ইরাকে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ

আইরিশ বাংলা পোস্ট ডেস্কঃ ইরাকে শাসক শ্রেণীর ক্ষমতা থেকে বিদায়ের দাবিতে সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে বিক্ষোভ চলাকালীন গতকাল রোববার বাগদাদে ইরাকি প্রতিরক্ষা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

গত বছর বিক্ষোভে মারা যাওয়া “শহীদদের” প্রতিকৃতি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ বাগদাদে রাস্তায় নেমে আসে। বাগদাদ ছাড়া বসরা, নাজাফ এবং নাসিরিয়া সহ দক্ষিণের বেশ কয়েকটি শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীতে, পুলিশ টিয়ার গ্যাসের ক্যানিস্টার ও জলকামান নিক্ষেপ করে প্রবেশ নিষিদ্ধ গ্রিন জোনে অবস্থিত সরকারী সদর দফতর, সংসদ ও মার্কিন দূতাবাসে যাবার পথে সেতুর নিকট বিক্ষোভকারীদের বাধা প্রদান করলে বিক্ষোভকারীরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। 

এএফপির সাংবাদিক জানিয়েছেন, কিছু বিক্ষোভকারী টাইগ্রিস নদীর উপরে আল-জুমহুরিয়া সেতুর উপরে নির্মিত একটি সুরক্ষিত ব্যারিকেড ভাঙ্গতে সক্ষম হলেও কংক্রিটের দেয়াল এবং প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের থামিয়ে দেয়। কিছু প্রতিবাদকারী মোলোটভ ককটেল নিক্ষেপ করেছেন। এএফপি জানিয়েছে, প্রায় ৫০ জন পুলিশ ও বিক্ষোভকারী সামান্য আহত হয়েছেন।

আন্তঃসাম্প্রদায়িক যুবনেতৃত্ত্বাধীন রোববারের এই বিক্ষোভ মূলতঃ দুর্নীতির অভিযোগে ইরাকের শাসক শ্রেণীকে ক্ষমতাচ্যুত করার দাবীকে পুনরায় উত্থাপন করল। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে দেশব্যাপী প্রায় ৬০০ বিক্ষোভকারী মারা গেছেন এবং ৩০,০০০ আহত হয়েছেন।

পরবর্তীতে বাগদাদের প্রধান মিত্র তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় এবং পরবর্তীতে কোভিড-১৯ মহামারীর সংক্রমণে এই আন্দোলন গতি হারিয়ে ফেলে।গতবারের বিক্ষোভের ফসল হিসেবে মে মাসে প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল-কাদেমি দায়িত্ব পেলেও তিনি এখনও কোনও বড় ধরনের সংস্কার করতে পারেননি।

বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওপেকের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ ইরাকের প্রতি তিন জনের মধ্যে একজন বেকার। প্রধানমন্ত্রী কাজেমী শনিবার এক বক্তৃতায়, বারবার প্রতিরক্ষা বাহিনীকে গুলি ব্যাবহার না করার এবং বিক্ষোভকারিদের “ইউনিফর্ম এর প্রতি সম্মান” প্রদর্শন করার আহ্বান জানান। তিনি জানান বিক্ষোভকারিদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের নির্বাচন আংশিকভাবে এগিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তা এই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।

বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলায় শীর্ষ ইরানী জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এবং একজন ইরাকি লেফটেন্যান্ট আবু মাহদী আল-মুহান্দিস নিহত হওয়ার পরে জানুয়ারি থেকেই উত্তেজনা তীব্র হয়ে উঠে।

সূত্রঃ মিডল ইস্ট, আল জাজিরা

SHARE THIS ARTICLE