আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ গত দুই বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর অবশেষে ইউরোপে উড্ডয়নের অনুমতি পেয়েছে বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স মডেলের বিমান।
ইউরোপের এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি ইএএসএ প্রধান জানায়, আগামী সপ্তাহ থেকেই ইউরোপে চলাচল করতে পারবে সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স মডেলের বিমান।
দুটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর ২০১৯ সালের মার্চ থেকে ইউরোপে এ মডেলের বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। এরপর দফায় দফায় সংস্কার করা হয় এ মডেলের বিমানটি। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আর ব্রাজিলে চলাচলের অনুমতি পেয়েছে সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স।
ইউরোপের এভিয়েশন সেফটি এজেন্সির নির্বাহী পরিচালক প্যাট্রিক কি জানান, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইউরোপে পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স মডেলের যাত্রীবাহী বিমান।
২০১৮ সালের অক্টোবরে লায়ন এয়ারের সেভেনে থ্রি সেভেন ম্যাক্স মডেলের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে সাগরে পড়ে যায়। এর কয়েক মাস পরই ২০১৯ সালর মার্চে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের একই মডেলের বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুটি বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ক্রুসহ ৩৪৬ জন যাত্রী। এক পর্যায়ে বিমান নিরাপত্তার সনদ দেয়া ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এক জরুরি আদেশে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ বিমান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বিশ্বব্যাপী এ মডেলের ৩৭১টি বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়।
দুটি বিমান দুর্ঘটনায় তদন্তের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ সফটওয়্যার ভুল সময়ে কর্মক্ষম ছিল। বিমানগুলো উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই পাইলটের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এরপরই বিমান দুটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ইথিওপিয়ার দুর্ঘটনার পর সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স মডেলের বিমান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশনের মতোই তদন্ত করছিলো ইউরোপের এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি।
পুরোপুরি নিরাপদে চলাচল নিশ্চিত করতে সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স মডেলের সব বিমানে সংযোজন করা হয়েছে নতুন কম্পিউটার সফটওয়্যার। যন্ত্রাংশেও আনা হয়েছে কিছু পরিবর্তন। বিমানের পরীক্ষামূলক পরিচালনার সময় বৈমানিকদের জন্য প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে বোয়িং কর্তৃপক্ষকে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশনেরও একই দাবি ছিল।
বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স আর এয়ারবাস থ্রি টু জিরো মডেলের বিমানগুলো অনেক বছর আগের ডিজাইনে বানানো। দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২৫০ কোটি ডলার দিতে সম্মত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। করোনা মহামারীর কারণে গেলো বছর বোয়িংয়ের বিমানের অর্ডার ছিল মাত্র ১৫৭টি। ২০২০ সালে বোয়িংয়ের ১ হাজার অর্ডার বাতিল হয়, যার বেশিরভাগই ম্যাক্স মডেলের।
২০২১ সালে সব দিক থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা বোয়িং কর্তৃপক্ষের। ৭৩৭ ম্যাক্স-৮’র দুর্ঘটনায় বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেনস প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়, যা বোয়িংয়ের ইতিহাসে সর্বোচ্চ লোকসান।