যেসব লক্ষণে ডায়াবেটিস পরীক্ষা, নিয়ন্ত্রণে যা জরুরি

ডায়াবেটিসকে বর্তমানে সবচেয়ে ভয়ংকর লাইফস্টাইল ডিসঅর্ডার হিসাবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এটি শুধু নিজে আসে এমন নয়, কিডনি, চোখ, হার্ট, নার্ভ ইত্যাদি বহু অসুখকেই বয়ে আনে। তাই বছরের এই একদিন নয়, সচেতনতা থাকুক সারা বছর। জীবনযাপনে সামান্য পরিবর্তন আনলেই এই সমস্যা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব।

যাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি:

# যাদের ওবেসিটি রয়েছে ও সেডেন্টারি জীবনযাত্রা পালন করেন।

# উচ্চরক্তচাপ এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে।

# বংশগতভাবে যাদের পরিবারে ডায়াবেটিস আছে।

# যারা নিয়মিত স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খান।

# যারা নিয়মিত মদ্যপান ও ধূমপান করেন।

যে সব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে:

# ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ও পিপাসা লাগা

# দুর্বল লাগা’ ঘোর ঘোর ভাব আসা

# ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া

# সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হলে রক্তের শর্করা কমে হাইপো হওয়া

# মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া

# কোন কারণ ছাড়াই অনেক ওজন কমে যাওয়া

# শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া হলেও দীর্ঘদিনেও সেটা না সারা

# চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব

# বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা

যাদের এই সমস্যাগুলি রয়েছে তারা আগাম সাবধান হোন। কিন্তু যারা ইতোমধ্যেই সমস্যায় ভুগছেন তারা কি করবেন? তাদের জীবন থেকে কি মিষ্টি পুরোপুরি বাদ? উত্তর হল না, কিছু বিষয় মাথায় রাখলেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে ডায়াবেটিস।

# মিষ্টির মধ্যে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে ভালো রসগোল্লা। কিন্তু তা খেতে হবে রস ঝরিয়ে, এছাড়াও সুগার ফ্রি মিষ্টিও খেতে পারেন মাঝেমধ্যে।

# পায়েসের ক্ষেত্রে রান্না করুন স্টিভিয়া, সুক্রালোজ বা জাইলিটল দিয়ে, এছাড়াও পায়েসে চাল, সেমাই বা সুজির পরিবর্ত ব্যবহার করতে পারেন নিউট্রিলা পেস্ট, যা পায়েসের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোড দুটোই কমাবে।

# মিষ্টি সবসময় কোনো প্রোটিন বা ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়ার পরেই খান, এতে সুগার হঠাৎ করে বেড়ে যাবে না।

# যেদিন মিষ্টি খাবেন সেদিন অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট অবশ্যই কম খান, ভাতের পরিমাণ কমিয়ে দিন, সবজি ও সালাদ খান বেশি করে। অবশ্যই টক দই থাকুক ডায়েটে। ‘সুইট ডে’ এর দিন বর্জন করুন অন্যান্য ভাজাভুজি।

# মাটন কিন্তু কখনোই হৃদয়ের বন্ধু হতে পারেনা, তাই মাটন এড়িয়েই চলুন। মাংস রান্নার ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যবহার করুন টক দই।

# দৈনন্দিন রুটিনের মতো উৎসবের দিনেও ডায়েটে থাকুক যেকোনো মৌসুমি ফল।

# অবশ্যই চলুক শরীর চর্চা। বিশেষ করে পাচ ওয়াক্ত নামাজ, যোগ ব্যায়াম, সকাল বিকালে হাটা এই গুলি রোজকার তালিকায় রাখুন।

# প্রত্যেক ডায়াবেটিস পেশেন্ট সকালবেলা খালি পেটে মেথি গুঁড়ো ভেজানো পানি পান করুন, সুগার নিয়ন্ত্রণে কিন্তু মেথির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, এছাড়াও ব্লাড প্রেশার ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণেও কিন্তু মেথি সিদ্ধহস্ত।

# সকালে উঠে চা-এর সাথে কি বেশ কয়েকটা বিস্কুট নিয়ে বসেন? সবার আগে ছাড়ুন এই অভ্যাসটি। আমন্ড বাদাম সারা রাত ভিজিয়ে খেতে পারেন এই সময়। কারণ বিস্কুট হলো এমন একটি খাদ্য যার থেকে প্রোটিন ভিটামিন বা অন্য কোনো পুষ্টিগুণ আমরা পাইনা শুধু কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি ছাড়া। বিস্কুট খেলেও ভরা পেটে খান এবং ক্রিম ক্র্যাকার বা ফাইবার যুক্ত বিস্কুটই আপনার জন্য উপযুক্ত।

# ইচ্ছে করছে চকোলেট খেতে? মুশকিল আসান হিসাবে আছে ডার্ক চকলেট, ব্লাড সুগার, ব্লাডপ্রেসার, এলডিএল কমানোর ক্ষেত্রে ডার্ক চকলেট কিন্তু বেশ ভালো।

# সারাক্ষণই কিছু খেতে ইচ্ছে করছে এমনটি ডায়াবেটিস রোগীদেরই দেখা যায়। মুখে রাখতে পারেন জাইলিটল যুক্ত চুইংগাম, খাবার প্রবণতা কমবে, সাথে মুখের মাসল গুলির এক্সারসাইজ হবে

এই কয়েকটা ছোট ছোট জিনিস মাথায় রাখলে কিন্তু ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।

SHARE THIS ARTICLE