ডাঃ ইসমত কবিরঃ ইংল্যান্ডের দক্ষিণপূর্ব অঞ্চল কেন্ট ও রাজধানী লন্ডনে গত কয়েকদিন থেকে কোভিড ভাইরাসের সংক্রমণ আশংকাজনক ভাবে বেড়ে চলেছে। এতে করে এসব এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা (টিয়ার-৩) জারী করা হয়েছে। বড়দিনের সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠান নিয়েও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২০ সোমবার জানিয়েছেন নতুন তথ্য। লন্ডনের পিসিআর পরীক্ষাগারগুলোতে নতুন ধরণের করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং রয়টারের এক তথ্যে দেখা গিয়েছে এই নূতন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণের হার অত্যন্ত বেশী (https://www.reuters.com/…/health-coronavirus-britain…)। ভাইরাসের এই পরিবর্তিত রূপ কোন নতুন লক্ষণ বা উপসর্গ তৈরি করছে কি না তা এখনও জানা যায়নি।
আশার কথা, ধারণা করা হচ্ছে, এটা জটিলতা বা অতিরিক্ত মৃত্যুর কারণ নয়। সামাজিক মধ্যমে একে ‘কোভিড২০’ নাম দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানীরা একে ‘ভুই ২০২০১২/০১’ (VUI 202012/01, Variant Under Investigation 2020 December, the First Variant) নামে অভিহিত করেছেন।
গত ১৩ই ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তত ১১০৮টি নমুনায় এর সন্ধান মিলেছে। ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগ এ নিয়ে গবেষণা জোরদার করেছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এর সম্বন্ধে বিস্তারিত জানা যাবে।
যুক্তরাজ্যে পুর্নোদ্যমে ফাইজার এর ‘এমআরএনএ’ নির্ভর টিকা দিয়ে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এক প্রশ্নের উত্তরে বৃটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে “টিকা এ নতুন ‘ভ্যারিয়েন্ট’ এর বিরুদ্ধে কাজ না করার কোন কারণ নেই।
“করোনা ভাইরাসের জিন নিয়ে গবেষণা করছেন বৃটিশ জিন বিজ্ঞানীদের সংঘ (COVID19 Genomics UK Consortium) COG- UK জানিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে, এ ভাইরাসটি গড়পড়তা প্রতিমাসে একটি থেকে দুটি রূপান্তর ঘটাচ্ছে। ফ্লু ভাইরাসের রূপান্তরের তূলনায় এ সংখ্যা অত্যন্ত কম। ইংল্যান্ডে শীতের প্রকোপ বাড়ছে। সামনে বড়দিন এর ছুটি, সামাজিক মেলামেশা বেড়ে যাবে অনেক। এ সময়ে সর্বাত্মক সতর্কতা গ্রহণের কোন বিকল্প নেই।
এদিকে গতকাল ১৫ই ডিসেম্বর, ২০২০ ‘বৃটিশ মেডিকেল জার্নাল’ ও ‘হেলথ সার্ভিস জার্নাল’ যৌথ সম্পাদকীয় (Joint Editorial) প্রকাশ করে ‘বড়দিন উপলক্ষে পাঁচদিনের জন্য সীমিত মেলামেশা’র শিথিলতা বাতিলের দাবী জানিয়েছে। রীতিমতো বিরল এমন সম্পাদকীয়তে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে সতর্ক করে বলা হয়েছে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা’র সেবা নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে এর বিকল্প নেই।