আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ বর্তমান কাঠামো ঠিক রেখে মাল্টিমোডাল হাব ও মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ এগিয়ে নিতে কমলাপুর রেল স্টেশনটি ভেঙে আরো উত্তরে নতুন করে নির্মাণ করতে সম্মত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
গত বছরের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভার সিদ্ধান্তগুলো চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘কমলাপুর স্টেশন বিল্ডিংয়ের আগে এমআরটি লাইন-৬ এর সিজর ক্রসিংয়ের স্থান সংকুলান করার জন্য এমআরটি-৬ (ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট) লাইনের প্ল্যানে স্টেশন বিল্ডিং উত্তর দিকে স্থানান্তর করা হবে এবং এ বিষয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও ডিএমটিসিএল (ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড) সম্মত হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কমলাপুর স্টেশনটি স্থানান্তর করতে গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ একটি বৈঠকে মিলিত হন। ওই বৈঠকের পর রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্তমান স্টেশন ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে এবং এর উত্তরে অনুরূপ একটি স্টেশন তৈরি করা হবে।
রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্টেশনটি বর্তমান অবস্থান থেকে ১৩০ মিটার উত্তরে সরিয়ে নিতে হবে। এটি একটি আইকনিক স্থাপনা, তাই এটি ভেঙে ফেলার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন
মোট্রোরেল উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মিত হবে বলে প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা করা হয়। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এটি সম্প্রসারণ করে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত নেয়ার নতুন পরিকল্পনা করা হয়।
সম্প্রসারণের ব্যাপারে রেলওয়ের আপত্তি না থাকলেও নতুন ডিজাইনের বিষয়ে আপত্তি জানায় প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে তারা নতুন এই ডিজাইনে সম্মতি প্রদান করে।
গত ১৪ ডিসেম্বর বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে একটি ছিল কমলাপুর মাল্টিমোডাল হাব। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে তা পাঠানো হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, কমলাপুর স্টেশন বিল্ডিংয়ের আগে এমআরটি লাইন-৬ এর সিজর ক্রসিংয়ের স্থান সংকুলান করার জন্য এমআরটি লাইন-৬ এর প্ল্যানে স্টেশন বিল্ডিং উত্তর দিকে স্থানান্তর করা হবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষ প্রকল্প এলাকার সামগ্রিক পরিস্থিতি যাচাই করার জন্য বিস্তারিত গবেষণা চালানোর জন্য পরামর্শদাতা নিয়োগ দেবে।
কমলাপুর স্টেশনটি ১৯৬৮ সালের ২৭ জুলাই উদ্বোধন করা হয়। বিস্তীর্ণ ধানখেত থেকে জায়গাটিকে রূপান্তর করা হয় এশিয়ার অন্যতম সুন্দর ও আধুনিক রেলওয়ে স্টেশনে।
১৯৬০ এর দশকের আধুনিক স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর মধ্যেও অন্যতম কমলাপুর স্টেশন। সরকারিভাবে ঢাকা রেলস্টেশন হিসেবে পরিচিত কমলাপুর রেলস্টেশনটি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও বৃহত্তম রেলস্টেশন। এর স্থপতি ড্যানিয়েল বার্নহ্যাম এবং বব বুই।