তার চেষ্টা। পরে সাইডলাইনের কাছ থেকে বুদ্ধিদীপ্ত এক ফ্রি-কিকে সরাসরি গোলে শট করেও বারপোস্টে বল লাগিয়েছেন এ ব্রাজিলিয়ান।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এমিল ফর্সবার্গ আর প্যাট্রিক শিককে নামালে
ন নাগেলসমান। ফর্সবার্গ সেটপিসে লিপজিগকে কিছুটা ভরসা যুগিয়েছিলেন, তবে আশাজাগানিয়া তেমন কিছু করা হয়নি তার। বরং ৫৬ মিনিটে আরেক গোল দিয়ে পিএসজি লিপজিগের সম্ভাবনা শেষ করে দিল চিরতরে।
নেইমার বা এমবাপে কারো কপালে গোল জোটেনি। তা নিয়ে কোনো আফসোস থাকার কথা না দুজনের। নেইমার চ্যাম্পিয়নস লিগের ২৪তম অ্যাসিস্ট পেয়েছেন। ২০১৩ তে তার চ্যাম্পিয়নস লিগ অভিষেকের পর থেকে ইউরোপের আর কোনো খেলোয়াড়ের গোলে এতোগুলো অবদান নেই। দুই নম্বরে থাকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও এই ৭ বছরে করেছেন ২০ অ্যাসিস্ট।
২০১৭ তে পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর প্রথমবার দ্বিতীয় রাউন্ডে নেইমাররা বাদ পড়লেন রিয়ালের কাছে হেরে। সেবার দ্বিতীয় লেগে খেলেননি নেইমার। পরেরবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে এক লেগও খেলতে পারলেন না। এবার তিনি ফিট, বাকিরাও চনমনে। পিএসজির যে স্বপ্নের পেছনে ছুটছিল তার জবাব বোধ হয় এই দলটাই।
পিএসজি প্রতিষ্ঠিত ১৯৭০ সালে। সে তুলনায় লিপজিগ ২০০৯। পিএসজির আছে ৯ বার লিগ ওয়ান জয়ের ইতিহাস। সে তুলনায় ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো বুন্দেসলিগায় খেলার সুযোগ করে নেয় লিপজিগ। সে বারই লিগে রানার্সআপও হয় তারা। তাই প্রতিশ্রুতিশীল এই দলের বিপক্ষে পিএসজির লড়াইয়ের দিকে চোখ ছিল পুরো ফুটবল দুনিয়ার।