আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ ভ্যাকসিন কত দ্রুত দেশে আনা যায়, তা নিয়ে সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে। একইভাবে বেসরকারি পর্যায়েও চলছে প্রতিযোগিতা। দেশের কয়েকটি বেসরকারি ওষুধ কম্পানি এরই মধ্যে এ প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কোনো কোনো কম্পানি একই সঙ্গে প্রক্রিয়ায় থাকা একাধিক ভ্যাকসিন আবিষ্কারক ও উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। দেশের বিজ্ঞানীরাও পর্যবেক্ষণ করছেন সার্বিক পরিস্থিতি। করোনাভাইরাসের গতি-প্রকৃতি পরিবর্তনের সঙ্গে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাজনিত কী ধরনের প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে কাজ করছেন অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ওষুধ কম্পানির সূত্র জানায়, তারা আমেরিকা ও ভারতের একটি ভ্যাকসিন পেতে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই তারা আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় যাবে। আরেকটি কম্পানির সূত্র জানায়, তারাও অক্সফোর্ড ও চীনের ভ্যাকসিন পেতে অনেক দূর এগিয়েছে। আর এরই মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তাদের চুক্তির বিষয়টি জানিয়েছে। অন্য আরেকটি কম্পানি রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, করোনার ভ্যাকসিন পেতে গত রবিবারও রাশিয়া ও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ নিয়ে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানায় সূত্রটি। আর চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ আইসিডিডিআরবিতে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে চীনের সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের নমুনা। এরপর শুরু হবে সাতটি হাসপাতালে চিকিৎসাকর্মীদের ওপর ট্রায়ালের কাজ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (টিকাদান কর্মসূচি) ডা. সামসুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি যতদূর জানি, বাংলাদেশ ভালোভাবেই টিকা সংগ্রহে সক্রিয় রয়েছে। আশা করছি আমরা পিছিয়ে থাকব না। আন্তর্জাতিক একাধিক সংস্থাও আমাদের সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
অণুজীববিজ্ঞানী এবং বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রির্সাচ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতি আমাদেরকে বিশ্বদরবারে নতুন করে চিনিয়েছে। যত দেশ যত জিনোম সিকোয়েন্সিং করছে, আমরাও সেই কাতারে শামিল হয়েছি। এখন অন্য দেশের বিজ্ঞানীরাও আমাদের দিকে তাকিয়ে, আমরাও তাদেরটা দেখছি। কোথায় কী ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে, সেটার কী প্রভাব—এসব নিয়ে কাজ চলছে।’
এই বিজ্ঞানী আরো বলেন, ‘ভ্যাকসিনগুলো যখন ওপেন হয়ে যাবে, এটা খুব সহজে ধরা যাবে কোনটির চেয়ে কোনটি বেশি কার্যকর। যেমন—কোনো ভ্যাকসিনের ভেতরে দেওয়া হচ্ছে মৃত ভাইরাস, আবার কোনোটির ভেতরে থাকছে সক্রিয় ভাইরাসের অংশ, কোনোটির ভেতর ভাইরাসসদৃশ অন্য উপাদান; যা কারো শরীরে গেলে অ্যান্টিবডি তা প্রতিরোধে সক্রিয় হবে।