আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশী অভিবাসীদের সাথে বাংলাদেশ হাইকমিশনের বার্তালাপ

খাইরুল হক পায়েল, ডাবলিনঃ গত বুধবার আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী যারা অভিবাসনজনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের নিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনের উদ্যোগে ও ডাবলিন আওয়ামীলীগের সহযোগিতায় একটি সংলাপ ব্যবস্থার আয়জন করা হয়।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনের মাননীয় হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম ও দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তরা।

উপস্থিত ছিলেন আই ও এম (ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন ) এর প্রতিনিধি, মাইগ্রেশন রাইটস সেন্টার আয়ারল্যান্ড (এম আর সি আই ) এর প্রতিনিধি দল। আরো উপস্থিত ছিলেন ডাবলিন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অলক সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার রিয়াজ, আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক খান ও আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মুনতাসির খালেক।

অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত ঝামেলায় জর্জরিত ব্যক্তিবর্গ তাদের অসহনীয় জীবন ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন তাদের অনেকেই এই দেশে বহুবছর যাবৎ বসবাস করছেন কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় নানা ঝামেলায় ভিসার মেয়াদ আর বাড়াতে পারেন নি বা আইনি জটিলতার সম্মুখীন হয়ে ভিসার মেয়াদ না বৃদ্ধির কারণে ভিসার মেয়াদ সংক্রান্ত গতানুগতিক ব্যবস্থা থেকে ছিটকে পড়েছেন। এরকম অবস্থায় তারা অনেকদিন ধরেই দেশে পরিবারের কাছে যেতে পারছেন না। এছাড়া আগামী বছর আইরিশ সরকার কাগজপত্র বিহীনদের জন্য নতুন একটি স্কিম আনার পরিকল্পনা করছেন, সেই জায়গাটিতে যদি কোনো কাজ করা যায় তাহলে ভুক্তভোগী অনেক বাংলাদেশি উপকৃত হবে বলে জানান।

‘আই ও এম’ ও ‘এম আর সি আই’ এর প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্যে কিভাবে বাংলাদেশী সহ ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদেরকেও একটি বৈধ প্রক্রিয়ার মধ্যে আনা যায় সেই বিষয়ে মত প্রকাশ করেন। ‘এম আর সি আই’ প্রতিনিধিরা জানান এই মুহূর্তে আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন দেশের প্রায় ২৬,০০০ জন কাগজপত্রবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। প্রায় সকলকে স্কিমের আওয়াতায় আনার জন্য যারা সর্বোচ্চ তিন বছর যাবৎ আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছেন এবং পুলিশের কাছে কোনো অপরাধ জনিত খতিয়ান নেই তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আইরিশ সরকারের নিকট সুপারিশ করেছেন।

ডাবলিন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তার বক্তব্যে বাংলাদেশ সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ হাইকমিশনার কে এরকম একটি জনকল্যাণমূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন এই উদ্যোগ প্রশংসনীয় ও ডাবলিন আওয়ামীগ সর্বদাই বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করে যাবে। তিনি আয়ারল্যান্ডে ছাত্রদের পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির জন্য পূর্বের আন্দোলনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
তিনি জানান ইতিমধ্যে আয়ারল্যান্ডের এই সমস্যা নিয়ে ডাবলিন আওয়ামীলীগ দ্বারা তৈরী বেশ কিছু পেপার ওয়ার্ক তৈরী করা হয়েছে এবং একটি পেপার ওয়ার্ক বাংলাদেশ হাইকমিশনে ইতিমধ্যে জমা দেওয়াও হয়েছে। সেখানে ইমিগ্রেশন সমস্যায় জড়িত লোকজনদেরকে তিন ভাগে ভাগ করে কিভাবে এই সমস্যা থেকে উত্তরণ করা যায় সেই সম্পর্কে বলা হয়েছে। আগামী ১৫-ই অক্টোবর ২০২০ আইরিশ সরকার আগামী বছরের (২০২১) স্কিমের বিষয়ে পলিসি নির্ধারণ করবে সেখানে কাদের কাদেরকে স্কিমের আওয়াতায় আনা যায় সেই বিষয়ে আইরিশ সরকার আলোচনা করবে। আমরা এই মুহূর্তে নজর রাখছি ১৫-ই অক্টোবরের মিটিংয়ের উপর এবং সেই অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করে রিপোর্ট তৈরী করা হবে। তিনি জানান, পেপার ওয়ার্কে উল্লেখিত বিষয়ে কাজ করলে অনেকটাই এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব।

H-Commission-London-Event

সবাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম তার সমাপনী বক্তব্যে সহযোগিতার জন্য ডাবলিন আওয়ামীলীগকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশী ভুক্তভোগীদের বলেন, বাংলাদেশ সরকার সবসময়ই তাদের পাশে আছে এবং এই সমস্যা থেকে উত্তরণে প্রয়োজনে বিধি অনুযায়ী আইরিশ সরকারের সাথে আলোচনা করা হবে। তিনি সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের কর্মকর্তা একে এম মনিরুল হক।
কর্মক্ষেত্রের জরুরি মিটিং এর জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেন নি বলে ডাবলিন আওয়ামীলীগের সভাপতি ফিরোজ হোসেন দুঃখ প্রকাশ করেন।

SHARE THIS ARTICLE