আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে মরদেহ উদ্ধারের সংখ্যা ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত দুই দেশে মোট ২৪ হাজার ৫১ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকারীরা। তবে জাতিসংঘ হুঁশিয়ারি দিয়েছে এই ধ্বংসযজ্ঞের পুরো চিত্র এখনো পরিষ্কার না। মানে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় সিএনএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে তুরস্কের ১৯ হাজার ৬৭৪ জন ও সিরিয়ার ৪ হাজার ৩৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া দুই দেশে কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু ভূমিকম্পের পর প্রায় ১০০ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ায় কাউকে আর জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা কমে এসেছে।
এদিকে দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, বিশেষ করে সিরিয়ায়। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারীরা ধসে পড়া হাজার হাজার ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি আফটার শকের শঙ্কাও রয়েছে। ধসে পড়া হাজার হাজার ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।
অপরদিকে যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তারাও নিদারুণ কষ্টে আছেন। অসংখ্য মানুষ তীব্র ঠাণ্ডার মধ্যে আশ্রয় ও খাবার ছাড়া থাকায় তাদের জীবনও সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ধ্বংসযজ্ঞের পুরো চিত্র এখন ‘আমাদের চোখের সামনে উন্মোচিত হচ্ছে।’
এদিকে তুরস্কের সাধারণ মানুষ এখনো উদ্ধারকাজের ধীরগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, কিছু কিছু জায়গায় ভূমিকম্পের তিন দিন পর উদ্ধারকারীরা এসেছেন। ফলে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েও যারা জীবিত ছিলেন তারা তীব্র ঠাণ্ডা ও পানির অভাবে মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রথমবারের মতো যায় জাতিসংঘের সহায়তা। তবে সেখানকার উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে তাদের যে সরঞ্জাম প্রয়োজন ছিল, সেগুলো দেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা।
তবে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস জানিয়েছেন, সিরিয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে আরও সহায়তা পৌঁছে যাবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপের (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি এলাকা থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে আঘাত হানে। এর গভীরতা ছিল ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার।
সূত্র: বিবিসি