আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ডিম এমন একটি খাবার যা ছোট থেকে বড় সবারই বেশ পছন্দের। ডিম দিয়ে ঝটপট যেকোনো রেসিপি তৈরি করা যায় বলে প্রায় প্রতিদিনের খাবারেই ডিম রাখেন সবাই। বিসে করে সকালের নাস্তায় বেশিরভাগ মানুষই ডিম খেয়ে থাকেন। তাছাড়া বিকেলের নাস্তাতেও থাকে ডিমের তৈরি সুস্বাদু রেসিপি।
অন্যদিকে, চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরাও নিয়মিত ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। ডিম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো কারণ, এটি প্রোটিনের চমৎকার উৎস।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে দু’টি ডিম খেলে লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। ডিম সাধারণত অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টিতে ভরপুর থাকে, তাই খাদ্যতালিকায় ডিম অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডিম খেলে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
ডিমের উপকারিতা
একটা ডিমে এনার্জি থাকে ১৪৩ ক্যালোরি, কার্বোহাইড্রেট থাকে ০.৭২ গ্রাম। প্রোটিন থাকে ১২.৫৬ গ্রাম, ফ্যাট থাকে ৯.৫১ গ্রাম। এছাড়া ফসফরাস থাকে ১৯৮ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৩৮ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক থাকে ১.২৯ মিলিগ্রাম। এই সব একসঙ্গে ডিমের পুষ্টিগুণ বাড়াতে সাহায্য করে। ডিমের সাদা অংশে থাকে এই প্রোটিন এবং কুসুমে থাকে গুড ফ্যাট, আয়রন ও ভিটামিন।
অতিরিক্ত ডিম খেলে কী কী ক্ষতি হতে পারে চলুন জেনে নেয়া যাক-
কোলেস্টেরল বাড়তে পারে
একটি ডিম থেকে ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল সরবরাহ হয়। তাই দিনে চিন্তা না করে ডিম খেলে এলডিএল যা খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে। যাদের হৃদরোগ থাকে তাদের ডিম খাওয়া সীমিত করা উচিত। স্ট্রোক বা হৃদরোগের পরও ডিম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়
ডায়াবেটিস বা প্রিডায়াবিটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ডিম খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। ডিম ইনসুলিন প্রতিরোধের ঝুঁকি বাড়িয়ে রক্তে শর্করার মাত্রার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। ব্রিটিশ জার্নাল অফ নিউটিরিশনে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে আট হাজার মানুষের উপর একটি সমীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায়, অংশগ্রহণ করা মানুষদের মধ্যে একটা বড় সংখ্যক মানুষ যারা দিনে একটার বেশি ডিম খেয়েছিলেন, তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। যারা কম সংখ্যক ডিম খেয়েছিলেন, তাদের শারীরিক তুলনায় কম। ডিমের কুসুমে এক ধরনের উপাদান পাওয়া গিয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
শরীর ফোলার সমস্যা
বেশি ডিম খেলে কিছু লোকের পেটে গ্যাস বা ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। আসলে, অত্যধিক ডিম খেলে পাচনতন্ত্রের উপর ভারী হতে থাকে, যা পেট ব্যথার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। দিনে পরিমাণ মতো ডিম না খেলে গ্যাস, বমি বমি ভাব, অতিরিক্ত চর্বি, কোলেস্টেরল ছাড়াও আরো অনেক রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করতে হলে দিনে দুইটি বা সর্বোচ্চ তিনটি ডিমের বেশি খাওয়া ঠিক নয়।