আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ আজ শনিবার (১৭ অক্টোবর)ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনে উপ-নির্বাচন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে এই ভোটগ্রহণ। দুইটি আসনেই ইভিএম-এ (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোটগ্রহণ হবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন উপলক্ষে সব প্রস্তুতি আগেই সম্পন্ন হয়েছে। দুই আসনেই গত বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে আজ শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত কিছু গণপরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাড়তি সদস্য।
গত ৩ সেপ্টেম্বর এ দুটি আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৪টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয় প্রার্থী। তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. কাজী মনিরুল ইসলাম, বিএনপির সালাহ্ উদ্দিন আহম্মেদ, জাতীয় পার্টির মীর আব্দুর সবুর, গণফ্রন্টের এইচ এম ইব্রাহিম ভূঁইয়া, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আনছার রহমান শিকদার ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. আরিফুর রহমান। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭১ হাজার ১২৯ জন; যার মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪১ হাজার ৪৬৪ জন ও নারী ২ লাখ ২৯ হাজার ৬৬৫ জন। আসনে ১৮৭ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে।
ভোট নিয়ে ঢাকা-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমেদ শুক্রবার রাতে বলেন, ‘আমি ভোটের মাঠে আছি এবং থাকব। শেষ পর্যন্ত আমি দেখতে চাই ইসি এই নির্বাচনে কী পরিবেশ তৈরি করে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের দৌরাত্ম্য কতটুকু সেটাও দেখতে চাই। আমি এ পর্যন্ত ইসিতে অনেক অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু তারা তাদের ভূমিকা ঠিকমতো পালন করেনি। ভোটের পরিবেশ কেমন হবে তা তো এখনি বলতে পারছি না। কিন্তু আমার ভোটাররা মাঠে থাকবে। তাদের ভোটাধিকার তারা প্রয়োগ করবে। মোদ্দাকথা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠ ছাড়বো না। ভোট সুষ্ঠু হলে আমিই জিতব।’
তবে ঢাকা-৫ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. কাজী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থীর কোনো লিফলেট-ব্যানার ও ফেস্টুন আমার চোখে পড়েনি। এমনকি তিনি ভোটারদের কাছে ভোটের স্লিপও পর্যন্ত প্রার্থী পৌঁছে দেননি। তিনি শুধু অভিযোগ নিয়ে ব্যস্ত আছেন। আমার সন্দেহটা ঠিক এখানেই। তিনি হয়তো ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এমন কিছু ঘটাবেন যা দ্বারা দলটি রাজনৈতিক ফয়দা লোটার চেষ্টা করবে। কিন্তু আমি চাই, ভোট সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হোক। আমি এখন পর্যন্ত যে সমর্থন পেয়েছি, তাতে পাশের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’
নওগাঁ-৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট তিনজন প্রার্থী। তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন (হেলাল), বিএনপির শেখ মো. রেজাউল ইসলাম ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. খন্দকার ইন্তেখাব আলম।
এ আসনে ভোটার ৩ লাখ ৬ হাজার ৭২৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৮ জন ও নারী ১ লাখ ৫২ হাজার ৯৬৭ জন। আসনে ১০৪ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে।
নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনের বিএনপির প্রার্থী শেখ মো. রেজাউল ইসলাম শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে। প্রচারের শুরুর পর থেকেই বিএনপির প্রার্থী তার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে বিএনপির কর্মী-সমর্থকসহ সাধারণ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি, মিথ্যা মামলা দেওয়াসহ বিস্তর অভিযোগ করেছেন। অর্ধশতাধিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগকে মিথ্যাচার দাবি করে ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্ট আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন (হেলাল)।
ধানের শীষের প্রার্থী শেখ মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ যদি ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে এবং নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু ভোটের অয়োজন করে তাহলে ভোট বিপ্লব হবে। আমি ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত থাকব। এই আসনের উন্নয়নের জন্য ধানের শীষের বিকল্প নেই। গত ১২ বছর এখানে কোনো উন্নয়ন হয়নি।’
নওগাঁ-৬ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন (হেলাল) বলেন, ‘উন্নয়নের জোয়ার অব্যাহত রাখতে আমি রাণীনগর ও আত্রাইবাসীর কাছে ভোট চাই। ভোটারদের যে সাড়া পেয়েছি তাতে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। বিএনপির প্রার্থী নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানান ধরনের অভিযোগ করলেও নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আওয়ামী লীগের শাসনামলে এই এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে এখানে নৌকা জেতানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হলে এই এলাকা আবারও সন্ত্রাসের জনপথে পরিণত হবে।’
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা গত ৬ মে মারা যাওয়ায় শূন্য হয় ঢাকা-৫ আসন। আর সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে গত ২৭ জুলাই নওগাঁ-৬ আসন শূন্য হয়।