মড়ার উপর খাঁড়ার ঘাঃকরোনা দুশ্চিন্তার সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গুর হানা

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ২৯ জন ডেঙ্গু রোগী। এদের মধ্যে ২৮ জনই ঢাকার। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গতকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মোট ২৯ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জনই রাজধানীর। এ ছাড়া মোট ১৩১ জন রোগী সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাদের মধ্যে ১২৮ জনই (৯৭ শতাংশ) ঢাকায়। বাকি মাত্র তিনজন ঢাকার বাইরে।

এছাড়া চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬৫ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে রোগী শনাক্ত হন ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯, মার্চে ১৩, এপ্রিলে ৩, মেতে ৪৩ এবং জুনে ২৭১ জন। জুলাইয়ের প্রথম ৬ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯৪ জন।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০৫টি পরীক্ষাগারে ৩৫ হাজার ৬৩৯টি নুমনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ১৬২ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৫৬৮ জন। একই সময়ে করোনা সংক্রমিত হয়ে সর্বোচ্চ ২০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১১৯ জন এবং মহিলা ৮২ জন। এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু বরণ করেছেন ১৫ হাজার ৫৯৩ জন।

এখন সব হাসপাতালেই নির্দেশনা দেওয়া আছে, জ্বরের উপসর্গ নিয়ে কোনো রোগী এলেই করোনার সঙ্গে ডেঙ্গু টেস্টও করতে হবে। সাধারণ মানুষের প্রতিও স্বাস্থ্য বিভাগ বারবার সচেতনতামূলক বার্তা দিচ্ছে, কভিড টেস্টের রেজাল্ট নেগেটিভ এলে ডেঙ্গু টেস্ট করানোর জন্য। কিন্তু কোনো দিকেই তেমন ভ্রুক্ষেপ নেই। অথচ দেশে ডেঙ্গু রোগী বেড়ে চলছে।

এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, করোনা একটি অদৃশ্য শক্তি, যার বিরুদ্ধে আমরা লড়ছি। কিন্তু ডেঙ্গু আমাদের পরিচিত শত্রু। আমরা জানি, এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগ হয়। ঘরে-বাইরে পানি জমলেই এই মশা ডিম পাড়ে। সেখান থেকে হাজার হাজার মশা জন্মায়। তাই এই রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় ঘরে-বাইরে কোথাও যেন পানি না জমে।

তিনি বলেন, ঘরে এবং ঘরের আশপাশের পানি সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। পানি জমলেই মশা জন্মাবে। এছাড়া মশা থেকে সুরক্ষায় থাকতে হবে। দিনে-রাতে যখনই ঘুমাবেন, তখনই মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে। ছোট শিশুদের ফুল শার্ট-প্যান্ট পরাতে হবে। কোথাও যেন মশার লার্ভা জন্মাতে না পারে সেজন্য সবাইকে সমন্বিতভাবে মশক নিধন করতে হবে।

গত জুন মাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডেই পাওয়া যাচ্ছে এডিস মশা। কোথাও কোথাও এডিসের ঘনত্ব বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গবেষণার এই তথ্য এবং ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা পর্যালোচনা করে গবেষকরা বলছেন, জুলাই ও আগস্টে রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

SHARE THIS ARTICLE