আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ঘুটঘুটে অন্ধকারেও সব দেখার ক্ষমতা সম্পন্ন বিশেষ প্রযুক্তির চশমা, মানুষবিহীন ডুবোজাহাজ, ত্রিমাত্রিক রাডার, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি বিশ্লেষণের যন্ত্র এবং ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা—এত্তসব প্রযুক্তি পণ্যের নাম শুনে মনে আসতে পারে কোনো বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর গল্প-উপন্যাসের কথা। কিন্তু এসব প্রযুক্তি সরঞ্জাম নিয়েই বহিঃসীমান্তে নজরদারি করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। লক্ষ্য, অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকানো।
২০১৫ সালের অভিবাসন সংকটের সময়, লাখ দশেকেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে ইউরোপে। এখনও থেমে নেই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের চাপ। ফলে নড়েচড়ে বসেছেন ইউরোপের নীতিনির্ধারকেরা। আর তারই অংশ হিসেবে, সীমান্ত নজরদারি বাড়ানোর মধ্য দিয়ে অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারকে বেছে নেয়া হয়েছে।
ইউরোপের বহিঃসীমান্তে গেলেই দেখা মিলবে সর্বশক্তি নিয়ে নজরদারির কাজ করছেন সীমান্তরক্ষীরা। থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা, নাইট-ভিশন চশমা, মোবাইল ফোন শনাক্ত করার বিশেষ সেন্সর, ট্র্যাকিং ডিভাইস নিয়ে ওয়াচ টাওয়ারে বেশ সতর্ক অবস্থায় আছেন সীমান্তরক্ষীরা। মূলত, তুরস্ক বা বলকান হয়ে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের ঠেকাতেই এতো আয়োজন।
প্রযুক্তির সহায়তায় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অস্তিত্ব টের পেতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন সীমান্তরক্ষীরা। আইন অমান্য করেই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পুশব্যাক বা জোর করে ফেরত পাঠান তারা।
ডিজিটাল অধিকার সংস্থা অ্যাক্সেস নাউ-এর বিশ্লেষক ক্যাটেরিনা রোডেলি বলেন, “প্রযুক্তির ব্যবহার সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের চলাচলকে অনেক অনেক বেশি বিপজ্জনক করে তুলেছে।”
তিনি আরো বলেন, “শুধু তাই নয়, প্রযুক্তির এই ব্যবহার সীমান্ত সহিংসতাকে আরো উসকে দিচ্ছে, আর সীমান্তরক্ষীদের দেয়া হচ্ছে বেপরোয়া ক্ষমতা।”
বর্ডার ভায়োলেন্স মনিটরিং নেটওয়ার্ক ডিসেম্বরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, “অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মারধর, জোর করে পোশাক খুলে ফেলা এবং যৌন নিপীড়নের মতো ঘটনা ঘটছে সীমান্তে। আর এসবের সঙ্গে যুক্ত রাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।”
এসব ঘটনা সীমান্তে সহিংসতা আরো বাড়িয়ে তুলছে বলেও সতর্ক করেছিল সংস্থাটি। তাদের মতে, ইউরোপের বহিঃসীমান্ত দিয়ে অন্তত ১৬ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আইন অমান্য করে পুশব্যাক করা হয়েছে।